ছয় মাস সময় চেয়ে আবার আদালতে আবেদন by ফারজানা লাবনী

জাহাজ ভাঙা শিল্পের জন্য বিধিমালা তৈরিতে আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ। শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে গত মঙ্গলবার বিধিমালা তৈরিতে আবারও সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।সূত্র আরো জানায়, পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম পর্যায়ে চলতি বছর ৫ মে আদালত থেকে দুই মাসের মধ্যে (৪ জুলাই) বিধিমালা তৈরিতে সময় দেওয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বিধিমালা প্রণয়ণ করতে না পারায় আদালতে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফা ১২ অক্টোবর নতুন সময় নির্ধারণ করে।


এবারও আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়ে খসড়া জাহাজ ভাঙা বিধিমালা তৈরি করা সম্ভব হলেও চূড়ান্ত বিধিমালা প্রণয়নে ব্যর্থ হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে খসড়া বিধিমালা তৈরি করা হলেও চূড়ান্তভাবে বিধিমালা তৈরির সব কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। আদালত থেকে আরো ছয় মাস সময় দেওয়া হলে বিধিমালা প্রণয়ন করাসহ জাহাজ ভাঙা বিধিমালায় বিরাজমান সব সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হবে।'
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং জাহাজ ভাঙা বিধিমালা তৈরি কমিটির আহ্বায়ক এ বি এম খোরশেদ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জাহাজ ভাঙা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে খসড়া বিধিমালা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষভাবে জাহাজ ভাঙা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, পরিবেশবাদী একাধিক সংগঠনের সাথে হয়েছে একাধিক বৈঠক । একই সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি একাধিক সংস্থার সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে।' সব পক্ষের মতামতের প্রতিফলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটি খসড়া বিধিমালা তৈরি করেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, গত ৩ অক্টোবর ওয়েবসাইটে খসড়া জাহাজ ভাঙা বিধিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। ৩ অক্টোবর থেকে আগামী ১৫ দিন এ বিষয়ে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ মতামত দিতে পারবেন। এসব মতামতের মূল্যায়নে পুনরায় বিধিমালা সংযোজন-বিয়োজন করে নতুনভাবে তৈরি করা হবে। এ বি এম খোরশেদ আলম বলেন, বিধিমালা তৈরির সব প্রক্রিয়া শেষ করতে সর্বোচ্চ ছয় মাস সময় হলে ভালো হয়। বিধিমালা এমন প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত করা হচ্ছে, এতে ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট শিল্পে আর কোনো অস্থিরতা তৈরি হবে না বলেও কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের একাধিক নেতা বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত জাহাজ ভাঙা ব্যবসায়ে সুস্থিরতা ফিরবে না বলে দাবি করেছেন। আদালতের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিধিমালা তৈরি করা উচিত ছিল বলে মত প্রকাশ করেন অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ক্যাপটেন সালাউদ্দিন। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিধিমালায় ৪৯টি ধারা থাকছে। আদালতের রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, শ্রমিকের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিধিমালায় উল্লেখ থাকছে।

No comments

Powered by Blogger.