আন্দরকিল্লা-লালদীঘি- সড়ক সম্প্রসারণ কার জন্য? by মেখ্যাইউ মারমা

যানজট নিরসন ও দুই পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচলের জন্য নগরের আন্দরকিল্লা থেকে লালদীঘির মোড় পর্যন্ত সড়কটি সম্প্রসারণ করা হয়। কিন্তু সড়ক সম্প্রসারণের পরও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। যানজটের ভোগান্তি আগের মতোই রয়েছে। কারণ সম্প্রসারিত অংশ ব্যবহার হচ্ছে গাড়ি পার্কিং ও ভ্রাম্যমাণ হকারদের ভ্যান রাখার কাজে।


এই সড়কের এক পাশে রয়েছে পোশাকের পাইকারি বাজার টেরিবাজার এবং অপরদিকে রয়েছে ওষুধের পাইকারি বাজার হাজারীগলি। দুটি বাজারকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক চলাচল করেন। এ ছাড়া এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে নগরের নিউমার্কেট মোড় থেকে ছেড়ে আসা বহদ্দারহাটগামী ১ নম্বর ও ২ নম্বর রুটের সিটি বাস সার্ভিস। কোতোয়ালি মোড় থেকে ছেড়ে আসা টেম্পো চলাচলের একমাত্র পথও এটি। কিন্তু সম্প্রসারিত সড়কের দুই পাশজুড়েই দাঁড়িয়ে থাকে প্রাইভেট গাড়ি। সড়কের ওপর বসে ফলমূল, পোশাক ও গৃহস্থালি জিনিসপত্রের দোকান।
আন্দরকিল্লা মোড়ের ন্যাশনাল বুকস অ্যান্ড স্টেশনারির বিক্রয়কর্মী অভিজিত দাশ প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের দুই পাশেই ফুটপাত ঘেঁষে রাখা হয় প্রাইভেট গাড়ি ও ভ্রাম্যমাণ হকারদের ভ্যান। হকাররা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বেচাকেনা করে। ফলে এই রাস্তায় সারাক্ষণ যানজট লেগে থাকে। এমন অবস্থা হয় পথচারীরা দোকানের ভেতর দিয়ে চলাচল করেন।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশেই সারি করে রাখা হয়েছে প্রাইভেট কার, ফলমূল, পোশাক ও গৃহস্থালিপণ্য বিক্রির ভ্যান। ফুটপাতও দখল করে আছে হকাররা। সড়কের ওপরে রাখা একটি গাড়িরচালক মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘মালিক পাশের মার্কেট টেরিবাজারে থেকে বাজার করতে গেছেন। এখানে গাড়ি রাখতে বলায় রেখেছি। তিনি এলেই চলে যাব।’ জানা যায়, অনেকে সড়কের ওপর গাড়ি রেখে টেরিবাজারে কেনাকাটাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাজ সারেন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) সূত্র জানায়, ২০১১ সালের আগস্টে আন্দরকিল্লা থেকে লালদীঘি পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের এপ্রিলে কাজ শেষ হয়। এতে ব্যয় হয় পাঁচ কোটি টাকা। সড়কটি ৬০ ফুট প্রশস্ত করা হয়। সড়ক সম্প্রসারণ করেও যানজট নিরসন না হওয়ায় অনেকটা হতাশ চউকও।
সড়ক প্রকল্প পরিচালক চউকের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কটি সম্প্রসারণ করেও নগরবাসীর উপকারে না আসায় আমরা হতাশ। যানজটের সমস্যা নির্মূলের জন্যই এই সড়কটি সম্প্রসারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই একই চিত্র এখনো আমরা প্রতিদিন দেখি। বাজার করতে আসা অনেকেই এখানে গাড়ি রেখে চলে যান।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ উত্তরের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সবসময় যানজট লেগে থাকে এই অভিযোগ সত্য নয়। সড়ক সম্প্রসারণ করে নাগরিকেরা উপকৃত হয়েছেন।
কিন্তু এটাও ঠিক সুযোগ পেলেই লোকজন গাড়ি রাখে এবং ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট বসে। ট্রাফিক পুলিশ সবসময় তা নিরসনের কাজ করে আসছে। যখনই কোনো যান কিংবা ভ্রাম্যমাণ জিনিসপত্রের ভ্যানগাড়ি এসে সড়কের পাশে অবস্থান করে তখনই ট্রাফিক পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। এটা অনেকটা ইঁদুর-বিড়াল দৌড়ের মতো অবস্থা।

No comments

Powered by Blogger.