পদ্মা সেতু নিয়ে অর্থমন্ত্রী-মন্ত্রী-সচিব বদল আমলে নেয়নি বিশ্বব্যাংক

দ্মা সেতুর অর্থায়ন বিষয়টি এখনো আশাবাদের মধ্যে রয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের কাছে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে একটি সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা বাংলাদেশের পক্ষে যাবে। বিশ্বব্যাংক সূত্র থেকেও আশাবাদের কথা বলা হয়েছে। কারণ, পদ্মা সেতু নিয়ে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের কোনো সুরাহা এখনো হয়নি। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ আছে।


বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যালেইন গোল্ডস্টেইনের সঙ্গে গতকাল সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকটি দুপুরে অনুষ্ঠিত হলেও অর্থমন্ত্রী কথা বলেন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির দুটি আলাদা বৈঠকের পর। অর্থমন্ত্রী বলেন, বড়দিনের ছুটিতে থেকে অনেক দিন পর অ্যালেইন দেশে ফিরলেন। এরই মধ্যে কতগুলো বিষয় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যেমন ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন অর্থাৎ মন্ত্রী-সচিবের বদল হয়েছে। কিন্তু এগুলো তাঁরা এখনো বিবেচনায় নেননি।
গতকাল অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে জানান, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি তদন্ত করছে, যা শেষ পর্যায়ে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই দুদক বিশ্বব্যাংক ও তাঁর কাছে প্রতিবেদনটি পাঠাবে বলে তিনি আশা করছেন।
পদ্মা সেতুর জন্য পাঁচটি দলকে নির্বাচন করার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকও এদের অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ তারা বন্ধ করে দিল। আমরা চাই, যেখান থেকে বন্ধ হয়েছে, সেখান থেকেই শুরু হোক।’
চলতি শীত মৌসুম থেকে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে না বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ক্ষতিটা যেটা হয়ে গেল, এই শীত মৌসুমে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।’ পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে কতটুকু আশাবাদী—এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী। খানিকটা এড়িয়ে তিনি বলেন, যেহেতু বড় প্রকল্প, আর আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটিও বহুবার আটকা পড়েছিল। পরে তারা অর্থায়ন করেছে।
বিশ্বব্যাংক কি তাহলে দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহার করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তা বলতে পারি না। তারা দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল, আমরা তা গ্রহণ করিনি। তার পরও দুদককে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই তাদের কাছে পাঠাব। তবে আমরা মনে করি না, এ ব্যাপারে সরকারের দিক থেকে কোনো অন্যায় হয়েছে।’
২০০৯ সালের পর বিশ্বব্যাংক অনেক প্রকল্পেই অর্থায়ন আটকে রেখেছে উল্লেখ করে একটি দৈনিকে ছাপানো প্রতিবেদন ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটিও বর্তমান সরকার আমলের নয়। এগুলো খালেদা জিয়া ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের।’ অতীতের দুর্নীতির মূল্য বর্তমান সরকারকে দিতে হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.