রমজানের দ্বিতীয় জুমায় মসজিদে মসজিদে উপচেপড়া ভিড় - রমজানুল মোবারক

শুক্রবার ছিল রমজান মাসের দ্বিতীয় জুমা। প্রথম জুমার ন্যায় রমজানের দ্বিতীয় জুমায়ও মসজিদে মসজিদে ছিল মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়। ঢাকা শহরের প্রায় প্রতিটি মসজিদেই মুসল্লিদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জুমার নামাজের আজানের আগ থেকেই মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি শুরু হয়।


নামাজের আগেই তা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। ভেতরে জায়গা না পেয়ে মসজিদের ছাদ, খোলা জায়গা, খেলার মাঠ ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। জুমার নামাজে রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে খুৎবা পাঠ করেন খতিবরা। এছাড়া নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং আল্লাহ্র দরবারে গুনাহ থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
জুমার নামাজ মুসল্লিদের কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করে। আর তা যদি হয় রমজান মাসের জুমার নামাজ তাহলে এর তাৎপর্য বহুগুণ বেড়ে যায়। রমজান মাসে জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত বেশি হওয়ায় মুসল্লিরা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করেন এই নামাজ। এজন্য জুমার নামাজে রোজাদাররা আল্লাহর বিশেষ আনুকুল্য পাওয়ার জন্য মসজিদে ভিড় করে। শুক্রবার দেশের অধিকাংশ মসজিদে এর ব্যতিক্রম হয়নি। ঢাকার বাইরে অন্যান্য মহানগর ও বড় শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদগুলোতেও মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
জুমার নামাজের সময় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ছিল মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। আজানের আগে থেকে মসুল্লিরা বায়তুল মোকাররমে ভিড় করতে থাকে। একপর্যায়ে মসজিদের গ-ি ছাড়িয়ে রাস্তায় চলে যায় জামাত। দক্ষিণ গেটে মুসল্লিদের জামাত বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর গেটে পল্টনজুড়ে ছিল জামাত। জাতীয় মসজিদের খতিব অধ্যাপক মওলানা সালাহউদ্দিন তার বয়ানে মাহে রমজানের ফজিলত ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। হাদিস উদ্ধৃত করে রমজানে ধৈর্য ও সহানুভূতির শিক্ষা গ্রহণ করতে তিনি মুসল্লিদের আহ্বান জানান।
এদিকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ছাড়াও ঢাকার অন্যান্য মসজিদে একই ধরনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মিরপুরের একাধিক মসজিদে একই ধরনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় ঠেলে তা মূল রাস্তায় চলে আসে। শেওড়াপাড়া মসজিদের সামনের রাস্তায় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছিল জামাত। খুবৎবায় রমজানের বিশেষ গুরুত্ব তুলে ধরে বয়ান করেন খতিবরা। এছাড়া নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।
এদিকে শুক্রবার ছিল ১৪ রমজান। শ্রাবণ মাসের ১৯ তারিখ। দিন যত যাচ্ছে শ্রাবণ যেন তার রূপ পরিবর্তন করছে। আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব মতে শ্রাবণে স্বাভাবিকের চেয়ে এখন পর্যন্ত অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুক্রবারও পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে প্রকৃতিতে চলছে এখন শ্রাবণ মাস। শ্রাবণে আকাশে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ানোর কথা থাকলে শুক্রবার সারাদিন ছিল প্রচ- রোদ আর ভ্যাপসা গরম। রোজাদারদের জন্য হাঁসফাঁস অবস্থা। একটু স্বস্তির আশায় রোজাদাররা খুঁজেছে ছায়াশীতল পরিবেশ।
এদিকে শুক্রবার সরকারী ছুটির দিন হলেও ঢাকার রাস্তাঘাটের পরিবেশ ছিল একটু অন্যরকম। সরকারী ছুটির দিনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। এজন্য ঢাকার মার্কেটগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। ঢাকার রাস্তাঘাটের প্রচুর জ্যাম লক্ষ্য করা গেছে। নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটসহ আশে পাশের মার্কেটগুলোতে পা ফেলার জায়গা ছিল না। সকাল থেকে শুরু করে রাত অবধি চলছে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। সন্ধ্যায় ইফতারের সময় মার্কেটে বসেই ইফতারি সারতে দেখা গেছে। ইফতারের সময় মার্কেটগুলোতে ছিল অন্যরকম পরিবেশ। ক্ষণিকের জন্য থেমে ছিল সব বিকিকিনি। ইফতারের পরই আবার শুরু হয় ঈদ কেনাকাটা।

No comments

Powered by Blogger.