বার্মা, না মিয়ানমার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামা আগামীকাল সোমবার মিয়ানমার সফরে আসবেন। তাঁর ঐতিহাসিক এ সফরে ছোট হলেও কার্যত 'গুরুতর' একটা সমস্যার মুখোমুখি হবেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটিকে 'বার্মা' বললেও কূটনীতির শিষ্টাচার মেনে ওবামা কী বলবেন, সেটাই আগ্রহের বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে।


সাম্প্রতিককালে মার্কিন প্রতিনিধিদের মিয়ানমার সফরে এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, ওবামাও নামের ব্যাপারটি পাশ কাটিয়ে যাবেন। ২৩ বছর আগে ১৯৮৯ সালে তৎকালীন জান্তা সরকার বার্মার নাম বদলে 'রিপাবলিক অব দি ইউনিয়ন অব মিয়ানমার' করে। এ ব্যাপারে তখন জনগণের মতামত নেওয়া হয়নি। দেশটির গণতন্ত্রপন্থীরা নামের এ পরিবর্তন মেনে নেয়নি। তারা এখনো তাদের মাতৃভূমিকে 'বার্মা' নামেই ডাকে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ব্রিটেন, কানাডা, নিউজিল্যান্ড এখনো সরকারিভাবে বার্মা নামটিই ব্যবহার করে। পাঁচ দশকের সেনা শাসনের ফলে বহির্বিশ্ব থেকে কার্যত একঘরে ছিল মিয়ানমার। তবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়ার পর পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ হতে শুরু করেছে দেশটির। এরই অংশ হিসেবে ৫৬ বছরের মধ্যে প্রথম মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারি ক্লিনটন গত ডিসেম্বরে মিয়ানমার সফর করেন। সে সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তিনি সরাসরি বার্মা বা মিয়ানমার না বলে 'এই দেশ' বলে বক্তব্য-বিবৃতি দেন। গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে থেইন সেইনের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি একই পন্থা অবলম্বন করেন।
গত বছরের মে মাসে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো সফররত মার্কিন প্রতিনিধি জোসেফ ইয়ুনকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ান্না মায়ুক দেশের নাম প্রসঙ্গে বলেন, "আপনারা হয়তো এটিকে একটি ছোট বিষয় হিসেবে দেখেন, তবে 'মিয়ানমার' ব্যবহার করার ব্যাপারটি আমাদের জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে জড়িত।" কিছুদিন আগে বিরোধীদলীয় নেতা অং সান সু চিকেও দেশের নাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকার সতর্ক করেছে। এ অবস্থায় ওবামা সফরকালে কী বলবেন, তা নিয়ে সাগ্রহে অপেক্ষা করছেন অনেকেই। সূত্র : এপি।

No comments

Powered by Blogger.