যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের কাউন্টডাউন

সিনেসোটা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জয়নাল আবেদীন: ২০১২ যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বছর। এ বছরের ৬ই নভেম্বর তারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে বড় দুই দল- ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকানদের মধ্যে কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। তারা শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রিপাবলিকান দল থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছেন বেশ কয়েক পৃষ্ঠা ৫ কলাম ৩
 জন প্রার্থী। কিন্তু এ প্রক্রিয়াটি অনেক কঠিন। দেশজুড়ে রাজ্যগুলোর প্রাইমারি ও ককাসের নির্বাচন এ মাসেই শুরু হয়েছে। তা শেষ হবে আগামী ৫ই জুন। ৫ মাসের এ প্রাইমারি ও ককাসের লড়াই ডেমোক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশনের
 মাধ্যমে শেষ হবে। ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে ২৭ থেকে ৩০শে আগস্ট পর্যন্ত। রিপাবলিকানদের কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে ৩ থেকে ৬ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে রিপাবলিকান দল প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। প্রতিটি রাজ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রাইমারি নির্বাচন। রিপাবলিকানরা যেমন তাদের নাম নিবন্ধিত করছেন তেমনি ভোটাররাও ভোটে অংশ নিতে উৎসাহী। ডেমোক্রেটিক পার্টিতেও একই অবস্থা। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার পুনঃনির্বাচনী প্রচারণা টিম গঠন করেছেন। রিপাবলিকান দল থেকে প্রধান যেসব প্রার্থী মনোনয়ন লড়াইয়ে রয়েছেন তারা হলেন- ম্যাসাচুসেটসের সাবেক গভর্নর মিট রমনি, প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার নিউট গিংরিচ এবং কংগ্রেসম্যান রন পল। তবে রিপাবলিকান মনোনয়নে দৃশ্যত জাতীয়ভাবে জনপ্রিয়তা রয়েছে মিট রমনির। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশও মনোনয়নের ক্ষেত্রে তার পক্ষে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু সারাবিশ্বের রাজনীতিতে এবং অর্থনীতিতে কর্তৃত্ব করা একমাত্র সুপারপাওয়ার তাই সেখানকার নির্বাচন নিয়ে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ রয়েছে- এতে কোন সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কতটুকু উন্নতি হচ্ছে সেদিকে উৎসুক দৃষ্টি রাখবে বিশ্ব। এ নির্বাচনে বড় ইস্যু হবে অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান। অর্থনৈতিক মন্দা কেটে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আস্তে আস্তে তা কাটিয়ে উঠছে। বেকারত্বের হারও আস্তে আস্তে কমছে। এছাড়াও ইতালি, গ্রিক এবং স্পেনের অর্থনীতি মারাত্মক সমস্যা মোকাবিলা করছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থনীতি খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সে রকম সঙ্কট কাটিয়ে অর্থনীতি যদি ইতিবাচক কোন অবস্থায় না পৌঁছাতে পারে তাহলে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো সমস্যায় পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রপ্তানির ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের অর্থনীতি। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিও আক্রান্ত হতে পারে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি এমনভাবে পুনর্গঠন করার দরকার যাতে সমস্যাটা কম হয়। প্রয়োজন হলে কৃচ্ছ্রসাধনের পরিকল্পনা নেয়া যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে গত জুনে বেকারত্বের হার ছিল শতকরা ৯ দশমিক ৬ ভাগ। তা এখন কমেছে। সুষম গতিতে বেকারত্বের হার গত বছর (২০১১) নভেম্বরে কমে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৬ ভাগ। এর আগের মাসে অক্টোবরে এ হার ছিল শতকরা ৯ ভাগ। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যে শক্তিশালী হচ্ছে তার চিহ্ন বহন করে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এখন ঋণনির্ভর। ২০১০ সালে সেখানে জিডিপি ছিল ১৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা প্রায় সারা বিশ্বের জিডিপির এক-চতুর্থাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ১৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার (এক ট্রিলিয়ন সমান ১০০০০ বিলিয়ন ডলার)। খরচ যতটা সম্ভব ততটা কমিয়ে আনতে এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.