১৩- সরকারের হেফাজতে সব মৃত্যুর হিসাব দিতে হয় না সেটাই বাস্তবতা

রকারের হেফাজতে মৃত্যু
সরকারের হেফাজতে সব মৃত্যুর হিসাব যে বাংলাদেশে দিতে হয় না সেটাই বাস্তবতা। দরিদ্র পরিবারের নির্বোধ ছেলেটির স্থান হলো নিখোঁজদের তালিকায়। মৃতদেহ গায়েব করে দেয়ার বন্দোবস্ত সহজেই হয়ে গেল। ঝামেলা বাধালো অবুঝ স্ত্রী। সে মনে করে, তার স্বামী এখনও বেঁচে আছে। অল্প বয়সী মেয়েটি অসহায় বাচ্চাটিকে কাঁখে নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ক’দিন পরপরই স্বামীর খোঁজে আসে...

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রতি জনগণের মোহ যে কাটতে শুরু করেছে, সেটি ক’দিন আগের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে তাদের বিপর্যয়ের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে। চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, তিনবারের নির্বাচিত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতো জাঁদরেল রাজনীতিবিদের বিরোধী মোর্চার স্বল্পখ্যাত প্রার্থী মনজুর আলমের কাছে লাখো ভোটের বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের মাধ্যমে সরকারের প্রতি চট্টগ্রামের ভোটারদের অনাস্থা প্রকাশ পেয়েছে। কেবল বিদেশিদের সমর্থনকে পুঁজি করে কোনো স্বৈরশাসকই যে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না, তারও সিগন্যাল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জনসমর্থন হারালে একটি ফ্যাসিবাদী শাসক যে আচরণ সচরাচর করে থাকে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে বিরোধী দলের প্রতি সরকারের নিপীড়ন লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকার মনে করছে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে নির্মমভাবে ব্যবহার করে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনের তীব্রতা বাড়ানো হলে মাঠের কর্মীরা হতোদ্যম হয়ে পড়বে, যার প্রতিক্রিয়ায় এদেশের জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাকে একেবারে নির্মূল না করা গেলেও নিদেনপক্ষে বিলম্বিত করা যাবে। মার্কিন-ভারত মোর্চাও কৌশলগত কারণে সম্ভবত সেক্যুলার গোষ্ঠীকে এবার অন্তত এক সংসদ মেয়াদের অতিরিক্ত সময় ক্ষমতাসীন দেখতে আগ্রহী। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার জাতিকে ২০২১ সালের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ২০২১ আসার আগে দেশে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে যে আরও দু’টি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, সেই বাস্তবতা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয় বলেই মনে হচ্ছে না। বিএনপির ক্ষেত্রে সরকারের কৌশল হচ্ছে রাস্তায় দাঁড়ালেই বেধড়ক পিটুনি লাগাও এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করে শ্যোন অ্যারেস্টে বিনাবিচারে অনন্তকাল জেলে পুরে রাখ। তারপর রিমান্ডের ওষুধ তো আছেই। জামায়াতে ইসলামীর জন্য এক যুদ্ধাপরাধই যথেষ্ট। অন্যান্য ইসলামী দলকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে তাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে পারলেই সরকারি দলের রাজনীতি মোটামুটি নিষ্কণ্টক। এই অসুস্থ প্রক্রিয়ার অবধারিত পরিণতিতে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রযন্ত্র জবাবদিহিবিহীন এক ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীর রূপ নিয়ে অসহায় জনগণের সামনে আবির্ভূত হয়েছে। অথচ আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনাসহ দলিলটির বিভিন্ন ধারায় নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বার বার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। সেই ধারাগুলোতে প্রদত্ত নিশ্চয়তার একটি তালিকা পাঠকের অবগতির জন্য এখানে উদ্ধৃত করছি। সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে বাস্তব অবস্থা মেলালে সহজেই উপলব্ধি করা যাবে এই সরকার আদতেই বাংলাদেশের সংবিধানকে ছেঁড়া তেনার অধিক মূল্য দিচ্ছে না।
প্রস্তাবনা : আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।
অনুচ্ছেদ-১১ : প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হইবে।
অনুচ্ছেদ-২৭ : সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।
অনুচ্ছেদ-৩১ : আইনের আশ্রয় লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহার লাভ যে কোনো স্থানে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।
অনুচ্ছেদ-৩২ : আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।
অনুচ্ছেদ-৩৩ (১) : গ্রেফতারকৃত কোনো ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেফতারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শের ও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না।
(২) : গ্রেফতারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেফতারের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে (গ্রেফতারের স্থান হইতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে) হাজির করা হইবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাঁহাকে তদতিরিক্তকাল প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না।
অনুচ্ছেদ-৩৫ (২) : এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাইবে না।
(৪) কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাইবে না।
(৫) কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না।
অনুচ্ছেদ-৩৭ : জনশৃঙ্খলা বা জনস্বার্থের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধসাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
অনুচ্ছেদ ৩৯ (১) : চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হইল।
(২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ সাপেক্ষে—
ক. প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং (খ) সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হইল।
অনুচ্ছেদ ৪৪ (১) : এই ভাগে প্রদত্ত অধিকারসমূহ বলবত্ করিবার জন্য এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের নিকট মামলা রুজু করিবার অধিকারের নিশ্চয়তা দান করা হইল।
আওয়ামী লীগ মনে-প্রাণে, অস্থি-মজ্জায় সর্বতোভাবে একটি নির্ভেজাল ফ্যাসিবাদী দল হওয়ায় তাদের রাষ্ট্র পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে বিস্মিত হওয়ার সুযোগ কম। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এবং বিগত দেড় বছরে আমরা দলটির অভিন্ন রাজনৈতিক দর্শনের ধারাবাহিকতা প্রত্যক্ষ করেছি এবং করছি। মোটা দাগে এবারের পার্থক্যটা তৈরি করে দিয়েছে টুইন টাওয়ার পরবর্তী জর্জ বুশতত্ত্ব এবং সেই তত্ত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের পক্ষে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অকুণ্ঠ সমর্থন। আওয়ামী লীগের বিপরীতে প্রতিষ্ঠা থেকেই বিএনপির পরিচিতি ছিল পরমতসহিষ্ণু একটি তুলনামূলকভাবে উদার, মধ্যপন্থী দল হিসেবে। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সময়কালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং জামায়াতে ইসলামীর সমন্বয়ে গঠিত বিরোধী মোর্চার চরম হিংসাত্মক আন্দোলনের মুখে যথেষ্ট সংযম ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং আইনের শাসনে বিশ্বাসী একজন রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ২০০২ সালে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ পরিচালনা এবং পরবর্তী সময়ে র্যাব ও পুলিশের হাতে অসংখ্য ‘ক্রসফায়ার’ তার আগের পরিশীলিত ভাবমূর্তিকে বেশ খানিকটা কালিমালিপ্ত করেছে। ফলে, আজ যে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আমাদের আতঙ্কিত করে তুলেছে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার যে ভয়াবহ বিচ্যুতি গণমানুষের বেঁচে থাকাকে ক্রমেই কঠিন করে তুলেছে, তার দায়-দায়িত্ব থেকে তিনিও একেবারে মুক্ত থাকতে পারছেন না।
নব্বই-এর গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী এবং চরম দুর্নীতিপরায়ণ এরশাদ সরকারের পতনের পর এ দেশের গণমানুষ গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিল, বিগত দুই দশকে বড় অকরুণভাবে সেই স্বপ্নকে হত্যা করা হয়েছে। এই স্বপ্নভঙ্গের পরম্পরা বর্ণনার আগে রাষ্ট্রযন্ত্রের আজকের চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে অন্তত কয়েকটি উদাহরণ দেয়ার আবশ্যকতা রয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের নামে যে বর্বরতা চলছে, সেটি আপন অভিজ্ঞতার আলোকেই পাঠকের কাছে ১১ কিস্তিতে তুলে ধরেছি। জেলে আসার পর অন্য বন্দিদের কাছ থেকে ক্রসফায়ার এবং গুম-খুনের যেসব কাহিনী শুনেছি, তারই কয়েকটি এবার বর্ণনা করছি।
প্রথম গল্পটি একজন উঠতি মাস্তানের বড়ই হ্রস্ব জীবনের কাহিনী। কলেজের গণ্ডি পেরুনোর পর চাকরি জোটেনি; কিন্তু প্রেম করে বউ ঘরে নিয়ে এসেছিল। চটপট এক পুত্রসন্তানের পিতাও হয়েছিল সে। বড় মাস্তানদের ফাই-ফরমাশ খাটা এবং ছোটখাটো অপরাধই আয়-রোজগারের একমাত্র পথ। একদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ধরা পড়ায় অবধারিতভাবে রিমান্ডে যেতে হলো। সেখানে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য যে টাকা-পয়সার দরকার, তার সংস্থান দরিদ্র পরিবারটিতে ছিল না। নির্বিচারে মার শুরু হলো। প্রথমে হাত, পা, বুট ব্যবহৃত হলো, তারপর লাঠি এবং সর্বশেষ দেশি এবং বিদেশি বিশেষ যন্ত্রপাতির ব্যবহার। দাবি একটাই, অস্ত্র বের করে দে। সদ্য অপরাধ জগতে যোগ দেয়া, দলে সামান্য ফাই-ফরমাশ খাটা। ফুট সোলজারের কাছে অস্ত্রভাণ্ডারের খবর থাকে না। ছেলেটিও কোনো খবর দিতে পারেনি। নির্যাতনের মাত্রা বাড়ল। এতখানি অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একসময় মারা গেল ছেলেটি। সংবিধানে যা-ই লেখা থাকুক না কেন, সরকারের হেফাজতে সব মৃত্যুর হিসাব যে বাংলাদেশে দিতে হয় না সেটাই বাস্তবতা। দরিদ্র পরিবারের নির্বোধ ছেলেটির স্থান হলো নিখোঁজদের তালিকায়। মৃতদেহ গায়েব করে দেয়ার বন্দোবস্ত সহজেই হয়ে গেল। ঝামেলা বাধালো অবুঝ স্ত্রী। সে মনে করে, তার স্বামী এখনও বেঁচে আছে। অল্প বয়সী মেয়েটি অসহায় বাচ্চাটিকে কাঁখে নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ক’দিন পরপরই স্বামীর খোঁজে আসে। বধূটিও বড়ই দরিদ্র পরিবারের। পিতার এমন সামর্থ্য নেই যে, বিধবা কন্যা এবং এতিম নাতির দায়িত্ব গ্রহণ করে। স্বামীর বন্ধুদের কেউ কেউ এখনও জেলে আছে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সেসব বন্দির সঙ্গে মেয়েটি দেখা করে পঞ্চগড়, নেত্রকোনা অথবা অন্য কোনো জেলা কারাগারে। স্বামী বন্দি হয়ে আছে এমন উড়ো খবর দিয়ে স্বামীকে খুঁজে দিতে অনুরোধ করে। সেসব অচেনা জায়গায় নিজেই গিয়ে খোঁজ করবে কিনা, সেই পরামর্শও চায়। পুলিশ হেফাজতে একসঙ্গে বন্দি অবস্থায় যে বন্ধুটির চোখের সামনে হতভাগ্য, পথভ্রষ্ট তরুণটি চিরতরে চোখ বন্ধ করেছিল, তার সঙ্গে আমার জেলে দেখা হয়েছিল। বন্ধু-পত্নীকে সত্য কথাটি বলবে কিনা, পরামর্শ চাইলে আমি কোনো জবাব দিতে পারিনি। চুপ করে সেই মাস্তান ছেলেটির অশ্রুভরা চোখের দিকে কেবল তাকিয়ে থেকেছি।

No comments

Powered by Blogger.