কুকুর লেলিয়ে হিমাদ্রি হত্যা- অভিযোগপত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যে by প্রণব বল

এ লেভেলের শিক্ষার্থী হিমাদ্রি মজুমদার হত্যা মামলার অভিযোগপত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যে দেওয়া হতে পারে। ইতিমধ্যে মামলাটির প্রধান দুই আসামি শাহ সেলিম ওরফে টিপু ও তাঁর ছেলে জুনায়েদ আহমেদ ওরফে রিয়াদ হাইকোর্টে স্বশরীরে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন। যদিও সাড়ে তিন মাস ধরে তাঁদের হন্যে হয়ে খোঁজা হচ্ছে বলে পুলিশের দাবি।


কুকুর লেলিয়ে দিয়ে হিমাদ্রিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা জামিন নিয়ে সাক্ষীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এমন অভিযোগ করে হিমাদ্রি হত্যা মামলার দুই সাক্ষী নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এই মামলার গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামি শাহদাত হোসেনও রিমান্ডে তেমন কোনো তথ্য দেয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এসব কারণে চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি ঝিমিয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা হিমাদ্রির স্বজনদের।
এ প্রসঙ্গে পাঁচলাইশের সামাজিক সংগঠন শিকড়ের (হিমাদ্রি এই সংগঠনের সদস্য ছিলেন) সাধারণ সম্পাদক জাওইদ আলী চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস হয়ে গেলেও পুলিশ মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অথচ তাঁরা হাইকোর্টে স্বশরীরে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন। এ ছাড়া সাক্ষীদের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় মামলাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’
একই ভাবে উদ্বিগ্ন হিমাদ্রির পরিবারও। হিমাদ্রির বাবা প্রবীর মজুমদার বলেন, ‘আমার ছেলে গেছে, আমি বুঝি ব্যথাটা কোথায়? সেটা আমাদের প্রশাসন কীভাবে বুঝবে? এখন শেষ পর্যন্ত মামলাটির কী হয় তা নিয়েই আমাদের শঙ্কা।’
এদিকে, দুই আসামি জামিন নেওয়ার পর পুলিশ এখন মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দিতে তৎপর হয়েছে। আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এই প্রতিবেদন দাখিল হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হিমাদ্রি হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘যেহেতু দুই আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন এবং অপর এক আসামিকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাই এখন চার্জশিট দিয়ে দেওয়া যায়। আশা করি, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তা দিয়ে দেব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসামি শাহদাত আমাদের তেমন কিছুই বলেনি। কিন্তু সে সব জানে। তার পরও আমরা সবকিছু মিলিয়ে ভালো করে একটি চার্জশিট দেব।’
উল্লেখ্য, হিমাদ্রি মারা যাওয়ার সপ্তাহ খানেক পর গত ১ জুন শাহদাত হোসেনকে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন জুনায়েদের বন্ধু শাওন ও মাহবুব আলী ওরফে ড্যানি।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল সামারফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের এ লেভেলের শিক্ষার্থী হিমাদ্রিকে নগরের পাঁচলাইশলের শাহ সেলিম ওরফে টিপুর ভবনের ছাদে তুলে কুকুর লেলিয়ে ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। আহত অবস্থায় ২৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২৩ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনার পরপর হিমাদ্রির বাবা পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। হিমাদ্রি মারা যাওয়ার পর তাঁর মামা অসিত দাশ বাদী হয়ে একই থানায় শাহ সেলিম, জুনায়েদসহ পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

No comments

Powered by Blogger.