আরও হামলার আশঙ্কা- দুই দেশ থেকে দূতাবাস কর্মী সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

হামলার আশঙ্কায় সুদান ও তিউনিসিয়ায় মার্কিন দূতাবাস থেকে অপরিহার্য নয়—এমন কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নাগরিকদের আপাতত দেশ দুটিতে না যেতেও সতর্ক করা হয়েছে। এদিকে ইসলামবিরোধী চলচ্চিত্র ইনোসেন্স অব মুসলিমস-এর প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে মুসলিম বিশ্বে শুরু হওয়া বিক্ষোভের মাত্রা কমে এসেছে।


মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে গতকাল রোববার দেওয়া এক নির্দেশনায় সুদান ও তিউনিসিয়ায় মার্কিন দূতাবাস থেকে অপরিহার্য নয়—এমন কর্মীদের দেশ দুটি ছাড়তে বলা হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তায় দেশটিতে মার্কিন সেনা পাঠাতে ওয়াশিংটনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে সুদান। বিক্ষুব্ধ মানুষ শুক্রবার খার্তুমে মার্কিন দূতাবাসে হামলা করায় বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ওই সেনা পাঠাতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, মিসর ও ইয়েমেনের সরকার ইতিমধ্যে মেনে নিলেও উভয়ের পার্লামেন্ট মার্কিন সেনা উপস্থিতি নাকচ করে দিয়েছে। ইয়েমেনের পার্লামেন্ট গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, ইয়েমেনে মার্কিন বা বিদেশি সেনার উপস্থিতি ‘অগ্রহণযোগ্য’। দেশটি থেকে মার্কিন মেরিন সেনা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়। বিরোধী দল হক পার্টির নেতা আহমেদ আল বাহরি বলেন, অল্পসংখ্যক মার্কিন সেনার উপস্থিতিও ইয়েমেনকে নরকের পথে ঠেলে দিতে এবং সন্ত্রাসবাদীদের হাতে অজুহাত তুলে দিতে পারে।
মিসরের প্রধানমন্ত্রী হিশাম কান্দিল বলেছেন, কায়রোতে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ অর্থ পেয়ে মার্কিন দূতাবাসে হামলা ও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে থাকতে পারে। লিবিয়ার জাতীয় পরিষদের প্রধান মোহাম্মদ আল মাগরিয়েফ অভিযোগ করেছেন, গত মঙ্গলবার বেনগাজিতে মার্কিন কূটনৈতিক মিশনে হামলায় বিদেশিদের হাত থাকতে পারে। তিনি বলেছেন, ওই ঘটনার ব্যাপারে এ পর্যন্ত ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গতকাল কয়েক শ মানুষ মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভ করেছে। তারা দেশটি থেকে মার্কিন দূতাবাস প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। বিক্ষোভকারীরা মার্কিন পতাকাও পুড়িয়ে দেয়।
লিবিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত হত্যা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়েদার উপপ্রধানকে হত্যার প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করেছে আল-কায়েদা। সংগঠনটির আরব উপদ্বীপ শাখা (একিউএপি) মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় মার্কিন দূতাবাসগুলোতে আরও হামলার হুমকি দিয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের মুসলমানদেরও মার্কিন স্বার্থের ওপর হামলার আহ্বান জানিয়েছে। বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের অনলাইন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এসআইটিই ইনটেলিজেন্স গ্রুপ এ কথা জানিয়েছে। লিবিয়ায় মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালিয়ে রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফার স্টিভেন্সকে হত্যার দায় সরাসরি স্বীকার করেনি একিউএপি। তবে তারা একে আল কায়েদার উপপ্রধান শেখ আবু ইয়াহিয়া আল লিব্বিকে হত্যার প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করেছে। গত জুনে পাকিস্তানে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন লিব্বি।
যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত চলচ্চিত্র ইনোসেন্স অব মুসলিমস-এ ইসলামের মহানবীকে (সা.) অবমাননা করার প্রতিবাদে কয়েকটি দেশে বিক্ষুব্ধ মানুষ মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালায়। এ পর্যন্ত বিক্ষোভ-সহিংসতায় অন্তত সাতজন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া প্রথম বড় সহিংস ঘটনায় মঙ্গলবার এক ‘প্রতিশোধমূলক’ হামলায় লিবিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও তিনজন দূতাবাসকর্মী নিহত হন। এএফপি, সিএনএন, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.