শরীয়তপুর-৩ উপনির্বাচন-প্রয়াত রাজ্জাকের আসনে লড়াইয়ে নামবেন কারা?

রীয়তপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে কারা লড়াইয়ে নামবেন তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বর্ষীয়ান রাজনীতিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সদ্য প্রয়াত আবদুর রাজ্জাক এমপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনটি কে জয় করবেন_ সে প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকার সর্বমহলে। এদিকে রাজ্জাকের মৃত্যুতে শূন্য ঘোষিত এ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষিত না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অনেকেই মাঠে নেমে পড়েছেন।


আসনটির উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকের নামই শোনা যাচ্ছে। বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের পক্ষেও অনেকে প্রার্থী হবেন।এ আসন থেকে চারবারের নির্র্বাচিত আওয়ামী লীগ সাংসদ আবদুর রাজ্জাক ২৩ ডিসেম্বর মারা যান।
উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে প্রয়াত রাজ্জাকের বড় ছেলে নাহিম রাজ্জাকের নাম শোনা যাচ্ছে। এ আসনের অন্তর্গত ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামাল মাস্টার, উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর মাঝি, পৌর মেয়র হুমায়ুন কবীর বাচ্চু, ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান রাঢ়ি, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারী, পৌর মেয়র আবদুল মান্নান হাওলাদার এবং গোসাইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাসির উদ্দিন নাহিমের পক্ষে বলেছেন।
এ ছাড়া সরকারি দলের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় আরও রয়েছেন_ শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, টানা ২৬ বছর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করা ছাবেদুর রহমান খোকা শিকদার, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি জাকসুর সাবেক ভিপি একেএম এনামুল হক শামীম, ছাত্রলীগের আরেক সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বাহাদুর বেপারী এবং গোসাইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ঢালী।
অন্যদিকে বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গত নির্বাচনে এ আসনে রাজ্জাকের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সাংসদ দলের কেন্দ্রীয় সদস্য কেএম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গ এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিল্পপতি মুহিতুল গনি মিন্টু সরদারের নাম শোনা যাচ্ছে।
নাহিম রাজ্জাক সমকালকে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর তার বাবা পিছিয়ে পড়া শরীয়তপুরকে আধুনিক জেলায় রূপ দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকারের আমলেও মৃত্যুর আগে পর্যন্ত একই প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন তিনি। আমি সাংসদ নির্বাচিত হতে পারলে বাবার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করব।
ছাবেদুর রহমান খোকা শিকদার বলেন, ১৯৯১ সালেই তিনি এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে ওই সময় আবদুর রাজ্জাককে মনোনয়ন দেওয়া হলে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেন। রাজ্জাক বেঁচে থাকা পর্যন্ত আর মনোনয়ন চাননি। যেহেতু ৪৫ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শকে লালন করে দলের প্রশ্নে কখনোই কক্ষচ্যুত হননি, তাই রাজ্জাকের অনুপস্থিতিতে তাকেই এ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী করা হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
এনামুল হক শামীম বলেন, আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে এ নির্বাচনী এলাকার ঘরে ঘরে গিয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার কাজ করেছেন। আবদুর রাজ্জাক নিজেও তার অনেক নির্বাচনী ও দলীয় জনসভার বক্তব্যে তার পরে এ এলাকায় তাকেই বিকল্প নেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
বাহাদুর বেপারী বলেন, ডামুড্যার সন্তান এবং প্রয়াত রাজ্জাকের প্রতিবেশী হওয়ায় শূন্য আসনটিতে দলীয় ম্যান্ডেট নিয়ে শেখ হাসিনার স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হতে চান তিনি।
কেএম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গ বলেন, গত নির্বাচনে এ আসনে রাজ্জাকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। যদি তার দল বিএনপি শূন্য আসনটির উপনির্বাচন বিষয়ে কোনো নির্দেশ দেয়, তাহলে সেটি হবে তার জন্য শিরোধার্য। অন্যথায় প্রয়াত রাজ্জাকের পরিবার বিশেষ করে তার বড় ছেলে নাহিম রাজ্জাকের ওপরই থাকবে তার সহানুভূতি।
মুহিতুল গনি মিন্টু বলেন, বিএনপির আদর্শে শতভাগ বিশ্বাসী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে এ নির্বাচনী এলাকার দুস্থ মানুষের পাশে রয়েছেন। এখন এ আসনের উপনির্বাচনে দল থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি বিজয় ছিনিয়ে আনার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।

No comments

Powered by Blogger.