মানবাধিকার সংগঠনের দাবি-সিরিয়ায় স্বপক্ষত্যাগী ৭০ সেনাকে গুলি করে হত্যা

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত সেনারা গত সোমবার পক্ষত্যাগকারী বহু সেনাসদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে। সেনাঘাঁটি থেকে পলায়ন ও সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যোগদানের চেষ্টাকালে তাঁদের হত্যা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ কথা বলেছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট আসাদ নতুন একটি আইনে সই করেছেন। নতুন আইনে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ মতলবকারীদের যারা অস্ত্র দেবে বা অস্ত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা


করবে, তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। গতকাল সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানার খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, স্বপক্ষ ত্যাগ করা একজন সেনাসদস্য তাদের বলেছেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে ৬০ থেকে ৭০ জন বিদ্রোহী সেনাসদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
সংগঠনটি বলেছে, ‘ইদলিব প্রদেশের জাওয়াইয়া পার্বত্য এলাকার কেনসাফরা ও কেফের কোয়াইদ গ্রামে সেনাবাহিনীর ওই সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের হত্যা করা হয়।’
সিরিয়ান অবজারভেটরি আরও জানায়, এ ছাড়া সোমবার দেশজুড়ে আরও ৪০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারের অনুগত তিন সেনাসদস্যও রয়েছেন। ইদলিব প্রদেশে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে তাঁরা নিহত হন।
তৃণমূল বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট সিরিয়ান রেভল্যুশনারি জেনারেল কমিশন জানিয়েছে, ইদলিব প্রদেশে সরকারি সেনাদের পক্ষ ত্যাগ করা নিহত সেনার সংখ্যা ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনটি আরও বলেছে, সোমবার সিরিয়াজুড়ে ১১৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে দেরায় নয়জন এবং হোমসে আরও নয়জন নিহত হয়েছে।
তবে সিরিয়ায় বিদেশি গণমাধ্যমের প্রবেশের অনুমতি না থাকায় এসব প্রাণহানির খবর নিরপেক্ষভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
বাশারের সরকার বলছে, সিরিয়ায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী চেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের মোকাবিলায় সরকার লড়াই করছে।
বিদ্রোহী সেনাদের হত্যার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে দামেস্ক সিরিয়ায় পর্যবেক্ষকদের প্রবেশের অনুমতি দিতে আরব লিগের একটি প্রস্তাবে সই করেছে। মিসরের রাজধানী কায়রোয় আরব লিগের সদর দপ্তরে ওই প্রস্তাবে সই হওয়ার পর সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়াল্লেম বলেন, দামেস্ক প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। কারণ তারা সংকটের একটি ‘রাজনৈতিক সমাধান’ চায়। আরব লিগ বলেছে, চলতি সপ্তাহে পর্যবেক্ষকদের অগ্রবর্তী একটি দল সিরিয়ায় যেতে পারে।
মুয়াল্লেম আরও বলেন, ‘আমরা সংকট থেকে উত্তরণ এবং একটি নিরাপদ ও আধুনিক সিরিয়া গঠন করতে চাই, যে সিরিয়া হবে গণতন্ত্রের একটি আদর্শ।’
এদিকে সিরিয়ার দমন অভিযানের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বেশির ভাগ সদস্যদেশ ভোট দিয়েছে। প্রস্তাবটির পক্ষে ১৩৩ ভোট এবং বিপক্ষে ১১ ভোট পড়েছে। গত মার্চে বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে সহিংসতায় এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.