সরকার জামায়াতকে নিয়ে নির্বাচন করার পায়তারা করছে by কাজী সুমন

কক্সবাজারের রামুর ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জড়িত দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, রামুর ঘটনায় সরকারি দলের লোক জড়িত বলেই তারা বিচারবিভাগীয় তদন্ত করেনি।

আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করলেও থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে এই ভয়ে তারা তদন্ত করেনি। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি করে তিনি বলেন, সরকার যদি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয় তাহলে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজ বিকালে রামুর খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য সংবিধান সংশোধন করেছে। ৯৬ সালে জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিল। এবার ক্ষমতায় থাকার জন্য তা বাতিল করে দিয়েছে। তখন তারা জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করার সময় কি যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি ভুলে ছিল?
খালেদা জিয়া বলেন, রামুর ঘটনায় পরবর্তী সময়ে সেখানে সরকারি দলের লোকজন সহানুভুতি দেখাতে গেলে ভিক্ষুরা তাদের তাড়া করেছে।  তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যদি সরকার ও আওয়ামী লীগ জড়িত না হবে, তাহলে হামলার পরপরই কেন প্রশাসন আসেনি, বিজিবি ও র‌্যাব আসেনি, সেনাবাহিনী আসেনি? মূলত: প্রশাসনকে সরকার আসতে দেয়নি। বিএনপি আগামীতে মতায় গেলে তথ্য-প্রমাণসহ বর্তমান সরকারের অন্যায়ের বিচার করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এ ঘটনার বিচার করবে। খালেদা জিয়া বলেন, আমরাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। তবে সেটা হতে হবে নিরপে ও আন্তর্জাতিক মানের। তিনি সংশয় প্রকাশ করে  বলেন, তারা  জামায়াতকে নিয়ে নির্বাচন করার পায়তারা করছে। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করারও আহবান জানান। রামু উপজেলা বিএনপি সভাপতি আহমদুল হকের সভাপতিত্বে সম্প্রীতি সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। আমরা মতায় আসলে মিথ্যা মামলা দেব না। তথ্য-প্রমাণসহ মামলা দিয়ে প্রচলিত আইনে বিচার করব। এজন্য আপনারা প্রস্তুত থাকুন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের আপনারা কারাগারে দিচ্ছেন। কিন্তু আপনি যে গান পাউডার দিয়ে, লগি-বৈঠার মাধ্যমে মানুষ হত্যার হুকুম দিয়েছেন- সেই রেকর্ডও আছে। তা থেকে আপনি কীভাবে রেহাই পাবেন? দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে অত্যন্ত খারাপ উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আওয়ামী লীগকে মতা থেকে চিরতরে বিদায় করতে হবে। এ জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সবার সমর্থন চান তিনি। বলেন, সরকার বিএনপিকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে। তাদের সেই চক্রান্ত কোন দিন সফল হবে না। কারণ এদেশের জনগণ বিএনপির সঙ্গে রয়েছে। জনগনই বিএনপির মূল শক্তি।
এর আগে বিকাল ৩টার আগে তিনি সেখানে এসে পৌঁছান। তিনি সেখানকার বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন। এর আগে চকরিয়া বাস স্ট্যান্ডে একটি পথসভায় ভাষণ দেন। এসময় বিরোধী নেতা রামুর বৌদ্ধ বিহারে হামলার জন্য ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনকে দায়ী করেন। বলেন, এর পেছনে জড়িত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। দলগুলোর নেতাকর্মীরাই রামুর ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। আপনাদের সব অপকর্মের রেকর্ড থাকছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এর বিচার করবে। অপরাধের শাস্তির জন্য তৈরি থাকুন। কেউ পার পাবেন না।

No comments

Powered by Blogger.