নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবার সংসদে যাচ্ছে বিএনপি



স্টাফ রিপোর্টার: নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে যেতে পারে প্রধান   পৃষ্ঠা ৮ কলাম ৪
বিরোধী দল বিএনপি। এছাড়া সরকারবিরোধী আন্দোলনে হরতালের মতো ধংসাত্মক কর্মসূচি না দেয়ার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করছে দলটির নীতিনির্ধারণী মহল। দলের প্রচার সেক্রেটারি ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ
জয়নুল আবদিন ফারুক গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ প্রসঙ্গে এমন আভাস দেন। তিনি বলেন, ‘এবার বিএনপির সংসদে যাওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। তবে এ ব্যাপারে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক তার দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।’ আগামী ২৫শে জানুয়ারি সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বসছে। প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান ওইদিন উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রোড মার্চ কর্মসূচির প্রতি জনসাধারণের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার বিষয়ে সাংবাদিকরা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ প্রসঙ্গে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমি দলীয় ফোরমেও আলোচনা করেছি। বলেছি, এভাবে হরতাল দিয়ে লাভ নেই। পুলিশের বাধার মুখে একজন মহাসচিব অফিসের ফুটপাতে অবরুদ্ধ হয়ে বসে থাকবেন- এটা খুবই অশোভনীয়। এর চেয়ে সংসদে গিয়ে আমাদের প্রতিবাদ জানানো উচিত। তাতে দেশবাসী দেখবে-শুনবে বিবেক দিয়ে বিবেচনা করবে। রোড মার্চের সাফল্যের পর সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে দলের নেতাদের মনোভাব ক্রমশ জোরালো হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আগামী অধিবেশনেই বিএনপি সংসদে যাবে।’ হরতাল ঘোষণার পর কিছু নেতার মাঠে না থাকার সমালোচনা করেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ। তিনি বলেন, হরতাল দিলে অবশ্যই আমার জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় বের হতে হবে আমাকে।  পুলিশ যেখানে বাধা দেবে সেখানে প্রয়োজনে বসে থাকতে হবে।  কিন্তু হরতাল দিতে বলব, আর হরতালের সময় ঘরে বসে থাকব রাস্তায় বের হব না- এটা হতে পারে না। বিষয়টি দলের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার কথাও জানান তিনি। বলেন, শান্তি পূর্ণ কর্মসূচির প্রতি এখন মানুষের সমর্থন বেশি। রোড মার্চের রেকর্ড করা সাফল্য তার প্রমান। তাই আমাদের ভবিষ্যতেও এ ধরনের গণমুখী কর্মসূচির দিকে জোর দিতে হবে। চট্টগ্রামের মহাসমাবেশের আলোকসজ্জা ও ডিজিটাল ব্যানারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য খণ্ডন করে ফারুক বলেন, জেনারেটরের সরবরাহ করা বিদ্যুতের সাহায্যে ওইসব আলোকসজ্জা ও ব্যানার চালানো হয়েছে। সেখানে পিডিবির বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতার দাবি একেবারেই অমূলক। এদিকে গতকাল রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিরোধী  দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, পরিবেশ পেলে নতুন বছরের আসন্ন অধিবেশনের প্রথম দিনই সংসদে যাবে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে সংসদে প্রেসিডেন্টকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল আনার দাবি জানান তিনি। একইসঙ্গে ফারুক বলেন, আমরা সংসদ অধিবেশনেও যাই না। এর বিলও নেই না। অথচ বলা হচ্ছে- আমরা সংসদে না গেলেও অধিবেশনের বিল নিচ্ছি। এটা মিথ্যা কথা।
‘আমরা বাংলাদেশী’ নামে একটি সংগঠন গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘১/১১-র ষড়যন্ত্র : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বাংলাদেশের বাস্তবতা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি ইফরান আবদুল্লাহ বেলায়েতের সভাপতিত্বে বৈঠকে বক্তব্য দেন, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, বিএনপি নেত্রী হেলেন জেরিন খান, খালেদা ইয়াসমিন, রেদোয়ান আহমেদ প্রমুখ। বিরোধী দলীর চিফ হুইপ বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা সরকারকে সহযোগিতা করতেই সংসদের প্রথম অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সরকার তিন বছরে সংসদে শুধু জিয়া পরিবারকে গালাগালি ছাড়া আর কিছুই করেনি। সরকারের মন্ত্রী-এমপিরাই সংসদকে মাছের বাজার বলে আখ্যা দিয়েছেন। তারপরও সরকারকে সহযোগিতা করতেই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপে যাওয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেগম জিয়া। সরকারেরও উচিত, দেশের অধিকাংশ জনগণও বিরোধী দলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা। প্রেসিডেন্টকেকে অনুরোধ জানিয়ে ফারুক বলেন, ‘আশা করি ১২তম অধিবেশনের প্রথমদিনই সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল দেখতে পাবো।’

No comments

Powered by Blogger.