পুলিশের বাধায় গণমিছিল করতে পারেনি বিএনপি

পুলিশের বাধার মুখে পূর্বঘোষিত গণমিছিল করতে পারেনি বিএনপি। গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি দিয়েছিল দলটি। কিন্তু মিছিলের জন্য দলটির নেতা-কর্মীদের জড়ো হতেই দেয়নি পুলিশ। বিএনপি অভিযোগ করেছে, গতকাল কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা ৮৫ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এঁদের মধ্যে সাতজনকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আটক করা হয়। কর্মসূচি অনুযায়ী, গতকাল বেলা আড়াইটায় নয়াপল্টনে বিএনপির
কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে গণমিছিল বের করার কথা ছিল। কিন্তু সকাল থেকেই ওই এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাব জলকামান ও সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে অবস্থান নেয়। তারা কার্যালয়ের ভেতর কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়া আর কাউকে ঢুকতে দেয়নি। এমনকি দলীয় কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায়ও কর্মীদের ভিড়তে দেয়নি পুলিশ। কিছুক্ষণ পরপর আশপাশের এলাকায় পুলিশ গিয়ে বিএনপির কর্মীদের ধাওয়া দিতে দেখা গেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, যেভাবে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে তাতে মনে হয়, দেশে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে।
সেখানে দায়িত্ব পালনকারী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, জনগণের জানমাল ও স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অবরুদ্ধ কার্যালয় থেকে বেলা পৌনে চারটার দিকে ২০-২৫ জন কেন্দ্রীয় নেতা মিছিল করতে রাস্তায় নামলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন তাঁরা রাস্তায় বসে পড়েন। সেখানে প্রায় ১৫ মিনিট বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যান।
মিছিলে প্রথম স্লোগান ধরেন মির্জা ফখরুল। তাঁর সঙ্গে অন্য নেতারাও স্লোগান দেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, নজরুল ইসলাম খান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আফতাফ হোসেন চৌধুরী, সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর নাছির, রহুল আলম চৌধুরী, সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, খুলনার সাংসদ নজরুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, নাজিমউদ্দিন আলম, এমরান সালেহ, জাফরুল হাসান, খায়রুল কবির, শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
মিছিল শেষে সাদেক হোসেন খোকা সাংবাদিকদের বলেন, বিজয়ের মাসে গণতন্ত্র অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তিনি রক্ত দিয়ে হলেও গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।
এর আগে বেলা তিনটার দিকে বিএনপির কার্যালয়ের অদূরে নাইটিঙ্গেল হোটেলের পাশের গলিতে দলটির কিছু নেতা-কর্মী জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ জলকামান ব্যবহার ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
নয়াপল্টন এলাকা থেকে উত্তরা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হানিফ আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম আশরাফুর রহমান, মহিলাবিষয়ক সহসম্পাদক মুন্নী চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিতা আহম্মেদ ও দলীয় কর্মী প্লাবন হোসেন, জাফর ও সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুুলিশ।
ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির কর্মীরা গত রোববারের চোরাগোপ্তা হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.