দৃকে ১০ নারী শিল্পীর আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু

সরকারের উঁচুপদে নারীর অধিকার এখন আর বিস্ময় জাগায় না। পোশাক কারখানা থেকে শুরম্ন করে কর্পোরেট গ-ি পর্যনত্ম নারীদের অবাধ বিচরণ। পুরম্নষের সমান তালে লড়ে তাঁরাও তাঁদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।
একই সঙ্গে আছে নানা বঞ্চনার গল্প। কিছু দীর্ঘশ্বাস জমা হচ্ছে প্রতিনিয়তই। ১০ নারীশিল্পী যেন সেসব কথাই বলতে চাইলেন তাঁদের আলোকচিত্রে। রবিবার দৃক গ্যালারিতে 'নারী' শিরোনামে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এতে আয়েশা খাতুন তামান্না, কাকলী প্রধান, জান্নাতুল মাওয়া, মোমেনা জলিল, নুসরাত শিহাব পিঙ্কি, নুরম্নন্নাহার নার্গিস, রোকেয়া ইসলাম, সাইদা খানম, তসলিমা আখতার লিমা ও মুনিরা মোরশেদ মুন্নীর তোলা বেশকিছু আলোকচিত্র স্থান পায়।
এসবের কোথাও দেখা যায়, নারীরা নিজেদের যোগ্যতায় প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলেছে। ফুলের মতো ফুটে উঠছে। আবার কিছু কিছু আলোকচিত্র বলে, নারীকে যতই উজ্জ্বল আলোয় উপস্থাপন করা হোক না কেন, সেই আলোর মাঝেই বিপন্নতার দাগটি অনেক বেশি গাঢ়। এখনও যেমন প্রানত্মিক নারীরা বাল্যবিবাহ, এ্যাসিড ও যৌন নির্যাতন থেকে মুক্তি পায়নি, ঠিক তেমনি শহুরে নারীরাও কর্পোরেট দুনিয়ার ভোগ্যপণ্য। নারীর অভিযোগ শোনারও যেন কেউ নেই। পাঁচ দিনব্যাপী প্রদর্শনীটি চলবে বৃহস্পতিবার পর্যনত্ম। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যনত্ম এটি উন্মুক্ত থাকবে দর্শকদের জন্য।
ঠিকানা মঞ্চস্থ রবিবার শিল্পকলা একাডেমীর এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের নতুন নাটক 'ঠিকানা'। নাটকটি রচনা করেছেন সনত্মোষ চক্রবর্তী, নির্দেশনা দিয়েছেন তরম্নণ নাট্য নির্দেশক খোরশেদুল আলম। এতে অভিনয় করেন মাহমুদ, রম্নশনি, তাহা, শাহিনুর, রম্নবেল, মনিষা, অমর, সাথী, সারোয়ার, মুন্না ও তৃষ্ণা। নাটকে দেখা যায়, সমাজকে বদলে দেবার স্বপ্ন নিয়ে পথ চলছেন হাসান আর সুনন্দা। ভালবাসার মর্যাদা রৰা করতে গিয়ে সুনন্দা ঘর ছেড়েছে। ছেড়েছে বাবা-মা'কেও। দু'জনই ছিল একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিৰাথর্ী আর বাম রাজনীতির তুখোড় এবং নিবেদিত কমর্ী। হাসান মাসুদ এখন অধ্যাপক; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিৰক। সুনন্দার সনত্মান-স্বামীর বাইরে নিজস্ব জগতটা সমৃদ্ধ ছিল মানুষের প্রতি ভালবাসা, সমাজের কাছে দায়বদ্ধতা এবং সৃষ্টিশীল আর পরিশীলিত ভাবনা দিয়ে। কিন্তু সময়ের পালা বদলে যেভাবে পাল্টে যায় সমাজ, সভ্যতা, সবকিছু_ ঠিক তেমনি একদিন সুনন্দা আবিষ্কার করে চারপাশের মানুষগুলোর মতো তাঁর স্বামীও ভীষণভাবে পাল্টে যাচ্ছে। একদিন যে সুনন্দাকে মুগ্ধ করেছিল হাসানের মুক্তচিনত্মা, সমাজ বদলের ভাবনা আর অসাম্প্রদায়িক মন; সেই হাসান এখন নিজের আদর্শকে ধূলোয় মিশিয়ে দিয়ে বিত্তবৈভবকে করতলগত করার জন্য পাল্টে ফেলছে মূল্যবোধ। সমাজ বদলের ভাবনাগুলো এখন ধূসর অতীত হাসানের কাছে। তার কাছে সেগুলো এখন শুধুই 'উন্মাদনা।' নারীকে আজ সে অন্যসব পুরম্নষের মতোই সাধারণ গৃহবধূ আর সংসার ভারাক্রানত্ম অবলার চেয়ে অন্যকিছু ভাবতে চায় না। সুনন্দা আজ হাসান আর প্রতিক্রিয়াশীলদের মাঝে কোন ব্যবধান খুঁজে পায় না। দু'জনের আদর্শগত অনতিক্রম্য এ দূরত্ব নিয়ে এভাবে অপমানজনকভাবে জীবনযাপনেরও কোন মানে খুঁজে পায় না সুনন্দা। তাহলে কি বৃত্তাবদ্ধ এ জীবন ছেড়ে চলে যাবে সে? সামাজিক এবং মনসত্মাত্তি্বক জটিলতানির্ভর নারী জীবনের এক সরল উপাখ্যান যেন ফুটে উঠেছে এ নাটকটিতে।

No comments

Powered by Blogger.