পিছিয়ে পড়েও জিতল দশজনের ব্রাজিল

প্রথমে একটি আত্মঘাতী গোল, তারপর বিরতির ঠিক আগে দানি আলভেসের লাল কার্ডের সঙ্গে প্রতিপক্ষের জন্য উপহার পেনাল্টি_কোনো কিছুই ঠিকমতো হচ্ছিল না ব্রাজিলের জন্য। কিন্তু রোনালদিনহোর দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিক আর সঙ্গে মার্সেলোর লক্ষ্যভেদে বদলে গেছে সব কিছু। পিছিয়ে পড়ার পর ১০ জনের দল হয়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবারের প্রীতি ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জিতেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।দাঙ্গাবিক্ষুব্ধ মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলের শহর টরেরনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ আনন্দের হতে হতেও মেক্সিকোর কোচ হোসে ম্যানুয়েল দে লা তোরের জন্য শেষ পর্যন্ত হয়ে গেছে বিষাদের কারণ।


গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর অধীনে খেলা ১৫ ম্যাচে এই প্রথম হারের তেতো স্বাদ পেল 'এল ত্রাই'রা।ম্যাচের প্রথমার্ধ কিন্তু অন্য রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। 'সুন্দর ফুটবল'-এর পূজারি ব্রাজিল যেমন গা-জোয়ারি ফুটবল খেলছিল, স্বাগতিকরাও ঠিক তেমনই জবাব দেওয়ায় খেলার শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনা। বিরতির আগেই তাই পাঁচবার হলুদ কার্ড বের করতে হয় রেফারি ম্যানুয়েল মেজিয়াকে। এর দুটি দেখানো হয় বার্সেলোনার ডিফেন্ডার আলভেসকে। সপ্তম মিনিটেই প্রথম হলুদ কার্ড দেখা আলভেস বিরতির ঠিক আগে মেক্সিকোর তারকা স্ট্রাইকার হাভিয়ের হার্নান্দেজকে নিজেদের সীমানায় ফেলে দিলে রেফারির তাঁকে লাল কার্ড দেখানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
এর আগেই অবশ্য ব্রাজিল পিছিয়ে পড়ে ডেভিড লুইজের আত্মঘাতী গোলে। দশম মিনিটে পাবলো ব্যারেরার নিচু ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়েছিলেন চেলসির এ ডিফেন্ডার, কিন্তু তাঁর পায়ে লেগে বল ঢুকে যায় নিজেদের জালে!
আলভেসের কীর্তিতে ব্যবধানটা ২-০ করার সুযোগ পেয়েছিল মেক্সিকো, কিন্তু আন্দ্রেস গার্দাদোর দুর্বল পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দিয়ে গোলরক্ষক জেফারসন সে যাত্রা বাঁচিয়ে দেন সেলেসাওদের। পরে আরো একবার দলকে বাঁচিয়েছেন তিনি, খুব কাছ থেকে নেওয়া হার্নান্দেজের হেড লুফে নিয়ে।
একজন কম নিয়ে খেললেও ব্রাজিল সমান তালেই লড়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। সেই লড়াইয়ের ফল তারা পেতে শুরু করে যখন মেক্সিকো জয়ের সুবাস পাচ্ছিল তখন! ম্যাচের ৮০ মিনিটে ২০ মিটার দূর থেকে নেওয়া ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিকে রোনালদিনহো বোকা বানান ক্যারিয়ারের শততম ম্যাচ খেলতে নামা গোলরক্ষক অসওয়ালদো সানচেজকে। সমতায় ফেরার চার মিনিট পরেই মার্সেলো প্রায় একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে মেঙ্কিান সীমানায় ঢুকে পড়ে বুলেট গতির এক শটে করেন জয়সূচক গোলটি।
ব্রাজিল অবশ্য গোলের সুযোগ আরো অনেকবারই পেয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেছেন নেইমার, ১৭ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নিয়েছেন ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
২০১৪ বিশ্বকাপের স্বাগতিক হওয়ায় ব্রাজিলকে এবার বাছাই পর্ব খেলতে হচ্ছে না। প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাসহ লাতিন আমেরিকার অন্য দলগুলো যখন ঘাম ঝরাচ্ছে চূড়ান্ত পর্বে ওঠার লড়াইয়ে, তখন কিনা ব্রাজিল নিজেদের ব্যস্ত রাখছে প্রীতি ম্যাচে। মঙ্গলবারের ম্যাচটি ছিল সে রকমই এক ম্যাচ, আর তাতে জয় পেয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার পথে আরেকটু এগিয়েছে কদিন আগে মহাদেশীয় আসর কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেওয়া মানো মেনেজেসের দল। এএফপি

No comments

Powered by Blogger.