অবতার

অবতার ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্র হচ্ছে জেক। বলা যায় জেক-এর যাত্রা নিয়েই অবতার ছবিটি। এখানে সে একজন বিশেষ ব্যক্তি। শুরম্নতেই যে বিষয়টি জেককে আর সবার কাছ থেকে আলাদাভাবে চিত্রিত করে, তা হলো তার শরীর।
তার শরীরে অর্ধেক অংশ মানুষের এবং বাকি অর্ধেক এ্যালিয়নের। তার একটি লেজ রয়েছে যা দিয়ে সে কোন কিছু আঁকড়ে ধরতে পারে। অনেকটা পাপেটের মতোই সে এই অদ্ভুত শরীরটা নিয়ন্ত্রণ করে। প্যান্ডোরায় বসতি স্থাপনকারী অন্যান্য মানুষের মতো জেকও একটি সংগঠনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। সংগঠনটির ল্য হলো প্যান্ডোরা থেকে আনোরটেনিয়াম নামের এক ধরনের রহস্যজনক খনিজ পদার্থ সংগ্রহ করা। প্যান্ডোরার মাটি থেকে অচেনা এই খনিজটি সংগ্রহের জন্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা প্রদর্শনের মধ্য দিয়েই মূলত মানবসমাজে সীমাহীন লোভ ও নিবর্ুদ্ধিতার রূপই চিত্রায়িত করা হয়েছে চৌকস নির্মাতা জেমস ক্যামেরন। জেকের যাত্রার প্রথম অংশে দেখা যায় এ্যাডভেঞ্চার প্রিয় এক বালককে। হুইল চেয়ারে বসা এই বালককেই পরবতর্ীতে ক্যামেরন রূপানত্মরিত করেন ১০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট নীল চামড়ার ন্যাভিতে। অদ্ভুত দর্শন রূপানত্মরিত এই জেকই পরবতর্ীতে আবিভর্ূত হয় প্যান্ডোরার স্বাধীনতার এক মূর্ত প্রতীক হিসেবে। ছবির শুরম্নর দিকের একটি দৃশ্যে দেখা যায়, ২১৫৪ সালের একটি মহাকাশযানের আরোহীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক নৌ-সেনা জেক। প্যান্ডোরায় অবতরণের আগ মুহূর্তে দীর্ঘ একটি নিদ্রা শেষে সবাই জেগে ওঠেন। ভরশূন্যতার কারণে জেক ভাসতে থাকেন মহাকাশযানের ভেতরে। এদিকে প্যান্ডোরা গ্রহটিতে বিস্ময়কর এক ধরনের প্রাণের অসত্মিত্ব দেখা যায়। সেখানে ন্যাভি নামের স্থানীয় এক প্রজাতি বাস করে, যাদের সঙ্গে আকৃতিতে মানুষের সাদৃশ্য রয়েছে। তবে শারীরিক মতায় মানুষের চেয়ে তারা অনেক বেশি শক্তিশালী। তাদের শরীরের রং নীলাভ এবং দেহ লেজবিশিষ্ট। নিজেদের পৃথিবীতে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে বাস করে। মানুষ যেখানে আনোবটেনিয়াম নামের মূল্যবান একটি খনিজের সন্ধান পায়, যার মাধ্যমে পৃথিবীর ক্রময়িষ্ণু জ্বালানি শক্তি ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। আর তাই এই খনিজ দখলের উদ্দেশ্যে ন্যাভিদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয় মানুষ। প্যান্ডোরার বায়ুম-ল মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের উপযোগী নয়। তাই স্থানীয় ন্যাভিদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বিজ্ঞানীরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে মানুষ ও ন্যাভিদের সংমিশ্রণে একটি শংকর প্রজাতি উদ্ভাবন করেন। শংকর এই প্রজাতিকেই অবতার হিসেবে অবহিত করা হয়েছে। গল্পের নায়ক নৌ-সেনা জেক একটি যুদ্ধে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এদিকে তার যমজভাই টনি অবতার প্রোগ্রামে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করা অবস্থায় খুন হয়ে যান। ভাইয়ের মৃতু্যর পর টনির স্থলাভিষিক্ত হন জেক। টনি এবং ন্যাভিদের জেনেটিক সংমিশ্রণে তিনি অবতারে রূপানত্মরিত হন। পঙ্গু অবস্থা থেকে আবার হাঁটা ও দৌড়ানোর সুযোগ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন জেক। সেনাবাহিনীর গুপ্তচর হিসেবে প্যান্ডোরার গহীন অরণ্যে পাঠানো হয় তাকে। সেখানে প্যান্ডোরার অসাধারণ সৌন্দর্য এবং বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি, দুটোরই মুখোমুখি হন তিনি। এখানকারই এক তরম্নণী ন্যাভি নাযিত্রির সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। নাযিত্রির কাছেই জেক শেখেন ন্যাভিদের জীবনাচরণ। ন্যাভিদের বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে তাদের আবাসস্থল ত্যাগ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করাটাই ছিল জেকের মূল দায়িত্ব। এদিকে তাদের আবাসস্থলের নিচেই লুকানো থাকে মূল্যবান খনিজ আনোবটেনিয়াম। কাহিনীর এক পর্যায়ে পৃথিবীর সামরিক শক্তি এবং ন্যাভিদের আবাসস্থল রার নিমিত্তে যুদ্ধের মধ্যে পড়ে যান জেক। খনিজ সম্পদ আহরণে মানুষদের সহিংসতা বাড়তে থাকে। অন্যদিকে নিজেদের আবাসস্থল রার্থে ন্যাভিরাও শক্ত অবস্থান নেয়। এর ফলে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয় মানুষ ও ন্যাভিদের মধ্যে। যে যুদ্ধের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে একটি প্রজাতির সামগ্রিক ভাগ্য। এ অবস্থায় জেক বাধ্য হয়েই যুদ্ধে তার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। ছবির শেষ পর্যায়ে দেখা যায় সামরিক আক্রমণ শেষে ন্যাভিরা বেঁচে যাওয়া মানুষদের চিরতরে পৃথিবীতে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। তবে তারা জেক, নর্ম ও অবতার টিমের কয়েকজনকে তাদের সঙ্গে প্যান্ডোরায় অবস্থানের অনুমতি দেয়। জেক চিরদিনের জন্য অবতার হিসেবে প্যান্ডোরায় থেকে যান এবং নিজের মানবসত্ত্বাকে বিসর্জন দিয়ে একজন ন্যাভি হিসেবে শুরম্ন করেন নতুন জীবন। ছবিটি যারা দেখতে চান তারা বিভিন্ন সিডি ডিভিডির দোকান থেকে কালেকশন করতে পারেন এুনি। কেননা ছবিটি এরই মধ্যে ডিভিডি আকারে আমাদের মার্কেটে চলে এসেছে।
ক্যামেরনের পরবর্তী ছবি হিরোশিমা-নাগাসাকি
ক্যামেরন এখন মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি অবতার নিয়ে চিনত্মিত নন। তিনি এবার মনোনিবেশ করেছেন তার পরবতর্ী ছবি হিরোশিমা নাগাসাকি নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রোপটে হিরোশিমা -নাগাসাকির সেই ধ্বংসযজ্ঞ আর মানুষের জীবন নিয়ে ছবি বানাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ ল্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ওপর লিখিত একটি বইয়ের স্বত্ব নিয়ে ইতোমধ্যেই অনেক দূর এগিয়েছেনও তিনি। দ্য সারভাইভারস লুক ব্যাক নামের এ বইটি গত ১৯ তারিখে প্রকাশিত হয়েছে এবং আরও জানা গেছে, ক্যামেরন বহির্বিশ্বে অবতার এর প্রশমনের ল্যে গুরম্নত্বপূর্ণ এক কার্যক্রম থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে তিনি চলে গেছেন বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া সর্বশেষ মানুষগুলোর এক জনের সঙ্গে আলাপ করতে। হ

No comments

Powered by Blogger.