মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়ে প্রথম ফ্লাইট যাচ্ছে মার্চের শুরুতে- রেজিস্ট্রেশনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

মালযেশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সব প্রস্তুতি শেষ। এখন কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর পালা। ফেব্রুয়ারির শেষে অথবা মার্চের শুরুতে কমীদের প্রথম ফ্লাইট শুরু হবে। এক্সেস টু ইনফরমেশনের (এ-২আই)
মাধ্যমে কর্মীরা রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন কমপিউটার সেন্টার থেকে (ইন্টারনেট সংযোগ আছে) রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। দীর্ঘ চেষ্টার ফসল হিসেবে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি খোলা হয়েছে। বুধবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আযোজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ১০ জানুয়ারি মালয়েশিয়া যাওয়ার রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে গণমাধ্যমে সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে। সরকারীভাবে মালয়েশিয়ায় যেতে আগ্রহীদের তার নিজ ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের মধ্যে প্রায় চার হাজার তথ্যসেবা কেন্দ্র চালু আছে। এছাড়া কিছু দুর্বল এবং কয়েকটি চালু না থাকা কেন্দ্রগুলো চালু রাখতে জেলা প্রশাসকরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা অন্য কমপিউটার থেকেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে নানা তথ্য তুলে ধরেন। তবে আমরা ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের ওপর জোর দিয়েছি বেশি। এ জন্য কোন ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র কাজ চলা অবস্থায় যদি বিকল হয় তাহলে আগ্রহীরা পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবে। বিদ্যুত সংযোগ না থাকা এবং বিদ্যুত চলে যাওয়ার সমস্যা থেকে বাঁচতে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে সব সময় জেনারেটর সুবিধা রাখা হবে। ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ যাতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য বিভাগগুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে রেজিস্ট্রেশনের তারিখ আলাদা করা হয়েছে। এতে আগ্রহীদের কোন রকম হয়রানি হবে না। এছাড়া মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিশেষ রেজিস্ট্রেশন চলাকালে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা শক্তিশালী রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি বিভাগে ৩ দিনব্যাপী রেজিস্ট্রেশন শেষে ডিসিদের কার্যালয়ে প্রাথমিকভাবে কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে ৩৪ হাজার ৫শ’ কর্মীকে নির্বাচন করা হবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের মধ্য থেকে প্রথম পর্যায়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য চূড়ান্তভাবে ১১ হাজার ৫শ’ কর্মীকে নির্বাচন করে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। দ্বিতীয় লটারিতে নির্বাচিতদের কর্মী রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে একটি নিশ্চিতকরণ কার্ড দেয়া হবে। উক্ত কার্ডে বাছাই পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম, স্থান, তারিখ এবং প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী উল্লেখ থাকবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাঈমুজ্জামান মুক্তা বলেন, সরকারী যে কোন ফরমের তুলনায় মালয়েশিয়ার জন্য নিবন্ধনের ফরম পূরণ প্রক্রিয়া সহজ। প্রায় এক থেকে দেড় মিনিটে এই ফরম পূরণ করা সম্ভব। এ হিসেবে দিনে পাঁচ শ’ ফরম পূরণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া বিকেল পাঁচটার মধ্যে যারা তথ্যসেবা কেন্দ্র কম্পাউন্ডে উপস্থিত থাকবে যত রাতই হোক তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হবে। ফরম পূরণ করতে অপারেটররা যদি কোন সমস্যায় পড়ে তাদের সাহায্য করার জন্য একজন করে ট্যাগ অফিসার রাখা হবে। ইউনিয়ন পরিষদের অপারেটরদের এসব বিষয়ে আগে থেকেই প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মালয়েশিয়া যেতে একজন কর্মীকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। উড়োজাহাজ ভাড়ার (একপথ) জন্য শ্রমিকদের খরচ হবে ৩১ হাজার পাঁচ শ’ টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিন হাজার পাঁচ শ’ টাকা, কল্যাণ ফি ২৫০ টাকা, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প তিন শ’ টাকা, ভিসা ফি এক হাজার এক শ’ টাকা, সার্ভিস চার্জ দুই হাজার টাকা, আয়কর দু শ’ টাকা, ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং এক হাজার টাকা এবং বিবিধ খরচ হিসেবে ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. জাফর আহমেদ খান বলেন, এই প্রথমবারের মতো এত ব্যাপকভাবে এ ধরনের কোন প্রোগ্রাম চালু করা হচ্ছে। এর আগে কখনও ইউনিয়নভিত্তিক কোটায় কোন কর্মী বিদেশে যাননি। সব কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য পরিবর্তিত নতুন তারিখও জানিয়ে দেয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.