প্রধানমন্ত্রীকে জার্মান প্রেসিডেন্ট-বাংলাদেশ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার 'স্থিতিকারক শক্তি'

জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান উলফ বলেছেন বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার 'স্থিতিকারক শক্তি'। তাঁর দেশ দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন গতি সঞ্চার করতে আগ্রহী। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জার্মান প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন। তিনি বলেন, 'আমরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বহুপক্ষীয় বন্ধনের পাশাপাশি বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে


এবং সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র সন্ধান করতে চাই।'তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে অবস্থানরত জার্মান প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমার সঙ্গে আসা বিরাট বাণিজ্য প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের সদিচ্ছারই বহিঃপ্রকাশ।' জার্মান প্রেসিডেন্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য 'ওয়ান-স্টপ সেবা' ও অধিক সুযোগ-সুবিধা চালু করার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা গত মাসে তাঁর জার্মানি সফরের কথা স্মরণ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানে অব্যাহত সমর্থনের জন্য জার্মান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। 'সরকার বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী দেশের দুর্নাম থেকে বের করে আনতে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসবাদ দমনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি।' প্রধানমন্ত্রী ওষুধ, জৈব প্রযুক্তি, মৌলিক প্রকৌশল, ফলিত বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জার্মান সহযোগিতা সম্প্রসারণের আহ্বান জানান। তিনি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন আলোচনায় জার্মানির অগ্রণী ভূমিকা এবং অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতি সমর্থনমূলক সহযোগিতার প্রশংসা এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে চলমান ডারবান সম্মেলনে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হবে। পরে প্রধানমন্ত্রী জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান উলফের সৌজন্যে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন। স্পিকার আবদুল হামিদ, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ রূপসী বাংলা হোটেলে আয়োজিত এ মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ : জার্মানির প্রেসিডেন্ট গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে চমৎকার ও বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিদ্যমান। এ সফরের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। জার্মানির প্রেসিডেন্ট উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির বিদ্যমান সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। তিনি আরো বলেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। জার্মানির প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগসহ বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণের আশ্বাস দেন।
খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ : সফররত জার্মানির প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিয়ান ভুলফের সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
পরে বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া জার্মানির প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, বাংলাদেশ জার্মানির বিশেষ বন্ধু। বর্তমানে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে জার্মানি অন্যতম বড় বাজার। শুধু তৈরি পোশাক নয়, বাংলাদেশ থেকে জাহাজও তৈরি করিয়ে নেয় জার্মানি।
খালেদা জিয়া আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের মধ্যকার বিরাজমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া জার্মানি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কলকারখানায় আরো বিনিয়োগ করবে। সূত্র : বাসস।

No comments

Powered by Blogger.