কোনো রুশকে যুক্তরাজ্যের কাছে হস্তান্তর সম্ভব নয়

২০০৬ সালে লন্ডনে ক্রেমলিনের সমালোচক আলেকসান্দার লিদভিনেনকোর হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজনকে ব্রিটেনের কাছে হস্তান্তর করবে না রাশিয়া।
গতকাল সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ মস্কো সফররত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। এর আগে অপর এক অনুষ্ঠানে ক্যামেরন বলেন, লিদভিনেনকোর হত্যাকারীকে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা ছেড়ে দেবে না যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনের অবসান ঘটাতে গতকাল রাশিয়া সফরে যান ক্যামেরন। ২০০৬ সালে লন্ডনে রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সাবেক এজেন্ট আলেকসান্দার লিদভিনেনকোর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু। ২০০৫ সালে ব্লেয়ারের পর এই প্রথম কোনো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মস্কো সফরে গেলেন।
লিদভিনেনকোর মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন সাবেক কেজিবি এজেন্ট আন্দ্রে লুগোভয়কে ব্রিটেনে ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে রাশিয়া।
মেদভেদেভ বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া বা তদন্তের জন্য কোনো রুশ নাগরিককে ফেরত পাঠানো বা অন্য কোনো দেশের হাতে তুলে দেওয়া যায় না।’ তিনি বলেন, ‘এটা সম্ভব নয়।’
এর আগে ক্রেমলিনের অরনেট হলে বৈঠকের শুরুতে মেদভেদেভ ক্যামেরনকে বলেন, ‘আমি আশা করছি এ সফর ফলপ্রসূ হবে।’ তিনি বলেন, ক্যামেরনের এ সফর ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষিত’। রুশ প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেন, ‘বছর কয়েক ধরে’ শীর্ষ ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুশ কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ ছিল না।
বৈঠকে লিদভিনেনকোর বিষয়টি উত্থাপনের জন্য দেশে দারুণ চাপের মধ্যে ছিলেন ক্যামেরন। গতকালই রুশ প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা। লিদভিনেনকোর মৃত্যুর সময় তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
ক্যামেরন তাঁর সফরে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার ও রাশিয়ায় ব্যবসা করা ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করবেন।
গতকাল রুশ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ক্যামেরন বলেন, ব্রিটিশ ও রুশ কর্মকর্তারা বেশ কয়েকটি চুক্তিতে সই করবেন।
ক্যামেরন বলেন, আলেকসান্দার লিদভিনেনকোর হত্যাকারীকে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা ছেড়ে দেবে না ব্রিটেন। তবে তিনি বলেন, লিদভিনেনকোর মৃত্যুর ঘটনায় সম্পর্কের টানাপোড়েন সত্ত্বেও দুই সরকারকে ‘ইটের বদলে পাটকেল সংস্কৃতির’ অবসান ও একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে দেওয়া ভাষণে ক্যামেরন সরাসরি লিদভিনেনকের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘কয়েকটি জটিল বিষয় আছে, যেগুলো পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’ তিনি বলেন, ‘লিদভিনেনকোর ঘটনা নিয়ে আমরা এখনো আপনাদের সঙ্গে একমত নই।’
ক্যামেরন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সাদামাটা ও নীতিনিষ্ঠ—যখন কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়, সেটি আদালতের বিষয়।’

No comments

Powered by Blogger.