কোরবানির বর্জ্য অপসারণ শুরু ডিসিসির by মনোয়ারুল ইসলাম

শনিবার সকালে ঈদের জামাত শেষে পশু কোরবানির পর রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বর্জ্য অপসারণ শুরু করেছেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।

ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণের পরিচ্ছন্নতা টিমের গাড়িগুলো বর্জ্য নিয়ে ডিসিসির বিভিন্ন ডাম্পিং স্টেশনে ফেলা শুরু করেছে। এজন্য রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় ডিসিসির গাড়ি ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, ঈদের দিন সকাল ৭টা থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ঢাকা সিটি করপোরেশনের অভিযান শুরু হয়। সকাল থেকেই তারা কোরবানির সম্ভাব্য স্পটগুলোতে পলিথিন ও ব্লিচিং পাউডার বিনামূল্যে সরবরাহ করেছে। যেসব জায়গায় সম্ভব হয়নি, সেসব জায়গায় দুপুরের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ শুরু করা হবে বলে ডিসিসি সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণের জন্য  নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পাশাপাশি অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে স্বাস্থ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি।

এবিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী সুলতান উল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “আমি ঈদের দিনও পরিচ্ছন্নতা কাজের খোঁজখবর রাখছি। আমাদের পরিচ্ছন্নতা দল সকাল থেকেই কাজ শুরু করেছে। পরিবেশবান্ধব পলিব্যাগের মাধ্যমে বর্জ্য সংরক্ষণ করে অপসারণ করা হবে। এ জন্য ডিএসসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে ইতোমধ্যে পলিব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে।” 

তিনি বলেন, “আমরা আগে থেকেই প্রস্ত্তত ছিলাম। করপোরেশনের ৫৬টি ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নিয়মিত ৫ হাজার ১শ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পাশাপাশি অতিরিক্ত ২ হাজার কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৬শ ভ্যান সার্ভিসে আড়াই হাজার জনবল কাজ করছেন।”

তিনি আরও বলেন, “কোরবানির পরে স্যাভলনমিশ্রিত পানি ছিটানো হবে। মাতুয়াইলে সেনেটারি ল্যান্ডফিলে পরিবেশসম্মতভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য ৩টি এক্সকাভেটর, ৩টি বুলডোজার এবং দুটি টায়ার ডোজার সার্বক্ষণিক কাজ করবে।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা  বাংলানিউজকে বলেন, “ঈদের দিন সকাল থেকে  আমি নিজেও কাজে নেমেছি। এখন আমি মণিপুরী পাড়াতে। কোরবাণির বর্জ্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে।”

তিনি বলেন,  “৩৬ ওয়ার্ডের বর্জ্য অপসারণে আমাদের কাজ শনিবার সকাল থেকেই শুরু করেছি। নিয়মিত কর্মীর পাশাপাশি ১ হাজার ২শ অনিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে ঈদের দিন প্রায় সাড়ে ৭শ কর্মী সকাল থেকেই মাঠে আছেন।  সবকটি ওয়ার্ডে প্রায় একলাখ পলিব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের গাড়িগুলো পানিও ছিটাচ্ছে।”

ঢাকায় কত পশু জবাই হয়েছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ধারণা করছি, এবার রাজধানীতে প্রায় ৪ লাখ পশু জবাই হয়েছে। এসব পশু থেকে ২০ হাজার মেট্রিকটন বর্জ্য উৎপাদতি হবে। পশুর হাটসহ নগরীকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষে ডিসিসি ১০টি হাটের জন্য ৬টি পে-লোডার, ৫টি টায়ার ডোলার, ২৫টি ডাম্পার, ৪টি ট্রেইলর, ২টি প্রাইম মোভার ও ১০টি পানির গাড়ি সরবরাহ ব্যবস্থা করেছে।”

তিনি বলেন, “কোরবানির বর্জ্যের দুর্গন্ধ এবং রোগ-জীবানুর বিস্তার রোধে স্যাভলনমিশ্রিত পানি দিয়ে জবাই করা স্থানটি ধুয়ে ফেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুপুর  ১২টা পর থেকেই আমাদের ময়লাবাহী গাড়িগুলো ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা ফেলানো শুরু করছে। তবে পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে।”

জানা গেছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিসিসির পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসা, অগ্নিনির্বাপক বাহিনীও কাজ করবে। ঈদের দিন থেকে টানা ৩ দিন বর্জ্য অপসারণের কাজ চলবে। নগরবাসীকে যেখানে-সেখানে বর্জ্য না ফেলে পলিথিন ব্যাগের ভেতরে রাখার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

No comments

Powered by Blogger.