পক্ষাঘাতগ্রস্তরা হাঁটতে পারবে

যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাঁরা এমন একটি বড়ি আবিষ্কার করেছেন, যা খেলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী আবার হাঁটতে পারবে। ডেইলি মেইল পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এলএম১১এ-৩১ নামের বড়িটি তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক লংগো। বিজ্ঞানীরা জানান, ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে সফল হয়েছেন তাঁরা। পেছনের দুই পা অকেজো হয়ে পড়েছে- এমন ইঁদুরের ওপর এ ওষুধ প্রয়োগ করেন তাঁরা। আঘাত পাওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে ভিন্ন মাত্রার তিনটি বড়ি খাওয়ানো হয় কিছু ইঁদুরকে। পাশাপাশি আরেকটি গ্রুপকে খাওয়ানো হয় অন্য ওষুধ। এতে দেখা গেছে, এলএম১১এ-৩১ বড়ি সেবনকারী ইঁদুরগুলো আগের মতোই হাঁটতে পারে। প্রতিদিন দুইবার এ বড়ি প্রয়োগে ছয় সপ্তাহের মাথায় ইঁদুরগুলো সুস্থ হয়ে ওঠে। গবেষকদের দাবি, এ ওষুধ মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের বাধাগুলোকে সফলভাবে ভেঙে দিতে পারে। এর মধ্য দিয়ে অন্যান্য রক্তধারায় প্রবাহিত সম্ভাব্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র রক্ষা পায়। মেরুরজ্জু আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে অনেক সময় মস্তিষ্ক দেহের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ রোগের চিকিৎসার (থেরাপি) ক্ষেত্রেও খাওয়ার এ বড়িটি বেশ ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়েছে।
কলম্বাস শহরের ওহাইয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সুং ওক ইয়ুন বলেন, ইঁদুর-জাতীয় প্রাণীর ওপর গবেষণায় এই প্রথম বিষক্রিয়া ছাড়া কোনো খাওয়ার ওষুধে কার্যকর সাফল্য দেখা গেল।
অলিগোডেন্ড্রোসাইটস নামে একধরনের কোষ স্নায়ুতন্ত্রকে ঘিরে থাকে এবং রক্ষা করে। স্নায়ুতন্ত্রের তন্তুগুলোকে একধরনের আবরণের মধ্যে আগলে রাখে এ কোষ। এ ছাড়া এ আবরণ স্নায়ুকোষগুলোর মধ্যে সংকেত আসা-যাওয়ার গতি বাড়াতেও সাহায্য করে। অলিগোডেন্ড্রোসাইটের মধ্যে পি৭৫ নামে একধরনের প্রোটিন থাকে। এর আগে ইয়ুন এক পরীক্ষায় দেখিয়েছিলেন, মেরুরজ্জুতে আঘাতের ফলে অলিগোডেন্ড্রোসাইট কোষগুলো মারা যাওয়ার সঙ্গে এ প্রোটিনের সম্পর্ক আছে। দেহের একটি ছোট কোষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, বড়িটি এ প্রোটিনকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কোষগুলোর মৃত্যু ঠেকাতে পারে।
সূত্র : জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.