সৃষ্টি সুখের উল্লাসে by লিটন ঘোষ জয়

ডিসেম্বর বাঙালি জাতির বিজয়ের মাস। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর এ মাসেই আমরা অর্জন করেছিলাম লাল সবুজের বিজয় নিশান। পেয়ে ছিলাম বাংলাদেশ নামক একটি মানচিত্র। আর সে বিজয়ের মাসেই সমকাল সুহৃদ সমাবেশ আয়োজন করেছে 'মহাসমাবেশ'। যা ছিল সুহৃদ বন্ধুদের অনেক কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তা বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে। এটা ভাবতেই যেন অন্য রকম একটা ভালোলাগা প্রাণে দোলা দিচ্ছে।


দেশের সব স্থান থেকে আসবে সুহৃদ বন্ধুরা। তাদের নিয়েই এই মহা আয়োজন মহাসমাবেশ। তারা একে অপরের সঙ্গে গড়ে তুলবে আরও দৃঢ় বন্ধন। ভাগ করে নেবে সুখ-দুঃখ। সমাবেশকে ঘিরে পরিচয় হবে নতুন নতুন বন্ধুর সঙ্গে। যাদের লেখা ও নাম আমরা বিভিন্ন সময় সুহৃদ সমাবেশের পাতায় দেখেছি। তাদের লেখনীর মাধ্যমে আমরা পেয়েছি তাদের মনের সুখ-দুঃখের নানা অভিজ্ঞতা। যা তারা রঙের ক্যানভাসে লাইনের পর লাইন সাজিয়ে ছড়া-কবিতা, গল্প অথবা ফিচার আকারে তুলে ধরেছে পাঠকের সামনে। রোদ, বৃষ্টি, ঝড়-বন্যা, চিকিৎসা সেবা, শীতবস্ত্র বিতরণ, শিক্ষাসামগ্রী, বৃক্ষ রোপণসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনের পাশাপাশি দেশের কালজয়ী সব কবি, সাহিত্যিক ও নির্ভীক সাংবাদিকদের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা আয়োজন করে আসছে সুহৃদ সমাবেশ এবং সে ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আর তারই ধারাবাহিকতার হাত ধরে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে 'সুহৃদ মহাসমাবেশ'।
এই মহাসমাবেশকে ঘিরে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। আর আমার কিছু নিছক কথা। আগেই বলে রাখছি কেউ আবার এই ছন্নছাড়া কথাগুলোকে উপদেশ মনে করবেন না। বলা তো যায় না যদি আমার লাইনচ্যুত কথাগুলোর একটি বাক্য ও বগি ধরে...
এবার আসা যাক মূল প্যাঁচালে_ এই যে সারাদেশ থেকে এত এত সুহৃদ একত্রিত হব। সেটা কী শুধু পরিচিত হওয়ার জন্য? না কী একদিনের জন্য এ ওর মুখ দেখাদেখি করতে?
সে যাই হোক, আমরা তো মহাসমাবেশের মাধ্যমে মিলিত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাচ্ছি! আর সে আশা নিয়েই দেশের দূর-দূরন্ত থেকে ছুটে আসবে প্রায় ৭০০ সুহৃদ বন্ধুরা। তাই আমাদের সবার উচিত সবাই গোটা মিলন মেলাকে অর্থবহ করে গড়ে তোলা। আর এ কাজের গুরুদায়িত্ব যাদের ওপর ন্যাস্ত থাকবে তারা হলো কেন্দ্রীয় সুহৃদ বন্ধুরা। অতএব আমরা তাদের ওপরই সবচেয়ে বেশি আশা করতে পারি, পারি তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে। তারা যেন আমাদের এমন একটা মিলন মেলা উপহার দেন যা থেকে আমরা কিছু অর্জন করে যার যার এলাকায় ফিরে এসে যেন মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দিতে পারি। কাজ করতে পারি নতুন এক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে। হাতে হাত রেখে আরও এগিয়ে যেতে সুন্দর সোনালি রোদ ঝলমল আলোকিত এক নতুন সকালে। আর সেই অপেক্ষাতে এখন দিন গোনা ১০ ডিসেম্বর এর জন্য। দেখি কেন্দ্রীয় সুহৃদ বন্ধুরা আমাদের কী উপহার দেয়!
হসাধারণ সম্পাদক, সুহৃদ সমাবেশ, মাগুরা

মোয়াজ্জেম হোসেন
সমকালের পাঠক সংগঠন হলো 'সুহৃদ সমাবেশ'। সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দুইশতাধিক শাখায় লাধিক সুহৃদ-বন্ধু নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। যার মধ্যে উল্লেখ্য_ মাদকবিরোধী প্রচারণা, দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যাদুর্গতদের জন্য সাহায্য, নারী-শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ, সাংস্কৃতিক উৎসব, পাঠচক্র, বইমেলা, ঋতু উৎসব, লেখালেখি কর্মশালা, চিত্রাংকন, বিতর্ক, বই পড়া ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা, চলচ্চিত্র উৎসব, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ পালন। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার পাশাপশি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। এ লক্ষ্যে কাজ করতে যেয়ে বাধাও অতিক্রম করতে হয় অনেক। যেমনি ভাবে আজকের অনুসরনীয় আপনাকেও অতিক্রম করতে হয়েছে শত বাধাএ সংগঠনের প্রত্যেক সদস্য তরুণ, নিষ্ঠাবান, সজ্জন ও সেবক। সর্বোপরি তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত টগবগে তরুণ।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের ৪০ বছর পেরিয়ে গেছে। এখনও আমরা অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করতে পারেনি। যে দেশে এখনও জাতির পিতাকে নিয়ে বিতর্ক। দুষ্ট প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করে নতুন প্রজন্মকে ভুল পথে নিয়ে যাওয়ার অবিরাম চেষ্টা করে চলেছে। ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে '৭২-এর সংবিধান। বন্দুকের নলের মাথায় ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে বহুবার। তারপরও গণতন্ত্র এসেছে কিন্তু পরিবর্তন এসেছে সমান্যই। সুহৃদ মানেই টগবগে তরুণ। বয়সে নয় কর্মে। আমি তাদের মধ্যে দেখি অফুরন্ত সম্ভাবনা। দেশের কল্যাণে এবং সংকট উত্তরণে সমসময়ই এগিয়ে থাকতে চায়। এ প্রত্যাশা অবশ্যই পূরণে সুহৃদরা অবিচল। তাই আর দেরি নয়। সুহৃদরা ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ূন, চলুন বিদ্যালয় থেকে কলেজগুলোয়। শামিল হই, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা চলছে। সুহৃদের মহাসমাবেশ সেই দিনেরই পথ দেখাবে।
হউপদেষ্টা, পাটগ্রাম সুহৃদ সমাবেশ

মির্জা ইমতিয়াজ শাওন
'তোমরা এসেছ, বিপ্লবী বীর! অবাক অভ্যুদয়।/ যদিও রক্ত ছড়িয়ে রয়েছে সারা...।/তবু দেখ আজ রক্তে সাড়া_/আমরা এসেছি উদ্দাম ভয়হারা।/ আমরা এসেছি চারদিক থেকে, ভুলতে কখনো পারি!/এক সূত্রে যে বাঁধা হয়ে গেছে কবে কোন্ যুগে নাড়ি।/আমরা যে বারে বারে/তোমাদের কথা পেঁৗছে দিয়েছি এদেশের দ্বারে দ্বারে,/মিছিলে মিছিলে সভায় সভায় উদাত্ত আহ্বানে,/ তোমাদের স্মৃতি জাগিয়ে রেখেছি জনতার উত্থানে,/উদ্দাম ধ্বনি মুখরিত পথে ঘাটে,/পার্কের মোড়ে, ঘরে, ময়দানে মাঠে/মুক্তির দাবি করেছি তীব্রতর...'
তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে, ডুবতে রাজি আমি ডুবতে রাজি আমি। কবিগুরুর এই গানটির মতো আমি শুরুর দিন থেকে সৃজন উৎসবে, মানবিকতায়, সম্প্রীতির খোলা হাওয়া গায়ে মেখে সুহৃদ সমাবেশের কর্মকাণ্ডে ডুবে আছি। উত্তাল ঢেউ কিংবা ভাটার টান কখনও সুহৃদ সমাবেশের পাশ থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখিনি তাই অন্যদের তুলনাই আমার প্রত্যাশা খানিক বেশি। সুহৃদ মহাসমাবেশ আমাকে বেশ আন্দোলিত করছে। মহাসমাবেশ থেকে সুহৃদ সদস্যরা অন্য মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে নিজ নিজ এলাকায় কাজে যোগ দিয়ে আলোকের পথে নব অভ্যুত্থান ঘটাতে পারবে এমনটাই বিশ্বাস। একটা সফল মহাসমাবেশ যেমনি সারাদেশের সুহৃদের সধ্যে সম্প্রীতির মেলবন্ধন রচনা করবে তেমনি ভালো কাজে অংশ নিয়ে হয়ে উঠবে সঞ্জীবনীর জাদুর কাঠি। মহাসমাবেশ সফল করতে সুহৃদ বন্ধুদের প্রয়াস হবে আন্তরিক এটাই কাম্য। সঙ্গে সঙ্গে সমকালে কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া মহাসমাবেশের সফল আয়োজনের জন্য যেমনি তারা এগিয়ে এসেছেন ঠিক একইভাবে মহাসমাবেশে অর্জিত শক্তি কাজে লাগানোর জন্য সুহৃদদের সব সময় পৃষ্ঠপোষকতা ও মহাসমাবেশের উপস্থাপিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। বিভিন্ন স্থান থেকে ডেলিগেট হিসেবে যারা আসবে তাদের যেন পদমর্যাদার ভিত্তিতে এবং পরীক্ষিতদের যথাযথ সম্মানের সঙ্গে তাদের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। মহাসমাবেশ উপলক্ষে দেশ-বিদেশের সব সুহৃদকে আমার ব্যক্তিগত ও চট্টগ্রাম সুহৃদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা অভিনন্দন। মহাসমাবেশ মহাসমারোহে শতভাগ সাফল্য বয়ে আনবে এমনটাই প্রত্যাশা...
'এ আকাশ এ দিগন্ত, এ মাঠ, স্বপ্নের সবুজ ছোঁয়া মাটি,/সহস্র বছর ধরে এসে আমি জানি পরিপাটি,/জানি এ আমার দেশ অজস্র ঐতিহ্য দিয়ে ঘেরা,/এখানে আমার রক্তে বেঁচে আছে আমার পূর্বপুরুষেরা।/যদিও দলিত দেশ, তবু মুক্তির কথা কয় কানে,/যুগ যুগ আমরা যে বেঁচে থাকি পতনে উত্থানে!'
হসাধারণ সম্পাদক, সমকাল সুহৃদ, চট্টগ্রাম

No comments

Powered by Blogger.