আজ আ.লীগের সঙ্গে সংলাপ-বিএনপি আলোচ্য সূচির বাইরে কথা বলেছে: আশরাফ

ওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে নির্ধারিত বিষয় অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু বিএনপি শুধু তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সৈয়দ আশরাফ এ কথা বলেন। আজ আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের তারিখ নির্ধারিত আছে।


এর আগে বিকেলে সংসদ ভবনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নিজেদের আজকের সংলাপের বিষয়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা বৈঠক করেন। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে তাঁর কক্ষে এই বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সংলাপের জন্য তাঁদের কাছে যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে, তাতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে পরামর্শ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে আলোচনার কথা আমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ নেই। রাষ্ট্রপতির পত্রের আলোকে মনে হচ্ছে, বিএনপি এজেন্ডার (আলোচ্যসূচি) বাইরে গিয়ে তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছে।’
সৈয়দ আশরাফ জানান, দলের পক্ষ থেকে সংলাপের মতামত চূড়ান্ত করতে গতকাল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা বৈঠক করেছেন। আজ বেলা ১১টায় সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন—উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আব্দুল জলিল, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, কাজী জাফর উল্যাহ, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও হাছান মাহমুদ।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ গ্রহণে সংলাপ আহ্বান করেছেন। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আজ (গতকাল) সংলাপে অংশ নিয়ে দলের মতামত উপস্থাপন করেছে। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) আমরা সংলাপে অংশ নিয়ে এজেন্ডার আলোকে দলের মতামত তুলে ধরব। আমরা এজেন্ডার বাইরের কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলব না। সংলাপ শেষে আমাদের মতামত এবং বিরোধী দলের মত সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাব।’
জামায়াতের দম্ভ চূর্ণ হয়েছে: ব্রিফিংয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩০ লাখ মানুষকে যারা হত্যা করেছে, তাদের মূল নায়ক গোলাম আযম বিচারের দ্বারপ্রান্তে। তাদের মধ্যে এক ধরনের আত্মবিলাসী ভাব ছিল যে এ দেশে কখনো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে না। গোলাম আযমকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তাদের সেই দম্ভ চূর্ণ হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়, যত দেরিই হোক না কেন, অপরাধীদের বিচার একদিন হবেই।
সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, ‘নির্বাচনের সময়ে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। জনগণ ভোট দিয়ে আমাদের সেই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিচারকাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ হওয়ার মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে।’
ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণালকান্তি দাশ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.