উদ্যোগটি সারা দেশেই ছড়িয়ে দেওয়া হোক- ফরমালিনমুক্ত বাজার

ফরমালিন আমদানির ওপর সরকার যে কড়াকড়ি আরোপ করেছে, জনগণ তথা ভোক্তারা তার সুফল পেতে পারে, যদি সেই নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হয়। সরকার বলেছে, ফরমালিন আমদানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ ছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে। একই সঙ্গে ফরমালিন আমদানি ও ব্যবহারের বিস্তারিত বিবরণও লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে।


আমাদের দেশে অনেক আইনেরই অবস্থা ‘কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই’। আশা করি, ফরমালিন আমদানি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সেটি হবে না।
ফরমালিন একধরনের পচনরোধক রাসায়নিক পদার্থ। এটি টেক্সটাইল, প্লাস্টিক, কাগজ, রং ও মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা লাভের আশায় খাদ্যপণ্যে ফরমালিন ব্যবহার করে থাকেন। প্রথমে মাছের পচন রোধে ফরমালিন ব্যবহার করা হলেও এখন তা ফলমূলসহ অনেক খাদ্যপণ্যেই ব্যবহূত হচ্ছে। সে কারণে মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে, ভুগছে নানা ব্যাধিতে।
এই অবস্থায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বিভিন্ন বাজারে খাদ্যপণ্য ফরমালিনমুক্ত করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। ইতিমধ্যে তারা ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি বাজারকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করেছে এবং সভা করে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সহায়তায় এসব বাজারের পণ্যে ফরমালিন আছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য যন্ত্র সরবরাহ করেছে। তবে এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগটি সমুদ্রে গোষ্পদের সমতুল্য, যেখানে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কয়েক শ কাঁচাবাজার আছে, সেখানে পাঁচ-ছয়টি বাজারকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা কিংবা পরীক্ষার যন্ত্র সরবরাহই যথেষ্ট নয়। আমরা আশা করব, অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে।
যেসব ব্যবসায়ী জেনেশুনে খাদ্যপণ্যে ফরমালিন মিশিয়ে মানুষকে বিষ খাওয়াচ্ছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে ফরমালিনযুক্ত পণ্য বিক্রি করতে না পারেন, সে ব্যাপারে সরকারের কঠোর তদারকির পাশাপাশি জনসচেতনতাও জরুরি।
এফবিসিসিআইয়ের এই ভালো উদ্যোগ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক। দেশের প্রতিটি বাজার হোক ফরমালিনমুক্ত। প্রতিটি খাদ্যপণ্য হোক বিষমুক্ত।

No comments

Powered by Blogger.