কম বয়সী অইউরোপীয় সঙ্গীকে ঢুকতে বাধা দেওয়া অবৈধ

উরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের দেশের ২১ বছরের কম বয়সী কেউ ব্রিটিশ নাগরিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে তাকে ব্রিটেনে ঢুকতে দেওয়া হয় না। ফোর্সড ম্যারিজ বা ব্রিটেনে বসবাসের সুযোগ নিতে জোরপূর্বক সংঘটিত বিয়ের প্রবণতা ঠেকাতে সরকার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে গতকাল বুধবার আদালত ওই নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন। সরকারের এ সিদ্ধান্ত মানুষের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনযাপনের অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।


২০০৮ সালে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইইউভুক্ত দেশের বাইরের ২১ বছরের কম বয়সী স্বামী বা স্ত্রীকে ব্রিটেনে বসবাসের অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপারে আদেশ জারি করে। এর ফলে কোনো ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে করা সত্ত্বেও কেবল বয়সের কারণে অন্য দেশের কোনো নারী বা পুরুষ দেশটিতে বসবাসের সুযোগ পেতেন না। ব্রিটিশ সরকারের এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ভুক্তভোগী দুই দম্পতি বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের শরণাপন্ন হন। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট সরকারি সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে রায় দেন। আদালত বলেন, মানবাধিকার বিষয়ক ইউরোপীয় কনভেনশনের ৮ অনুচ্ছেদের বরখেলাপ সরকারি এ নিষেধাজ্ঞা। অভিবাসনমন্ত্রী ড্যামিয়ান গ্রিন রায়কে 'খুবই হতাশাজনক' বলে মন্তব্য করেছেন।
১৮ বছর বয়সী চিলির নাগরিক দিয়েগো আগুইলার ও ব্রিটিশ নাগরিক ১৭ বছরের আম্বার আগুইলার ২০০৮ সালে বিয়ে করেন। দিয়েগো শিক্ষার্থী ভিসায় তখন ব্রিটেনে ছিলেন। কিন্তু তাঁর এক বছর মেয়াদি শিক্ষার্থী ভিসা শেষ হওয়ার পর তিনি আর ভিসা পাননি। এ দম্পতির মতো আরেক পাকিস্তানি নাগরিক ও ব্রিটিশ নাগরিকও বিয়ের পর বয়সের কারণে ব্রিটেনে থাকার অনুমোদন পাননি। এ দুই দম্পতি সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান। এ সময় তাঁদের পাশে দাঁড়ায় জয়েন্ট কাউন্সিল ফর দি ওয়েলফেয়ার অব ইমিগ্রেশন (জেডাবি্লউসিআই) নামের একটি সংস্থা। সংস্থাটির দাবি, সরকারি এ নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার দম্পতি ভুক্তভোগী হচ্ছিলেন। এবার তাঁদের দুর্দশা দূর হবে।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে সরকারের যুক্তি ছিল, অনেকেই ফোর্সড ম্যারেজের সুযোগ নিয়ে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব হাসিল করেন। আদালত বলেন, ওই নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে ফোর্সড ম্যারেজ ঠেকানো বা নির্মূল করা গেছে_এমন কোনো অকাট্য প্রমাণ পেশ করতে পারেনি সরকার। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, গার্ডিয়ান, মেইল।

No comments

Powered by Blogger.