অসহায় দামিনী হাসপাতালে-জীবন চলছে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে

রিকশাচালক বাবার 'অসহায়' মেয়ে দামিনীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এক মাসের শিশুটিকে গত রবিবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে তাকে। রক্তস্বল্পতা ছাড়াও নানা সংক্রমণে ভুগছে সে।


বাবলু জাতভ ও শান্তি দেবীর ঘরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয় দামিনী। তাদের বাড়ি ভারতের রাজস্থান রাজ্যের ভরতপুরে। দামিনীর জন্মের পাঁচ দিনের মাথায় শান্তি মারা যান। বাড়িতে মেয়েকে দেখভালের মতো কেউ না থাকায় বাধ্য হয়ে তাকে নিয়েই রাস্তায় নামেন বাবলু। কাপড়ে পেঁচানো দামিনীকে বাঁ হাতে বুকের সঙ্গে আগলে রেখে ডান হাতে রিকশার হাতল সামলান তিনি। কিন্তু টানা রোদ-বৃষ্টি সহ্য করতে পারেনি ছোট্ট মেয়েটি। কয়েক দিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। বাবা-মেয়ের এই অসহায়ত্ব তুলে ধরে গত বৃহস্পতিবার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসি হিন্দি সার্ভিস। এরপর বিষয়টি সবার নজরে আসে।
অসুস্থ দামিনীকে রাজস্থানের জয়পুরের ফোরটিস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের কর্মকর্তা জিপি শুক্লা বিবিসিকে বলেন, 'ভরতপুর ও জয়পুরের সব চিকিৎসকের সঙ্গে আমরা পরামর্শ করেছি। এরপর দামিনীকে জয়পুরের হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।' ওই হাসপাতালের চিকিৎসক জয়কৃষাণ মিত্তাল জানান, 'নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুটিকে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। অবস্থা সংকটজনক। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটেছে। তা ছাড়া রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা ও ওজনস্বল্পতায় ভুগছে সে।'
বাবলু জাতভ বলেন, 'আমার মেয়েকে সুস্থ করতে সবাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আশা করি আমার মেয়ে দ্রুতই সেরে উঠবে।' বাবলু ও দামিনীর বিষয়ে খবর প্রকাশের পর অনেকে তাদের সাহায্যের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। স্থানীয় একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান দামিনীর দায়িত্ব নিতে আগ্রহী। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক রিকশা কেনার জন্য ইতিমধ্যে বাবলুকে ১০ হাজার রুপি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এক ভারতীয় নাগরিকও এক লাখ রুপি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। সূত্র : এনডিটিভি।

No comments

Powered by Blogger.