কয়েকদিনের মধ্যে স্বদেশে ফিরবেন শালিত : হামাস-ইসরাইল বন্দি বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর

হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি সেনা গিলাদ শালিতের বিনিময়ে ১ হাজার ২৭ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে ইসরাইল। হামাস-ইসরাইল এই বন্দি বিনিময় চুক্তির খবরে বুধবার উল্লাস প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনিরা। গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনের ইসলামপন্থী দল হামাস শালিতকে ২০০৬ সালে সীমান্ত অঞ্চলে আটক করে। গত মঙ্গলবার এই চুক্তি সইয়ের ঘোষণা আসে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানায়, শালিতকে কয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তি দেয়া হবে। ইসরাইলের মন্ত্রিসভা শেষ রাতের বৈঠকের পর এই চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। ইসরাইল পার্লামেন্টে ২৬ জন মন্ত্রী এর পক্ষে এবং ৩ জন বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।


হামাস নেতা খালেদ মেশাল চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে এক টেলিভিশন বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘এটা একটা জাতীয় অর্জন এবং এর জন্য আমরা গর্ব করি।’ মেশাল জানান, বন্দিদের দুই ধাপে মুক্তি দেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে ৪৫০ জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি দেয়া হবে। এদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে আটক হওয়া সব ফিলিস্তিনি নারীরাও রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ৫৫০ জনকে দুই মাসের মধ্যে মুক্তি দেয়া হবে। বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় মুক্তির তালিকায় যে ১ হাজার ২৭ জন রয়েছেন তাদের মধ্যে ৩১৫ জন ইসরাইলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। মেশাল জানান, এদের মধ্যে যারা ইতোমধ্যে ২০ বছরেরও বেশি সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, মুক্তির বিষয়ে তারা অগ্রাধিকার পাবেন।
মঙ্গলবার ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়। মিসর ও জার্মানির মধ্যস্থতাকারীরা বন্দি বিনিময়ে দু’পক্ষকে রাজি করায়। শালিতকে মুক্ত করে আনতে সাধারণ ইসরাইলিদের অব্যাহত চাপে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই অসম বন্দি বিনিময়ে নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভা থেকে ব্যাপক সমর্থন পান। ‘শালিত তার পরিবারের সঙ্গে আবার মিলিত হবে’ বলেন নেতানিয়াহু। এ চুক্তিতে গাজার ফিলিস্তিনিরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
২০০৬ সালে শালিতকে আটক করে হামাস যোদ্ধারা। আটকের পর থেকে শালিতকে উদ্ধারে গাজায় অনেকবার অভিযান চালায় ইসরাইল। কিন্তু ইসরাইলের সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। এই বন্দি বিনিময় ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় সরাসরি কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে এর ফলে ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি আলোচনা আবার শুরু করার আন্তর্জাতিক উদ্যোগে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখা ও পরবর্তীতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য জাতিসংঘে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আবেদন জানালে শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা অনেকটাই দূরে সরে যায়।

No comments

Powered by Blogger.