কুমিল্লা রেলস্টেশন সড়ক খানাখন্দে ভরা, ভোগান্তি by গাজীউল হক

দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা রেলস্টেশন সড়কটির কোনো সংস্কার হচ্ছে না। নগরের গুরুত্বপূর্ণ ওই ৭০০ মিটার সড়ক সংস্কার না হওয়ায় প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ ছোট সড়কটি খানাখন্দে ভরা। এ সড়ক দিয়েই প্রতিদিন রেলস্টেশনের যাত্রী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী, বিআরটিসির বাস চলাচল ও মোটরযানের মালামাল পার হচ্ছে।


সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কুমিল্লা জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে রশি টানাটানির কারণে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কোনো সংস্কার হয়নি।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা মহানগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মপুর পূর্ব চৌমুহনী থেকে শাসনগাছা পর্যন্ত সড়কটি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন। অতিবর্ষণ ও নালা না থাকার কারণে সড়কে পানি জমে দিনের পর দিন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় জেলা পরিষদ ২০১১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এডিবির ৬১ লাখ ১০ হাজার টাকার বিশেষ বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি লেখে। স্থানীয় সরকার বিভাগ জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে সড়কটি মেরামত ও সংস্কার করার কথা জানিয়ে চিঠি দেয়। এরপর আর ওই সড়ক নিয়ে কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। সড়কের মালিক জেলা পরিষদ হওয়ায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এ ব্যাপারে কোনো ধরনের ভূমিকা নেয়নি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মো. নূরুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, চলতি বছরের মে মাসে মিউনিসিপ্যাল সার্ভিসেস প্রজেক্ট (এমএসপি)-২-এর কার্যক্রম পরিদর্শন করতে ওই সংস্থার কর্মকর্তা জন মিলার কুমিল্লায় আসেন। তিনি সিটি করপোরেশনের সব সড়ক ঘুরে এসে সবার আগে রেলস্টেশন সড়কটি ওই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার কথা উল্লেখ করেন। এরই আলোকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ওই সড়ক সংস্কারের জন্য ৬৫ লাখ ৪১ হাজার ২৯৩ টাকার প্রকল্প ব্যয় ধরে। গত ১৯ জুন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুর রহমান এমএসপি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চিঠি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এখন সড়কটির কাজ করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুমিল্লা রেলস্টেশনে প্রবেশমুখে পশ্চিম বাগিচাগাঁও সবুজ রেস্টহাউসের সামনের অংশে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। রেলস্টেশনের প্রবেশমুখ থেকে উত্তর ও দক্ষিণে প্রায় ২০টি বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই গর্তগুলোতে প্রায় সারা বছরই পানি জমে থাকে। ৭০০ মিটার সড়কের মধ্যে রয়েছে শত শত খানাখন্দ।
জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী আ স ম মোসলেম বলেন, মন্ত্রণালয় জেলা পরিষদকে নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক উন্নয়ন করতে বলেছে। জেলা পরিষদে তহবিল না থাকায় সেটি হচ্ছে না। তাই সিটি করপোরেশন সড়কের উন্নয়নকাজ করছে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আহমেদ শোয়েব বলেন, জেলা পরিষদের সড়ক হওয়ায় সিটি করপোরেশন এত দিন কাজ করেনি। তবে চলতি অর্থবছরেই সিটি করপোরেশন ওই সড়ক মেরামত করে জনগণকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেবে।

No comments

Powered by Blogger.