গণিত উৎসব-গণিত শিখতে স্বতঃস্ফূর্ত প্রত্যয়

কেন বীজগণিত, পাটিগণিত আলাদা নাম দেওয়া হয়? কাকতাড়ুয়া কি ভয়তাড়ুয়া? কি-বোর্ডের কিগুলো সাজানো না থেকে এলোমেলো থাকে কেন? প্লুটো গ্রহ নয় কেন?’ এ রকম মজার প্রশ্ন আর উত্তরে গতকাল বুধবার প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের নোয়াখালীর আঞ্চলিক পর্ব। গণিতকে জানার প্রত্যয় নিয়ে পৌষের শীত উপেক্ষা করে নোয়াখালী জিলা স্কুলের মাঠের সবুজ ঘাস মাড়িয়ে দূরদূরান্ত থেকে উপস্থিত হয় নানা বয়সের হাজারো শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে আসেন শিক্ষক, অভিভাবক ও স্বজনেরা।


‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান নিয়ে নোয়াখালী ছাড়াও ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ১০৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৪৯ জন শিক্ষার্থী উৎসবে অংশ নেয়। এতে ৫৩ জন শিক্ষার্থী বিজয়ী হয়। বিজয়ীরা ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় জাতীয় গণিত উৎসবে যোগ দেবে।
দিনব্যাপী আয়োজিত উৎসবের মধ্যে ছিল উদ্বোধনী পর্ব, মূল আয়োজন গণিত অলিম্পিয়াড, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রশ্নোত্তর পর্ব, রুবি স্কিউব প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে নোয়াখালী জিলা স্কুলের মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ পর্বে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভেন্যু-স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির পতাকা উত্তোলন করেন প্রবীণ গণিতবিদ খোদাদাদ খান এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। এরপর ভেন্যু-স্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎসবের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের আয়োজনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে গণিতভীতি দূর করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আজকের উপস্থিতিই প্রমাণ করে, শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এ নিয়ে বিপুল উৎসাহ রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরই শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধভাবে যে যার হলরুমে আসন গ্রহণ করে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সোয়া এক ঘণ্টার গণিত অলিম্পিয়াড। এরপর বন্ধুসভার বন্ধুদের পাশাপাশি ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রসংগীত, পল্লিগীতি, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন করে।
এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। মুনির হাসানের সঞ্চালনায় এই পর্বে গণিতবিদ খোদাদাদ খান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হাম্মাম আলী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন প্রমুখ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মজার প্রশ্নের উত্তর দেন।
দুপুর দুইটায় সমাপনী পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আল-হেলাল মোশারফ। এই পর্বের শুরুতে শিক্ষার্থীরা দুই হাত উঁচু করে মাদক, মিথ্যা ও মুখস্থকে ‘না’ বলে।
সমাপনী পর্বে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে খোদাদাদ খান বলেন, ‘তোমরা সুন্দর মনের অধিকারী হও। গণিত তোমাদের সেই প্রত্যাশার জায়গায় নিয়ে যাবে।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আল-হেলাল মোশারফ, ভেন্যু-স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া ও প্রথম আলোর নোয়াখালী প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান।

No comments

Powered by Blogger.