২৪- স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হবে জনগণকেই

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ন্যক্কারজনক নজির
...ভিন্নমতাবলম্বীদের বানোয়াট মামলায় ধরে ধরে জেলে পোরা হচ্ছে, রিমান্ড ও শ্যোন অ্যারেস্ট নামক নির্যাতনের হাতিয়ার যত্রতত্র ব্যবহৃত হচ্ছে, বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ করার অধিকার পর্যন্ত নেই, সেরকম একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের এমন সুবাতাস ইকোনমিস্টের গবেষকরা কোথায়, কেমন করে খুঁজে পেলেন, তা তারাই ভালো জানেন। আমি তো মনে করি, বর্তমান বছরটি এদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক ন্যক্কারজনক নজির হিসেবেই ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।...

জেলে আসার পর আজ প্রথমবার নিজ থেকে প্রশাসনকে ডাক্তার পাঠানোর জন্য খবর পাঠালাম। ঢাকা ও কাশিমপুর উভয় জেলেই এর আগেও আমার সেলে বারকয়েক ডাক্তার এসেছেন। তবে ওগুলো ছিল জেল প্রশাসনের তরফ থেকে আমার কুশল জানতে আসা। কারাবাসের দিনের হিসাবে ডবল সেঞ্চুরি পূর্ণ হলেও আল্লাহর রহমতে এক শরীরের ওজন হ্রাস পাওয়া ছাড়া যথেষ্ট সুস্থ আছি। মাঝখানে রক্তচাপের ওঠানামার চিকিত্সা বাসা থেকে পাঠানো ওষুধ দিয়ে নিজেই করেছি। কোমরের পুরনো ব্যথাটা প্রিজন ভ্যান ভ্রমণে অবশ্য মাঝে-মধ্যে বেড়ে যায়। কিন্তু এক ট্র্যাকশন এবং হিট নেয়া ছাড়া এর তো তেমন কোনো চিকিত্সা নেই। জেলে থেকে আপাতত দুই চিকিত্সার কোনোটাই গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। মুক্তি পেলে তখন দেখা যাবে।
আজও কাশিমপুর জেলের ডাক্তার আহসান হাবীবকে ডেকেছি আমার জন্য নয়, সেবক কালামের জন্য। মাসখানেক ধরে বেচারা ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডা ও কাশির সংক্রমণে খুবই কষ্ট পাচ্ছে। একবার কাশতে শুরু করলে সেই ভয়াবহ কাশি চুপ করে দেখা মুশকিল। দিনে গোটাচারেক কড়া অ্যান্টি-বায়োটিক খেয়েও কেন যেন কালামের রোগ উপশম হচ্ছে না। অবস্থা দেখে কোনো অধিক গুরুতর অসুস্থতার আশঙ্কা করছি। দোষ-গুণ মিলিয়ে লোকটিকে আমি পছন্দই করি। আগেই বলেছি, এজমালি সম্পত্তি নিয়ে কলহে নিকট জ্ঞাতিভাইকে নিজ হাতে খুন করেছে কালাম। ক’দিনের আলাপেই অকপটে খুনের কথা স্বীকার করা দেখে ওর মধ্যে এক ধরনের সততা খুঁজে পেয়েছিলাম। গত তিন মাসে কালামের ওপর আমার সেই আস্থা দৃঢ়তর হয়েছে।
অনেকদিন হলো জেলে মেটের বেল্ট পেয়েছে কালাম। এই পদটি পাওয়ার জন্য সব জেলেই পুরনো কয়েদিদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা চলে। শুনেছি প্রশাসনে পাহারা, মেট ইত্যাদি পদের বিনিময়ে টাকা-পয়সার লেনদেনও হয়। কারণ জেলখানার মেট মানেই প্রতিপত্তি ও টাকা। ঢাকা জেলে এমন মেটেরও সাক্ষাত্ পেয়েছি, যার মাসিক আয় লাখ টাকা। সেখানে থেকেই সংসারের খরচ মিটিয়ে বাড়িঘর করে ফেলেছে এমন বন্দির সংখ্যাও একেবারে অনুল্লেখ্য নয়। অথচ কালাম প্রায় দশ বছর জেল খেটে হতদরিদ্রই রয়ে গেল।
জেলে অর্থ উপার্জন করতে হলে অসহায় কয়েদি, হাজতিদের ওপর জুলুম করতেই হবে। বিকল্পে জেলের ভেতরের মাদক ব্যবসায় জড়াতে হবে। তাও না পারলে নিদেনপক্ষে কর্মকর্তাদের ঘুষ লেনদেনের মধ্যস্বত্বভোগী সাজতে হবে। এর কোনোটাই গোঁয়ার, নির্বোধ কালাম পারে না। এসব অর্থকরী কাজকর্ম বাদ দিয়ে ডিভিশন ওয়ার্ডে আমার মতো বেকার লোকের সেবকের কাজ করছে আর দিনে-রাতে অশুদ্ধ আরবি উচ্চারণ ও বেসুরো গলায় কোরআন তেলাওয়াত করছে। অথচ একসময় সচ্ছল কৃষক কালামের ঘরে এখন দারুণ অভাব। মামলার খরচ মেটাতে এবং আপসরফা করতে জমি-জিরাত সব গেছে। যে সদ্যবিবাহিত বউ ঘরে রেখে গ্রেফতার হয়েছিল, অভাবের তাড়নায় তাকে চট্টগ্রামে গার্মেন্ট কারখানায় চাকরি নিতে হয়েছে।
একদিন জেলগেটে পারভীনকে দেখাতে বউকে খবর দিয়েছিল। সর্বাঙ্গে দারিদ্র্যের চিহ্নমাখা অসহায় কালো রঙের বাচ্চা মেয়েটার শরীরের হাড়গুলো বোধহয় গোনা যায়। অভাবে আর পুত্রশোকে কালামের মা শয্যাশায়ী, পুুত্রের বাড়ি ফেরার আশায় কোনোক্রমে বেঁচে আছে। কালামের বড় ইচ্ছা, মায়ের মৃত্যুর আগে কয়েকটা দিন যেন অন্তত তার সেবা করতে পারে। জানি না ওর এই আশাটাও পূর্ণ হবে কি-না। ব্যক্তিগত আনুগত্যেও কালাম অদ্বিতীয়। আমি কাশিমপুর জেলে আসার আগে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর একই ডিভিশন ওয়ার্ডে থাকতেন। কালাম তারও সেবক ছিল। একদিন বাবরের জন্য তিনতলায় পানিভর্তি ভারী বালতি ওঠানোর সময় পা পিছলে পড়ে সামনের দু’টি দাঁতই গেছে। প্রচুর রক্তপাত আর প্রচণ্ড যন্ত্রণায় দীর্ঘক্ষণ অজ্ঞান হয়ে সিঁড়ির ওপরই পড়ে ছিল। দাঁত দু’টি যত্ন করে রেখে দিয়েছে। আমাকেও একদিন দেখালো। সেই লুত্ফুজ্জামান বাবরের জন্য এখনও কালামের কত মায়া। চট্টগ্রামের আদালতে নাক দিয়ে গড়িয়ে রক্তপড়া বাবরের ছবি পত্রিকায় দেখে আমার সামনেই হু হু করে কেঁদে ফেললো।
আমার পিসির টাকা-পয়সার সব হিসাব এখন ও-ই রাখছে। পাঁচ টাকা বাজার খরচ বাঁচানোর জন্য প্রতিদিন কেরানীর সঙ্গে ঝগড়া করে। নিষেধ করে হার মেনেছি। এদিকে জেলের দরিদ্র বন্দিদের জন্য ভীষণ মমতা। সারা জেল ঘুরে বের করে কার লুঙ্গি নেই, কে খালি পায়ে হাঁটে, সাবানের অভাবে কাপড় কাঁচতে পারে না, দীর্ঘদিন ধরে একটা ফল খেতে পায় না। তারপর কাচুমাচু হয়ে আমাকে এদের অভাব মেটানোর জন্য অনুরোধ করে। আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে ভাবি, এই মানুষটাই এক কোপে মানুষ খুন করেছিল! কালাম খুনি তো অবশ্যই। তবে ভালো না মন্দ মানুষ, সেই বিচারের ভার পাঠকের ওপরই ছেড়ে দিলাম।
উইকিলিক্সের লিক নিয়ে সারা পৃথিবীতে যে তোলপাড় চলছে, জেলে বসেও তার কিছুটা আভাস পাচ্ছি। পত্রিকায় পড়লাম, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ভারতের হস্তক্ষেপের তথ্য-প্রমাণ ফাঁস করেছে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ওয়েবসাইটটি। উইকিলিক্স ঢাকায় তিন দেশের দূতাবাসের যেসব গোপন নথিপত্র প্রকাশ করেছে, তার মধ্য দিয়ে যে চিত্র ফুটে উঠেছে সেটি মোটামুটি নিম্নরূপ :
১. বাংলাদেশে কথিত ইসলামী সন্ত্রাস দমনের বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং তারা পরস্পরের যোগসাজশে এখানে সবকিছু করছে।
২. র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব ঘটনা সম্পর্কে বিশদ অবহিত হওয়া সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিভিন্ন পন্থায় সংস্থাটির সঙ্গে সহযোগিতা করে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ভারতের অভিন্ন মত হচ্ছে : এদেশে ইসলামী ‘জঙ্গিদের’ দমনে র্যাবই তাদের সবচেয়ে কার্যকর ও বিশ্বস্ত মিত্র।
৩. র্যাব বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে গঠিত হওয়ায় সংস্থাটিকে মহাজোট সরকারের নীতিনির্ধারকরা যথেষ্ট সন্দেহের দৃষ্টিতেই দেখে থাকে। ক্ষমতাগ্রহণের পর শেখ হাসিনা র্যাব বিলুপ্ত করা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করলে তাকে সেখান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টি এবং সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী সরিয়ে আনেন।
৪. একপর্যায়ে মার্কিন প্রশাসন র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্ত করতে চাইলে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনাগ্রহ দেখায় এবং সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকে।
৫. এদেশের সুশীল (?) সমাজ র্যাব কর্তৃক ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে নীতিগতভাবে সমর্থন করে। তারা মনে করে, দুর্নীতিপরায়ণ ও অকার্যকর বিচার বিভাগ দিয়ে সন্ত্রাসীদের সাজা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টার পরিবর্তে ক্রসফায়ার অব্যাহত রাখাই উত্তম।
৬. বাংলাদেশের নতুন যে বিতর্কিত শিক্ষানীতি সম্প্রতি সরকার ঘোষণা করেছে, তার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এদেশে কথিত ইসলামী সন্ত্রাসবাদ দমনের কৌশল হিসেবে ইসলামী শিক্ষায় পরিবর্তন আনাটাকে যুক্তরাজ্য জরুরি মনে করে এবং তারা এই লক্ষ্যপূরণে কাজ করে যাচ্ছে।
৭. উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি খনন করার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টি মহাজোট সরকারের ওপর চাপপ্রয়োগ করেছেন। জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ইলাহী চৌধুরী মার্কিনিদের সঙ্গে একমত পোষণ করে এ ব্যাপারে জনমত সৃষ্টি এবং সংসদকে প্রভাবিত করার কৌশল নিয়েছেন।
উইকিলিক্সের প্রকাশিত গোপন তথ্যে অজানা কিংবা অবাক হওয়ার মতো কোনো বিষয় খুঁজে পাইনি। বাংলাদেশের ষোলো কোটি মানুষকে নিয়ন্ত্রণের নীলনকশা প্রণয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও ভারতের কৌশলগত মৈত্রীর কাহিনী সেই এক-এগারো’র ক্যুদেতা থেকে একনাগাড়ে বলে যাচ্ছি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ (জুনিয়র)-এর স্যামুয়েল হান্টিংটন প্রভাবিত ইসলামবিদ্বেষী ডকট্রিন এবং তার প্রতি শেখ হাসিনা ও তদীয় মার্কিন-জামাই পুত্রের প্রকাশ্য সমর্থনের বিষয়ে আমার অব্যাহত লেখালেখি এদেশের মার্কিন-ভারতের দালালদের চরমভাবে বিক্ষুব্ধ করেছে। এই বছর মে মাসের ফারাক্কা দিবসে পদ্মার চরের গণজমায়েতে ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের যে অপরিসীম ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণের দাবি আমার গ্রেফতারকে ত্বরান্বিত করেছিল। সুতরাং আইনবহির্ভূতভাবে আমার দেশ বন্ধ, আমাকে গ্রেফতার ও নির্যাতন নিয়ে গুলশান-বারিধারায় কথিত গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার ধ্বজাধারীরা যে নীরবতা পালন করেছে, সেটাকে এদেশে বর্তমান সরকারের বাকস্বাধীনতা হরণের নীতির পক্ষে মৌন সম্মতি ধরে না নেয়ার কোনো যুক্তি নেই।
বিএনপি সরকারের আমলে সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের চিহ্নিত সব দালাল পত্রিকার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটলে এই বিদেশিদের চিত্কারে কান পাতা যেত না। উইকিলিক্সের ফাঁস করা তথ্যে আমার এতদিনের লেখালেখির সত্যতা যে প্রমাণিত হয়েছে, এটুকুতেই আমি যারপরনাই আনন্দিত। কবে মুক্তি পাব কিংবা আদৌ মুক্তি পাব কি-না, জানি না। তবে যতদিন কলম ধরার শক্তি-সামর্থ্য থাকবে, সে অবধি আমার ধর্মবিশ্বাস, মাতৃভূমি এবং জনগণের পক্ষে লিখেই যাব। লেখাকে পেশা হিসেবে নেয়ার জন্য যে জ্ঞান, মেধা, দক্ষতা ও কল্পনাশক্তির প্রয়োজন হয়, তার কোনোটাই আমার নেই। তার পরও লিখে যাচ্ছি প্রাণের তাগিদে, আন্তর্জাতিক চক্রান্তের বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির প্রত্যাশায়।
বাংলাদেশের জনগণের সামনে এক বিরাট প্রশ্ন আজ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়েছে। তারা কি সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের পদতলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব সম্পূর্ণভাবে বিসর্জন দিয়ে নামেমাত্র স্বাধীন দেশের নাগরিকের হীনমন্যতা নিয়ে বেঁচে থাকবে, নাকি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রকৃত স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করবে, সেই প্রশ্নের জবাব জনগণকেই খুঁজতে হবে। উইকিলিক্স এবং এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ আজ অনেকেরই চোখ খুলে দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাসাঞ্জকে ধ্বংস করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দুর্বল মানুষগুলোর তাকে অভিনন্দন জানানো উচিত।
উইকিলিক্স যখন হাটে হাঁড়ি ভাঙছে, সেই একই সময়ে লন্ডনের সাম্রাজ্যবাদী মুখপত্র দি ইকোনমিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের জন্য নতুন এক হাস্যকর সার্টিফিকেট নিয়ে হাজির হয়েছে। তাদের গবেষণা (?) অনুযায়ী, এ বছর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনায় বাংলাদেশ নাকি আট ধাপ এগিয়ে বিশ্বে ৮৩ নম্বরে পৌঁছেছে। যে দেশে একদিন অন্তর অন্তর ক্রসফায়ারে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে, স্বাধীন বিচার বিভাগ তামাশার বস্তুতে পরিণত হয়েছে, সংবাদপত্র ও বাকস্বাধীনতা কেবল সংবিধানের পাতায় সীমাবদ্ধ, ভিন্নমতাবলম্বীদের বানোয়াট মামলায় ধরে ধরে জেলে পোরা হচ্ছে, রিমান্ড ও শ্যোন অ্যারেস্ট নামক নির্যাতনের হাতিয়ার যত্রতত্র ব্যবহৃত হচ্ছে, বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ করার অধিকার পর্যন্ত নেই, সেরকম একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের এমন সুবাতাস ইকোনমিস্টের গবেষকরা কোথায়, কেমন করে খুঁজে পেলেন, তা তারাই ভালো জানেন। আমি তো মনে করি, বর্তমান বছরটি এদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক ন্যক্কারজনক নজির হিসেবেই ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সচেতন পাঠক উইকিলিক্সের সঙ্গে ইকোনমিস্টের প্রশংসাপত্র মেলালেই সাম্রাজ্যবাদের খেলাটা সহজেই ধরে ফেলতে পারবেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, লন্ডনের এই পত্রিকাটি সর্বত্র সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের পক্ষাবলম্বন করেছে। শেখ হাসিনার মিত্র নির্বাচনে কোনো ভুল হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.