সীমান্ত হাটে জাল নোট প্রতিরোধের উদ্যোগ by ওবায়দুল্লাহ রনি

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাটে কেউ যেন জাল নোট দিতে না পারে সে জন্য কর্মশালার আয়োজন করেছে দু'দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের রুপি চেনার উপায় এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও ইউসিও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আসল টাকা চেনার উপায় সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দু'দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা বিপরীত দেশে গিয়ে এই প্রশিক্ষণ দেবেন।
৯ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমে বাংলাদেশ অংশের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তে ২৩ জুলাই থেকে হাট চালু হয়েছে। এ হাটে নিজ নিজ দেশে প্রচলিত টাকা ও রুপির বিনিময়ে কেনাবেচা চলছে। এদেশের ক্রেতারা টাকার বিনিময়ে ভারতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পণ্য কেনেন। আর ভারতের ক্রেতারা রুপির বিনিময়ে এদেশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পণ্য কেনেন। পরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সোনালী ও জনতা ব্যাংক এবং ভারতের ব্যবসায়ীরা স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও ইউসিও ব্যাংক থেকে নিজ দেশের মুদ্রায় তা বিনিময় করে নেন।
তবে ওই নোট যেন জাল না হয় সে জন্য উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। দু'দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেই প্রশিক্ষণ দেবেন। আর এ জন্য ৯ ডিসেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঢাকায় এসে সোনালী ও জনতা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন। পরে একইভাবে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে দেশে গিয়ে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও ইউসিও ব্যাংক কর্মকর্তাদের টাকা চেনার উপায় সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দেবেন। এ হাট থেকে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫০ ডলার সমমূল্যের পণ্য কিনতে পারেন।
বাংলাদেশ অংশে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউয়ারগড়ে সোনালী ব্যাংককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লাউয়ারগড়ের নিকটতম শাখা থেকে এদেশের ব্যবসায়ীরা রুপিকে টাকায় বিনিময় করে নেন। তার পার্শ্ববর্তী ভারতের মেঘালয় সীমান্তের কালিয়ারচর অংশের ব্যবসায়ীরা সেদেশের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার নিকটতম শাখা থেকে টাকাকে রুপিতে বিনিময় করেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার বালিয়াবাড়ী অংশের সীমান্ত হাটে জনতা ব্যাংকের নিকটতম শাখা থেকে রুপিকে টাকায় বিনিময় করা হয় আর ভারতের ওই অংশের নলিকাতা সীমান্তে সেদেশের ইউসিও ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা রুপিতে বিনিময় করতে হয়। এরপর এসব ব্যাংক নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে ওই টাকা ও রুপি বিনিময় করেন। চুক্তি অনুযায়ী সীমান্ত হাটে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা চানাচুর, চিপস, আলু, তৈরি পোশাক, মাছ, শুঁটকি, মুরগি, ডিম, সাবান, শিম, সবজি, গামছা, তোয়ালে, কাঠের টেবিল-চেয়ার, গৃহস্থালি পণ্য নিয়ে বসেন। আর ভারতীয়রা সব ধরনের ফল, সবজি, মশলা, মরিচ, হলুদ, পান, সুপারি, আলু, মধু, বাঁশ ইত্যাদি বিক্রি করে থাকেন। তবে এ হাটে স্থায়ী কোনো দোকান থাকতে পারবে না।

No comments

Powered by Blogger.