ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রেমিট্যান্স-রিজার্ভ নিয়ে শঙ্কা কমছে

ডিসেম্বরের মতো চলতি মাসেও ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে রেমিট্যান্স। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৫ কোটি ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন। ডিসেম্বরে এসেছে ১১৪ কোটি ডলার। আগের যে কোনো মাসের তুলনায় যা বেশি। চলতি মাসে যেহেতু পাঁচটি সপ্তাহ আছে তাই রেমিট্যান্স ডিসেম্বরকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ মাসে ১২০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।


এছাড়া নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে রফতানিতে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, আমদানির চাপ কিছুটা কমাসহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে। বাংলাদেশের সিংহভাগ আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে হয় ডলারে। আমদানিকারককে টাকার বিনিময়ে ডলার কিনে বিদেশি বিক্রেতাকে অর্থ পরিশোধ করতে হয়। শুধুমাত্র টাকার দরপতনের কারণে একজন আমদানিকারককে এক বছরের ব্যবধানে ১৬ ভাগ বেশি অর্থ গুনতে হয়েছে। এর প্রভাবে আমদানি পণ্যের দর বেড়ে গেছে যা সামগ্রিক মুল্যস্ফীতি পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। অন্যদিকে টাকার দরপতনে রফতানিকারকদের উপকারভোগী হওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশের বড় রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্য তৈরিতে কাঁচামাল আমদানির অংশ অর্ধেকেরও বেশি। একারণে তুলনামূলক বিচারে ডলারের দর বৃদ্ধিতে রপ্তানিকারকদের তেমন সুবিধা হয়না। তবে টাকার দরপতনে রেমিটেন্স উৎসাহিত হয়। কেননা গ্রাহকরা এতে আগের তুলনায় হাতে বেশি টাকা পেয়ে থাকেন।
টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হতে থাকলে প্রবাসীরা বেশি অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। কেননা টাকার মান কমতে থাকলে প্রবাসে অবস্থানরতরা তখন সেখানে অর্থ না রেখে বেশি লাভের আশায় তা দেশে পাঠিয়ে দেন। তাই সাম্প্রতিক সময়ে যেহেতু প্রতিদিনই টাকা মান হারাচ্ছে তাই আগামীতেও রেমিট্যান্স বাড়তে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বড় বড় ঋণপত্রের বিপরীতে ইতিমধ্যেই বেশির ভাগ পাওনা পরিশোধ হয়ে গেছে। গত বছর মেশিনারিজ, শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়েছে অনেক বেশি। সামনে শুধু জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের কিছু পাওনা পরিশোধ থাকবে। তাই রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বেগ পেতে হবে না। তারা জানান, সম্প্রতি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) প্রায় ৭৫ কোটি (৭৫০ মিলিয়ন) ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ করায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। তবে বৈদেশিক মুদ্রা আসার সাম্প্রতিক ধারা দেখে মনে হচ্ছে শিগগির তা আগের অবস্থায় যাবে। চাহিদা অনুপাতে সরবরাহ বাড়তে থাকলে টাকার বিপরীতে ডলারের দর বৃদ্ধির প্রবণতাও কমবে বলে তারা জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.