শিডিউল বিপর্যয়ের খড়্গ-বিমানের শেষ দুটি অভ্যন্তরীণ রুটেও ফ্লাইট বাতিল

আন্তর্জাতিক রুটের শিডিউল বিপর্যয় কাটাতে আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত সব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। উড়োজাহাজ সংকটের কারণে বছরখানেক ধরে বিমান কেবল ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু রেখেছিল। গতকাল বুধবার থেকে এই দুটি রুটের ফ্লাইটও সাময়িকভাবে বাতিল করা হলো।


বিমানের মহাব্যবস্থাপক খান মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শিডিউলসহ হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্ন রাখতেই বিমান চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে সচল অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত রাখছে। তিনি আরো বলেন, এটি একটি পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত। গত ৯ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনে হজ ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণার দিনই অভ্যন্তরীণ রুট দুটি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক অবাঞ্ছিত ঘটনাবলির কোনো সম্পর্ক নেই।
বিমান সূত্র জানায়, উড়োজাহাজ সংকট ও বিকল উড়োজাহাজের কারণে প্রায়ই বিমানের ফ্লাইট শিডিউলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটছে। এর জের ধরে গত রবিবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও গতকাল সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই দফায় যাত্রী বিক্ষোভ হয়। শাহ আমানত বিমানবন্দরে যাত্রীরা মিছিল ও ভাঙচুরও করেন।
সূত্রমতে, বিমানের মোট সাতটি অভ্যন্তরীণ রুটের মধ্যে পাঁচটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বেশ কিছুদিন আগেই। বিভিন্ন রুটের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংযোগ ফ্লাইট হিসেবে এত দিন সিলেট ও চট্টগ্রামে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট চললেও এখন তা-ও বন্ধ থাকবে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই ভাড়ায় আনা একটি বোয়িং-৭৪৭ উড়োজাহাজ গত ১২ সেপ্টেম্বর চলে যাওয়ায় বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটসূচি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। বাতিল করা হয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটের ডজনখানেক ফ্লাইট।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বোয়িং-৭৪৭ উড়োজাহাজটি দিয়ে কুয়ালালামপুর, জেদ্দা, রিয়াদ, মাসকাটসহ মধ্যপ্রাচ্যের রুটগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছিল বিমান। এরই মধ্যে বিমান গত ১৭ সেপ্টেম্বর চলতি বছরের হজ ফ্লাইট শুরু করে। ওই দিন প্রথম ফ্লাইটে ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে সৌদি আরবের পথে রওনা হয় বিমানের একটি বোয়িং-৭৭৭। হজযাত্রী পরিবহনে বিমান ভাড়ায় আনা একটি বোয়িং-৭৪৭, দুটি নিজস্ব বোয়িং-৭৭৭ এবং একটি ডিসি-১০ উড়োজাহাজ ব্যবহার করছে। ফলে উড়োজাহাজ সংকটে থাকা বিমানের ফ্লাইটসূচিতে সৃষ্টি হয়েছে বড় ধরনের বিপর্যয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বিমানের বিপণন ও বিক্রয় বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের আগে পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ২৭১ আসনের একটি বোয়িং-৭৬৭ উড়োজাহাজ ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিমান বহরে যুক্ত হবে। এটি চলে এলে আর কোনো সমস্যা হবে না।

No comments

Powered by Blogger.