হাক্কানিসহ অন্যদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় রাজি যুক্তরাষ্ট্র

হাক্কানি নেটওয়ার্কসহ এ ধরনের সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। আফগানিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় ওবামা প্রশাসনের হাক্কানির মতো সন্ত্রাসী গ্রুপের অন্তর্ভুক্তির নীতি গত এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আফগান নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত। অপরদিকে মার্কিন কংগ্রেস হাক্কানি গ্রুপকে কমপক্ষে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য পররাষ্ট্র দফতরকে সতর্ক করে দিয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, হাক্কানি নেটওয়ার্ক পাকিস্তানভিত্তিক একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। মার্কিন কর্মকর্তারা এই গ্রুপটির বিরুদ্ধে উচ্চপর্যায়ের মার্কিন হামলার অভিযোগ এনেছে।


তাদের এসব হামলার কারণে আফগানিস্তান থেকে সুষ্ঠুভাবে সৈন্য প্রত্যাহারের ওয়াশিংটনের পরিকল্পনা বিপন্ন করতে পারে।হাক্কানির নেটওয়ার্কের সদস্যরা আফগান সরকারে যোগ দিতে পারে একথা বিশ্বাস করেন কিনা প্রশ্ন করা হলে হিলারি ক্লিনটন বলেন, আমরা এখন জানি যে হাক্কানি এবং তাদের সমগোত্র গোষ্ঠীরা আমেরিকানদের জন্য বিপদজনক। তবে আমরা এখনই দরজা বন্ধ করে দেব না। কারণ এখনও এগিয়ে যাওয়ার কিছু পথ খোলা রয়েছে। অর্থাত্ তাদের সমঝোতার পথে আনা যেতে পারে। রয়টার্সের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, এসব সন্ত্রাসী গ্রুপ এবং তাদের কোনো ব্যক্তি খুব বিপদজ্জনক একথা এ মুহূর্তে বললে খুব তাড়াতাড়ি বলা হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা আফগানদের সমর্থন দিতে যাচ্ছি। তারা দেখতে চায় কোনো অগ্রগতি হচ্ছে কিনা অথবা এমন কোনো গ্রুপ বা তাদের নেতাদের আপনার চোখে পড়ছে কিনা যারা অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে আগ্রহী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই শান্তি আলোচনার বিস্তারিত কৌশল কী বা আফগানিস্তানে অবস্থানরত সেনা কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে অবস্থানই বা কী হবে, সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। অবশ্য কয়েকদিন আগে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে মার্কিন দূতাবাসে এবং সিআইএ স্টেশনে হামলার জন্য হাক্কানি গ্রুপকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপটির এ ধরনের মারাত্মক সহিংসতার কারণে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার সুষ্ঠুভাবে নাও হতে পারে বলে মনে করা হয়। গত মাসে অবসরে যাওয়ার আগে মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ এডমিরাল মাইক মুলেন অভিযোগ করেন, ১৩ সেপ্টেম্বর কাবুলে মার্কিন দূতাবাসে হাক্কানির হামলার পেছনে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর ইন্ধন ছিল। এসব সত্ত্বেও গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে শান্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা হাক্কানির কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে আলোচনার কোনো দৃশ্যমান ফলাফল পাওয়া যায়নি। পররাষ্ট্র দফতর অবশ্য এই মীমাংসা প্রচেষ্টার বিস্তারিত জানাতে রাজি হয়নি। মীমাংসা প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়ার সঙ্গে হিলারি ক্লিনটন এও বলেছেন, সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউস আশা করে, এতে করে একটা সমঝোতায় আসতে সন্ত্রাসীরা বাধ্য হবে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং অন্যরা মিত্র পাকিস্তানের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ হারায়নি। পাকিস্তানের প্রতি তারা সন্ত্রাস দমনে খড়গহস্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
তবে এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে, কিভাবে কতটা দ্রুত শান্তি চুক্তির কাজ চলবে। আর আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার পর সামরিক কমান্ডাররা কিভাবে নিরাপত্তার উন্নতি ঘটাবেন।
হিলারি ক্লিনটন সাংবাদিকদের বলেন, সংঘাতের এমন পর্যায়ে ঠিক করে বলা খুব কঠিন কিভাবে সবকিছু সম্ভব। হতে পারে দুই মাসে, চার মাসে বা ছয় মাসে। আমরা আফগানদের সমর্থন দিতে চাচ্ছি। তারা দেখতে চায়, কোনো অগ্রগতি হচ্ছে কিনা।

  

No comments

Powered by Blogger.