আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা ও সামনের দিনের গভীর ষড়যন্ত্র- স্বদেশ রায়

মহাজোট সরকারের চার বছর পূর্তি শেষে অনেক সংবাদপত্র জনমত জরিপ করেছে। ওই জনমত জরিপে দেখা গেছে, এখনও আওয়ামী লীগ এককভাবে বিরোধী দলের থেকে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছে। আর জোটগতভাবে তো এগিয়ে আছেই।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ অবধি যখন আওয়ামী লীগ ঐকমত্যের সরকার নিয়ে ক্ষমতায় ছিল তখনও দেখা গিয়েছিল ক্ষমতার শেষ প্রান্তে এসেও আওয়ামী লীগ জনপ্রিয়তায় এগিয়ে ছিল। আর এই আওয়ামী লীগ জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছে জেনেই কিন্তু সেদিন আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ত্যাগের অনেক আগে থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। এবং সে ষড়যন্ত্র জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হয়েছিল। যার ফলে দেশে কী ঘটেছিল সেগুলো উল্লেখ করে লেখার আয়তন বাড়ানোর দরকার নেই। কারণ দেশের মানুষের সেগুলো মনে থাকার কথা। তবে শুধু এইটুকু উল্লেখ করা দরকার, সেদিন সেই ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল দেশের এক শ্রেণীর সুশীল সমাজ। এবং তারা মিথ্যে তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অনেক শক্তিকে যোগ করেছিল ওই ষড়যন্ত্রে।
এবারও জনমত জরিপের পরে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে পরাজিত করা যাবে না। কারণ, ডেইলি স্টারের জনমত জরিপ অনুয়ায়ী এখনও আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি মিলে ৪৭ শতাংশ ভোট পাবে এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে, অন্যদিকে জামায়াত ও বিএনপি পাবে ৪০ শতাংশ ভোট। এছাড়া দশ শতাংশ ভোটার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। সাধারণত এই ধরনের ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কাছাকাছি এসে গেলে। এ ক্ষেত্রে অনেক বিষয় কাজ করে। তবে তার ভেতর অন্যতম হলো মূল নেতা কে? সে ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এখনও দেশের বেশিরভাগ মানুষ খালেদার থেকে হাসিনার ওপর বেশি আস্থা রাখে। তাই যারা এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি তাদের বেশি অংশের হাসিনার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ নেতা হিসেবে তিনি অনেক বেশি যোগ্য বলে অধিকাংশ মানুষের কাছে বিবেচিত হচ্ছেন। সব মিলে এটা বলা যায় যে, নির্বাচনে মহাজোটকে হারানো সম্ভব হবে না। কিন্তু এখন মিডিয়ায় আমাদের সুশীল সমাজের বক্তব্য খেয়াল করলে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, তারা কেন যেন শেখ হাসিনার সরকারকে সহ্য করতে পারছে না। এই সুশীল সমাজ কেন এটা পারে না এ নিয়ে অনেকবার এই কলামে লিখেছি। তারপরেও সংক্ষেপে বলতে হয়, আমাদের সুশীল সমাজের এই অংশটি মূলত সামরিক সরকারের সৃষ্ট। এবং দেশে অপশাসন থাকলে তারা আর্থিকসহ নানানভাবে লাভবান হয়। আওয়ামী লীগের শাসন থাকলে গ্রামের মানুষ, দরিদ্র মানুষ লাভবান হয়। এছাড়া তারা বিভিন্নভাবে পাকিস্তানসহ যে সকল দেশ আছে যারা বাংলাদেশের ধ্বংস চায় তাদের দালাল হিসেবে এখানে কাজ করে। তারা জানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ধারাবাহিক ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ আর্থিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে দাঁড়িয়ে যাবে। কোন মতেই এই রাষ্ট্রকে ধ্বংস করা সম্ভব হবে না। তাই ওই সকল আন্তর্জাতিক শক্তি যারা বাংলাদেশের ধ্বংস চায় তাদের এজেন্ট হিসেবে এই সব ব্যক্তি সুশীল সমাজের ভেক ধরে কাজ করে। এছাড়া সুশীল সমাজের পোশাকের আড়ালে মৌলবাদীরা তো রয়েছেন। কারণ নামে বাম, লেখে নয়া দিগন্তে, মাহমুদুর রহমানের কাগজে এই বাম আসলে কী বাম-মিল্লাত বাম না জামায়াতী বাম সেটা এখনও যে কেউ প্রবীণ রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদকে জিজ্ঞেস করলে তিনি পরিষ্কার বলে দিতে পারবেন। এরা বেডরুমে লাদেনের ছবি টাঙ্গিয়ে রেখে, আইএসআইয়ের টাকায় জীবন ধারণ করে বাম চাদর গায় দিয়ে বেড়ায়। তাই এই সুশীলরা এখন ষড়যন্ত্রে নামবেই। অন্যদিকে এবার সরকার বিশেষ করে শেখ হাসিনা সুশীল সমাজের অন্যতম এক স্তম্ভের গায়ে আঘাত করেছেন। তিনি পদ্মা সেতুসহ অনেক কিছুর মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পাল্টা আঘাত করে চলেছেন। এমনকি তাঁর অনেক কাজ এখন মূলত জঙ্গী মৌলবাদীদের সহায়তা করছে। তিনিও বসে থাকবেন না। তিনি তাঁর সর্বশক্তি নিয়ে নির্বাচনের আগে ষড়যন্ত্রে নেমে পড়বেন। আর তিনি যে ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে থাকেন তার প্রমাণ কিন্তু ১/১১ এর পরে পাওয়া গিয়েছিল।
এছাড়া আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে। যুদ্ধাপরাধীরা কী পরিমাণ টাকা ব্যয় করছে বিদেশী লবিস্ট নিয়োগের জন্যে বা নানান ধরনের ষড়যন্ত্র করার জন্যে দেশে ও বিদেশে তার প্রমাণ ইতোমধ্যে অনেক পাওয়া গেছে। বিচারপতির স্কাইপে হ্যাক করা, তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধানের চিঠি, তুরস্ক এনজিও কর্মীদের এসে ট্রাইব্যুনালে ঢুকে যাওয়া এসব থেকে এটা স্পষ্ট যে, তাদের টাকা কী কাজ করছে? আর এটাও ঠিক যে দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরে তাদের টাকার জোগানদাতা অনেক। এবং তারা জানে আগামীতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলে সব বিচার সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে। সব বিচার সঠিক সম্পন্ন হলে তাদের শাস্তি যে মৃত্যুদ- এটা তাদের থেকে বেশি কারো জানার কথা নয়। কারণ, ১৯৭১ সালে তারা কী করেছিল সেটা তারাই বেশি জানে। তাই এই সুশীল সমাজ, এই সুশীল সমাজের একটি বড় স্তম্ভ, যার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রয়েছে তিনি ও যুদ্ধাপরাধীরা সবাই কিন্তু বসে আছে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনের আগে ষড়যন্ত্র কার্যকর করার জন্য। এবং তারা কতখানি শক্তিশালী সেটা বোঝার জন্যে অনেক বেশি জ্ঞানের দরকার নেই। আমরা বাংলাদেশের ভেতো বাঙালী আমরা জানি হাঁড়ির একটি ভাতে হাত দিলে বোঝা যায় সব ভাতের অবস্থা কি? তাই আওয়ামী লীগ সরকারের নিশ্চয়ই বুঝতে কষ্ট হবার কথা নয় চার বছর ধরে ইকোনমিস্টের মতো একটি পত্রিকা নিয়মিত তাদের বিরোধিতা করে যাচ্ছে এর পিছনের রহস্য কী? আওয়ামী লীগের নিশ্চয়ই বুঝতে কষ্ট হবার কথা নয়, তুরস্ক থেকে সিরিয়া বিদ্রোহীদের অস্ত্র যায়। সেই তুরস্ক কথা বলছে? এখানে বসে অঙ্ক করলেই মনে হয় তাঁরা হিসাব মেলাতে পারবেন।
তাই এটা এখন স্পষ্ট যদি কোনভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে দেশ ফিরে যায় তাহলে ২০০১-এর থেকেও বড় ষড়যন্ত্র হবে এ দেশে। এবং ওই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পুনরায় ২০০১-এর মতো না হলেও অন্য ফর্মে আবার মৌলবাদীরা ফিরে আসবে। এবং তার ভয়াবহতা কী হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখা দরকার মিডিয়ার কারণে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচার দুর্বলতার কারণে দেশের মানুষের একটি বড় অংশ কিন্তু এখনও মনে করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি নির্বাচনের জন্যে ভালো। আওয়ামী লীগের হাতে সময় খুব কম আছে তারপরেও তাদেরকে সর্বশক্তি নিয়োগ করে ওই জনগণকে বোঝাতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হওয়া মানেই একটি ষড়যন্ত্রের হাতে দেশকে ফেলে দেয়া। যা ঘটেছিল ২০০১-এ। যার ফলে দেশ কী ভয়াবহ জঙ্গীবাদে চলে গিয়েছিল। এটা তাদের বোঝাতে হবে। বোঝাতে হবে আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক শক্তিকে। যেখানে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। তবে একটা বিষয় এখানে কিছুটা নিশ্চয়তা আছে যে, সাংবিধানিক পথে তত্ত্বাবধায়কে আওয়ামী লীগ ইচ্ছে না করলে ফেরার কোন পথ নেই। অন্যদিকে বিএনপি রাজপথে এমন কিছু করতে পারবে না যাতে আওয়ামী লীগ বাধ্য হয় সেখানে যেতে। তাই তত্ত্বাবধায়ক ঠেকাতে রাজপথে ও সংসদে আওয়ামী লীগ যেন নৈতিকভাবে শক্তিশালী থাকে সেই কাজে এখন তাকে মানুষের কাছে যেতে হবে। কিন্তু সমস্যা হলো, আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া ওইভাবে সাধারণ জনগণের কোন নেতা নেই। অন্যদিকে যাঁরা পদে আছেন সেখানে কোন তরুণ তুর্কীর ঝাঁক নেই যেটা বঙ্গবন্ধুর ছিল। এই ঘাটতি আওয়ামী লীগ কিভাবে মেটাবে সেটা তারাই ভালো বুঝবে। তবে তাদের সামনে এই কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ এ কথা এক শ’ ভাগ নিশ্চিত বলা যায় এবার তত্ত্বাবধায়ক হলেই ২০০১-এর থেকে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র হবে। এবং তাতে দেশ খুবই খারাপ অবস্থানে চলে যাবে। এমনকি রাজনীতিও থমকে থাকতে পারে দীর্ঘদিন।
অন্যদিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে সেই ১৯৭২ থেকে পরিচিত মওদুদ আহমদ কিন্তু একটি ভয়ঙ্কর প্রস্তাব করেছেন। সে প্রস্তাব হলো শেখ হাসিনা ছাড়া সব দলের সদস্য নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন। আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে বলছে তারা সব দলের সদস্য নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পদ্ধতিতে রাজি। কিন্তু এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে আলোচনায় কোন আপোস রফায় যদি শেখ হাসিনাকে সরকার প্রধান না করে বাইরে রাখা হয় সেটা কিন্তু এ দেশের রাজনীতির জন্য একটি ভয়ঙ্কর বিষয় হবে। এবং এখানেও এটা নিশ্চিত বলা যায় শেখ হাসিনাকে প্রধান না রেখে যে সরকার গঠন করা হবে ওই সরকার আর কোন মতেই অন্তর্বর্তীকালীন বা তিন মাসের জন্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকার থাকবে না। ওই সরকার আন্তর্জাতিক বেশ কিছু শক্তির ও দেশের ভিতর একটি বিশেষ গোষ্ঠীর সমর্থন ও সাহায্য নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী সরকার হবার পথে নেমে যাবে। তাদের প্রথম কাজ হবে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা। কারণ, বাংলাদেশের এই যে শক্তি যারা কিছু লোককে ক্ষমতায় বসিয়ে দেশকে বিরাজনীতিকরণ করতে চায় তারা খুব ভালভাবে জানে তারেক ও কোকোর কারণে বাস্তবে খালেদা রাজনীতি থেকে মাইনাস হয়ে গেছেন। এমনকি তিনি ক্যান্টনমেন্টে একটি বাড়িতে অবৈধভাবে বাস করার জন্য যেদিন প্রকাশ্যে চোখের পানি ফেলেছেন সেদিন তিনি আরও মাইনাস হয়ে গেছেন। এখন বাংলাদেশবিরোধী শক্তি তাঁকে রাজনীতিতে টিকিয়ে রেখেছে মূলত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কাউকে দাঁড় করানোর জন্য। কারণ তাঁরা ড. ইউনূসকেও দাঁড় করিয়ে দেখেছেন এটা সম্ভব নয়। তাই তাঁরা খালেদাকে শিখ-ি হিসেবে রেখেছে। কিন্তু যদি কোন মতে তারা শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার সুযোগ পায় তাহলে তারা জানে সেদিন খালেদা স্বাভাবিকই মাইনাস হয়ে যাবেন। এমনি ১/১১-এর পরে খালেদা যে রাজনীতিতে টিকে আছে সেটা শেখ হাসিনার বদান্যতায়। কারণ, শেখ হাসিনা সেদিন জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য করে দেশে ফিরেছিলেন বলেই কিন্তু তারা খালেদাকে বিদেশে পাঠানো থেকে বিরত থাকে; শিখ-িটা রাখার জন্যে। তাই শেখ হাসিনা ছাড়া কোন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করার ফলই হবে দেশকে আরেকটি গভীর যড়যন্ত্রে ঠেলে দেয়া। এবং এটাও মনে রাখা দরকার বিএনপির অধিকাংশই খালেদার মাইনাস চায় সেটা ১/১১-এর পরে দেখা গেছে। আর আওয়ামী লীগে কিছু তো আছেন যাঁরা শেখ হাসিনার মাইনাস চান। তাই মওদুদ আহমদ যে টোপ দিয়েছেন এটা মূলত ষড়যন্ত্রের।
তাই এখন দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ গত চার বছরে বিদ্যুত, খাদ্যসহ অনেক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করে যে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে এটাই তাদের আগামী নির্বাচন বৈতরণী পার হবার জন্য যথেষ্ট নয়। তাদের খুবই দৃঢ়তা এবং যোগ্যতার সঙ্গে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে যেমন অনেক যোগ্যতার সঙ্গে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে তেমনি তাদের সব সময়ই সঙ্গে রাখতে হবে দেশের মানুষকে। কারণ, যে কোন রাজনৈতিক দলের সর্বশেষ ও সর্বোচ্চ শক্তি দেশের মানুষ। দেশের মানুষকে এককাট্টা হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাখার জন্য এখন সব থেকে বড় প্রয়োজন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার হচ্ছে তার যথাজবাব দেয়া ও আওয়ামী লীগের সাফল্য প্রচার করা। গত চার বছর তথ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের কোন প্রচার উইং যোগ্যতার সঙ্গে কাজ না করার ফলে অপপ্রচারের অনেক কিছু দানা বেঁধে গেছে মানুষের মনে। সেখান থেকে মানুষকে সত্য জানিয়ে সঠিক পথে আনার কঠিনতম বা গুরুভার এখন হাসানুল হক ইনু ও ড. হাছান মাহমুদের ওপর। হাসানুল হক ইনু দায়িত্ব নেবার পরে টিআইবির অপপ্রচার ও যুদ্ধাপরাধী বিচারের ট্রাইব্যুনাল নিয়ে যে অপপ্রচার চলছিল তার যথাজবাব দিয়েছেন। কিন্তু তার মন্ত্রণালয়ের অফিসারদের অযোগ্যতার কারণে এগুলোর সঠিক প্রচার হয়নি। তাই প্রধানমন্ত্রী ও নতুন তথ্যমন্ত্রীকে এখন তথ্য মন্ত্রণালয়ের খোলনলচে বদলে যোগ্য লোকের নিয়োগ দিয়ে এই কঠিন যুদ্ধে নামতে হবে। যেমন দায়িত্ব পাবার পরেই বিএনপি তেলের দাম নিয়ে করা হরতালের পর তেলের দাম বৃদ্ধির অপপ্রচারের যোগ্য জবাব দিয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। কিন্তু সেটাও খুব কম মিডিয়া প্রচার করেছে। তাই ড. হাছান মাহমুদকেও হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে মিলিত হয়ে রণ কৌশল বের করতে হবে। কারণ আগামী এক বছরে সীমাহীন অপপ্রচার হবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এই সীমাহীন অপপ্রচারের মাধ্যমে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বাচনের আগে তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার পথে এগুবে। আর এই অপপ্রচার কোন পর্যায়ে যায় সেটা ’৭২-এর পর থেকে এ দেশের সচেতন মানুষ লক্ষ্য করছে। এই অপপ্রচারের জবাব দিয়ে জনগণকে সঠিক তথ্য জানিয়ে সচেতন রাখার গুরুভার এখন হাসানুল হক ইনু ও ড. হাছান মাহমুদের ওপর। অবশ্য ২০০১-এর পর থেকে গত নির্বাচনের পূর্ব অবধি এবং বর্তমান সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় যখন অকেজো ছিল তখন নানান দায়িত্ব পালনের ভেতর দিয়েও এ কাজে যথেষ্ট দক্ষতা দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। এ কাজে তিনি অনেক দক্ষ ব্যক্তি। হাসানুল হক ইনু ও ড. হাছান মাহমুদের জন্য তাঁর সহযোগিতা ও উপদেশ অনেক কাজে লাগবে। এছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে প্রকাশনার মাধ্যম অপপ্রচারের জবাব ও তথ্য তুলে ধরায় নূহ আলম লেনিন তাঁর দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনিও বিভিন্ন সময়ে আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও এইচটি ইমামের নির্দেশনায় কাজ করেছেন। তিনি এখন প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনিও নিশ্চয়ই সর্বশক্তি নিয়োগ করে এ কাজে সহায়তা করতে পারেন। কারণ, যে কোন ষড়যন্ত্রকে ঠেকানোর অনেক বড় অস্ত্র জনগণকে সচেতন রাখা। জনগণ যদি বিভ্রান্ত না হয় তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা অনেকখানি দুর্বল হয়ে পড়ে।
swadeshroy@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.