বীর মুক্তিযোদ্ধা-তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না
২৮১ স্বাধীনতার চার দশক উপলক্ষে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ধারাবাহিক এই আয়োজন। শহীদ দেলোয়ার হোসেন, বীর বিক্রম সাহসী এক প্রতিরোধযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন চাকরি করতেন ইপিআরে (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, পরে বিডিআর, এখন বিজিবি)। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন যশোর ইপিআর সেক্টরের অধীনে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন।
সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যশোরের পতন হলে তাঁর সঙ্গী-সাথিরা বেশির ভাগ আশ্রয় নেন ভারতে। তিনি তাঁর দলনেতার অনুমতি নিয়ে চলে আসেন নিজ এলাকায়। এসে দেখেন তাঁর এলাকা তখনো মুক্ত। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৎপরতা শুরু হয়নি। এটা দেখে তিনি স্থানীয় ছাত্র-যুবকদের সংগঠিত করে তাঁদের নিজেই প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাঁর এলাকায় তৎপরতা শুরু করে। তখন তাঁর দলের সবাইকে নিয়ে তিনি ভারতে যান।
দেলোয়ার হোসেন পরে যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরের রাজনগর সাব-সেক্টরে। পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে ফেনীর পাঠাননগরে এক যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। সহযোদ্ধারা তাঁকে সমাহিত করেন পাঠাননগরেই। রাজনগর সাব-সেক্টর এলাকায় অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ফেনী জেলার বিলোনিয়া পকেটে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের অবরুদ্ধ করার জন্য মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে বন্দুয়া-দৌলতপুর-পাঠাননগরে প্রবেশ করে। কিন্তু তার আগেই পাকিস্তানি সেনারা দ্রুত বিলোনিয়ার সব অবস্থান ছেড়ে ফেনীতে সমবেত হয়। পাঠাননগরে ছিল তাদের শক্ত এক অবস্থান। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীর পাঠাননগরে পাকিস্তানি সেনাদের মুখোমুখি অবস্থান নেন। একটি দলে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। মুক্তিযোদ্ধারা পাঠাননগরে অবস্থান নেওয়ার পর দুই পক্ষে গোলাগুলি চলতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে প্রতিদিনই খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ হয়। সে সময় কোনো এক যুদ্ধে দেলোয়ার হোসেন শহীদ হন। কীভাবে শহীদ হন, তার কোনো বর্ণনা কোথাও পাওয়া যায়নি।
মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্বের জন্য শহীদ দেলোয়ার হোসেনকে মরণোত্তর বীর বিক্রয় খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৩ সালের সরকারি গেজেট অনুযায়ী তাঁর বীরত্বভূষণ সনদ নম্বর ১০৬।
শহীদ দেলোয়ার হোসেনের পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়নের (ডাক শান্তিরহাট) ওয়াসেকপুর গ্রামে। তিনি বিবাহিত ছিলেন। তাঁর বাবার নাম আফিজউদ্দিন, মা ছবের নেছা। স্ত্রী জাকিয়া খাতুন। তাঁর দুই ছেলে, দুই মেয়ে।
শহীদ দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে ও স্ত্রী বেশ অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। বড় ছেলে ইয়াছিন আলী বললেন, ‘আমার মা নানা রোগে আক্রান্ত। অর্থের অভাবে তাঁর সুচিকিৎসা হচ্ছে না।’ শহীদ দেলোয়ার হোসেনের ছবি পাওয়া যায়নি।
সূত্র: প্রথম আলোর নোয়াখালী প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান, ফখরুল ইসলাম (নোয়াখালী) এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ব্রিগেডভিত্তিক ইতিহাস।
গ্রন্থনা: তারা রহমান
trrashed@gmail.com
দেলোয়ার হোসেন পরে যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরের রাজনগর সাব-সেক্টরে। পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে ফেনীর পাঠাননগরে এক যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। সহযোদ্ধারা তাঁকে সমাহিত করেন পাঠাননগরেই। রাজনগর সাব-সেক্টর এলাকায় অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ফেনী জেলার বিলোনিয়া পকেটে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের অবরুদ্ধ করার জন্য মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে বন্দুয়া-দৌলতপুর-পাঠাননগরে প্রবেশ করে। কিন্তু তার আগেই পাকিস্তানি সেনারা দ্রুত বিলোনিয়ার সব অবস্থান ছেড়ে ফেনীতে সমবেত হয়। পাঠাননগরে ছিল তাদের শক্ত এক অবস্থান। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীর পাঠাননগরে পাকিস্তানি সেনাদের মুখোমুখি অবস্থান নেন। একটি দলে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। মুক্তিযোদ্ধারা পাঠাননগরে অবস্থান নেওয়ার পর দুই পক্ষে গোলাগুলি চলতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে প্রতিদিনই খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ হয়। সে সময় কোনো এক যুদ্ধে দেলোয়ার হোসেন শহীদ হন। কীভাবে শহীদ হন, তার কোনো বর্ণনা কোথাও পাওয়া যায়নি।
মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্বের জন্য শহীদ দেলোয়ার হোসেনকে মরণোত্তর বীর বিক্রয় খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৩ সালের সরকারি গেজেট অনুযায়ী তাঁর বীরত্বভূষণ সনদ নম্বর ১০৬।
শহীদ দেলোয়ার হোসেনের পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়নের (ডাক শান্তিরহাট) ওয়াসেকপুর গ্রামে। তিনি বিবাহিত ছিলেন। তাঁর বাবার নাম আফিজউদ্দিন, মা ছবের নেছা। স্ত্রী জাকিয়া খাতুন। তাঁর দুই ছেলে, দুই মেয়ে।
শহীদ দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে ও স্ত্রী বেশ অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। বড় ছেলে ইয়াছিন আলী বললেন, ‘আমার মা নানা রোগে আক্রান্ত। অর্থের অভাবে তাঁর সুচিকিৎসা হচ্ছে না।’ শহীদ দেলোয়ার হোসেনের ছবি পাওয়া যায়নি।
সূত্র: প্রথম আলোর নোয়াখালী প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান, ফখরুল ইসলাম (নোয়াখালী) এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ব্রিগেডভিত্তিক ইতিহাস।
গ্রন্থনা: তারা রহমান
trrashed@gmail.com
No comments