সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ছে লেবাননে-অন্তত চারজনের মৃত্যু

বোমা হামলায় শীর্ষস্থানীয় এক সুন্নি কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেবাননের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত রবিবার থেকে বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। সশস্ত্র বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গতকাল সোমবার নাগাদ অন্তত চারজন মারা গেছে।


পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। তারা যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অঙ্গীকার করেছে।
গত শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে শক্তিশালী গাড়িবোমা বিস্ফোরণে আটজন মারা যায়। ২০০৫ সালের পর এ ঘটনাকে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দাপ্রধান উইসসামও (৪৭) ছিলেন। সুন্নিপন্থী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঘনিষ্ঠ এবং সিরিয়ার কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। সুন্নিপন্থী বিরোধী দলের রাজনীতিকরা এ হামলার জন্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে দায়ী করেন এবং লেবানন সরকারের পতন দাবি করেন। লেবাননের শিয়াপন্থী দল হিজবুল্লাহ নেতৃত্বাধীন সরকার আসাদ সরকারকে সমর্থন করছে।
গত রবিবার উইসসামকে সমাহিত করা হয়। তাঁর লাশ দাফনের আগেই কয়েক শ বিক্ষোভকারী পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলে। তারা প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। রবিবার দিবাগত রাতে লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ত্রিপোলি, বৈরুত ও দক্ষিণাঞ্চলীয় সিদন শহরে ব্যাপক সহিংসতা হয়। সুন্নি ও শিয়াপন্থী অস্ত্রধারীদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। সুন্নিপ্রধান ত্রিপোলিতে রাতভর সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও ২৬ জন আহত হয়। গতকাল সকালে আরো একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। বৈরুতে সুন্নিপ্রধান তারিক জাদিদেহ এলাকায় সেনা অভিযানে ছয়জন আহত হয়। এলাকাটির বিভিন্ন স্থান থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও ট্যাংক বিধ্বংসী রকেট থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। সেনারা সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফারদের ঘটনাস্থলে যেতে বাধা দেন।
গতকাল লেবাননের সেনাবাহিনীর তরফ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অক্ষুণ্ন রাখার ব্যাপারে সেনাবাহিনী বদ্ধপরিকর।' এদিকে গত শুক্রবারের হামলার তদন্তে লেবাননকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড বলেন, 'লেবাননের স্থিতিশীলতা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর। হিলারি সংকটময় পরিস্থিতিতে লেবাননের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার ব্যাপারেও তিনি সাহায্যের অঙ্গীকার করেছেন।' সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.