ঘোষণার মধ্যেই আটকে আছে চালুর প্রক্রিয়া by কৌশিক দে,

হাজোটের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, পাটমন্ত্রীর পরিদর্শন কোনোটিই কাজে আসছে না খুলনার বন্ধ হওয়া দৌলতপুর জুট মিলসটি পুনরায় চালু হতে। আদৌ এ মিলটি চালু হবে কি না বলতে পারছে না খোদ মিল কর্তৃপক্ষই।মিল সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে ১৩৫ কোটি টাকার দেনার অজুহাত ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর চারদলীয় জোট সরকার বাংলাদেশ জুট করপোরেশন (বিজেএমসি) পরিচালিত দৌলতপুর জুট মিলটি লস দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়। এতে মিলের প্রায় দুই হাজার শ্রমিক-কর্মচারী বিপুল পরিমাণ বেতন-ভাতা পাওনা রেখে বেকার হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছায় বিজেএমসি শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনাদি পরিশোধ করে।


বিগত নির্বাচনের সময় বর্তমান মহাজোট নেতারা এ মিলটিসহ খুলনার সব মিলকারখানা চালুর প্রতিশ্রুতি দেন।
চলতি বছরের ৫ মার্চ খালিশপুর জুট মিল উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিলটি চালুর ঘোষণা দেন। পরে মিলটি চালু করতে নানামুখী উদ্যোগ শুরু হয়। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী মিলটি পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তিনি মিলের অবকাঠামো ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শুরুর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। কিন্তু মিলটি চালু করার ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিলের এক কর্মকর্তা বলেন, 'আমরাও বুঝছি না মিলটি কেন চালু হচ্ছে না। আমাদের যা বলছে তাই করছি। এখন সরকার ইচ্ছা করলে মিলটির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিলেই মিল চালু করা সম্ভব।'
রিকশাচালক মোস্তফা দৌলতপুর মিলের সাবেক শ্রমিক। তিনি বলেন, 'মিল বন্ধ হওয়ার পর প্রথমে দিনমজুর ও পরে রিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছি। ঘরভাড়া, গাড়িভাড়া দিয়ে সংসার চালানো খুবই কষ্টকর। আশায় আছি, কবে মিলটি চালু হবে আর কবে যে পেট পুরে খেতে পারব সেটা একমাত্র আল্লাহ জানেন।'
মিলের প্রকল্পপ্রধান মনোয়ার হোসেন মিয়া বলেন, 'গত অর্থবছরে দৌলতপুর জুট মিল চালু করা বাবদ ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে মিলের অবকাঠামোর যে অবস্থা তাতে আরো বেশি টাকার প্রয়োজন হবে। বরাদ্দকৃত টাকা এখনো দেওয়া হয়নি কিন্তু পাটমন্ত্রী পরিদর্শনে আসার পর মিলের অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য একটি তালিকা করতে বলেন। আমরা সে কাজটিই করছি।' প্রসঙ্গত খালিশপুরে ভৈরব নদের তীরে ১৯৫৩ সালে দৌলতপুর জুট মিলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৫ সালে ১৭০টি হেসিয়ান, ৮০টি স্যাকিং তাঁতের অনুকূলে এক হাজার ৩২০ জন শ্রমিক, ১৪৬ জন কর্মকর্তা নিয়ে মিলটি আনুষ্ঠানিক উৎপাদন শুরু করে। মিলটির দৈনিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ টন।

No comments

Powered by Blogger.