৩- আদালত অবমাননা মামলায় আমার সাজা প্রতিটি সংবাদকর্মীর মাথার ওপর ডেমোক্লিসের তরবারির মতো ঝুলছে

ন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে আমার দেশ সম্পাদকের পরিচয়টাই মুখ্য
... সবচেয়ে বড় ঝামেলা হলো সরকার, আদালত এবং সুশীল (?) মিডিয়া আমাকে সাংবাদিক কিংবা সম্পাদক মনে না করলেও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং সাংবাদিকদের স্বার্থ ও অধিকার সংরক্ষণকারী সবগুলো সংগঠনের কাছে মাহমুদুর রহমানের আমার দেশ সম্পাদকের পরিচয়টাই মুখ্য।...

প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আদেশ প্রদানের ঘোষণা দিলেন। প্রথা অনুযায়ী আমি এবং মামলার অপর অভিযুক্ত হাসমত আলী দু’পাশের আসনগুলোর মাঝখানের করিডোরে দণ্ডায়মান হলাম। সংক্ষিপ্ত রায় দিতে দু’মিনিটের অধিক সময় লাগেনি। প্রধান বিচারপতি বললেন, মাহমুদুর রহমান তার মন্তব্য প্রতিবেদনের মাধ্যমে আদালতের নামে কুত্সা রটিয়েছেন, অতএব তিনি দোষী। তবে আদালত তার অপরাধকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে তাকে একশ’ টাকা জরিমানা অনাদায়ে একদিনের কারাদণ্ড দিচ্ছে। প্রকাশক হাসমত আলী নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো। এই রায় ঘোষণা করেই লর্ডশিপরা এজলাস ত্যাগ করলেন। তারা চলে যাওয়ামাত্র করমর্দনের পালা শুরু হলো। রফিক ভাই, রাজ্জাক ভাই, মোহাম্মদ আলী ভাইসহ আমার পক্ষের সব আইনজীবীর মুখে তখন স্বস্তির হাসি। এক ফাঁকে অ্যাটর্নি জেনারেল তার দলবল নিয়ে অনেকটা নিঃশব্দেই এজলাস থেকে নিষ্ক্রান্ত হলেন।
আমি রাজ্জাক ভাইকে তখনই জানিয়ে দিলাম একশ’ টাকা জরিমানা দেয়ারও প্রশ্ন ওঠে না। সুতরাং সাজার মেয়াদ একদিন বৃদ্ধি পেয়ে আগামী বছর মার্চের ১৯-এ পৌঁছাবে। উপস্থিত সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে একগাদা আইনের বই দু’হাতে ধরে প্রিজন ভ্যানে উঠলাম। জেলে ফিরে দেখি সাত নম্বর সেলের সবাই বেজায় খুশি। বিকেলে ছয় নম্বর সেলের মুকুল এসে এক বেমক্কা প্রশ্ন করল। আমার বিরুদ্ধে প্রথম মামলার অভিযোগ ছিল একটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ছাপানো। সেই মামলায় বেকসুর খালাস পাওয়ার পরিবর্তে কপালে জুটলো নজির সৃষ্টিকারী সর্বোচ্চ কারাদণ্ড এবং দেশের আইন ভঙ্গ করে জরিমানা। আজকের মামলার অভিযোগ উচ্চ আদালতের পচন নিয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য প্রতিবেদন লেখা। অথচ সাজা কেবল একশ’ টাকার অর্থদণ্ড। একই ধরনের অভিযোগে দায়ের করা দু’টি মামলার ফল দু’রকম হয় কী করে? কোন রায়টা তাহলে সঠিক? মুকুলের তত্পর্যপূর্ণ প্রশ্ন নিয়ে রাতে অনেক ভেবে একটা জবাব খাড়া করলাম, মানা-না মানা পাঠকের অভিরুচি।
আমার প্রথম মামলা চলাকালীন প্রধান বিচারপতির পদ নিয়ে বিচারপতি এমএ মতিন এবং বিচারপতি খায়রুল হকের মধ্যে ধুন্ধুমার লড়াই চলছিল। বিচারপতি মতিন জজিয়তিতে সিনিয়র হলেও আওয়ামী কানেকশনের জোরে বিচারপতি খায়রুল হক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে ছিলেন। আমার মামলা বিচারপতি মতিনকে প্রধানমন্ত্রীর সুনজরপ্রাপ্তির এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছিল। তিনি এই সুযোগ দু’হাতে জাপটে ধরে আমার প্রতি খড়গহস্ত হয়েছিলেন। মামলার পয়লা দিন থেকেই তার আক্রমণাত্মক ভাবভঙ্গি দর্শনে মামলার রায় সম্পর্কে আমি আগাম ধারণা পেয়ে যাই। মামলার শুনানি চলাকালে এই বর্ষীয়ান বিচারপতি বার বার বলছিলেন, truth is no defence। তার অগ্রণী ভূমিকার কারণে আমাকে সাজা দিতে উদগ্রীব অন্যান্য লর্ডশিপের মুশকিল অনেকটাই আসান হয়ে যায়। পরে অবশ্য বিচারপতি মতিনের আম-ছালা দুটোই গেছে। প্রধান বিচারপতি তিনি তো হতে পারেনইনি; উপরন্তু চূড়ান্ত অপমানিত হয়ে তাকে সুপ্রিমকোর্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। আমার মামলায় তার উপরি উক্ত উদ্ধৃত বক্তব্য সম্ভবত তাকে বাকি জীবনে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াবে।
প্রধান বিচারপতি মো. ফজলুল করিমের দু’টি সমস্যা ছিল। দু’জন চরম বিতর্কিত ব্যক্তিকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করাতে অসম্মত হওয়ায় সরকার তার প্রতি রুষ্ট ছিল। তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রধানমন্ত্রীকে অধিকতর রাগান্বিত করার ঝুঁকি আর নিতে চাননি। সেক্ষেত্রে সঠিক সময়ে আমি চমত্কার বলির পাঁঠা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলাম, যাকে প্রধানমন্ত্রীর বেদীমূলে বিসর্জন দিয়ে প্রধান বিচারপতি মো. ফজলুল করিম ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে চেয়েছিলেন। আমার সঙ্গে অতীতের বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়া সম্পর্ক তার জন্যে দ্বিতীয় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। আমাদের গুলশানের ফ্ল্যাটটিতে ২০০৩ সালে আসার আগপর্যন্ত আমি তার বারিধারার গৃহে প্রায় পাঁচ বছর একটানা ভাড়াটিয়া হিসেবে ছিলাম। এই তথ্য সরকার ও তাদের সমর্থক সুশীল (?) মিডিয়ার জানা থাকার কথা। আমার বিচার প্রশ্নে 'conflict of interest'-এর ইস্যু তুলে তাকে লাইনে রাখা ক্ষমতাসীনদের পক্ষে সম্ভবত সহজ হয়েছে। অবশ্য বারিধারার ওই পাঁচ বছরে তার সঙ্গে কখনও সাক্ষাত্ হয়েছে এমন কোনো স্মৃতি স্মরণে নেই। প্রধান বিচারপতি মো. ফজলুল করিম আইনের ভাষায় বিব্রত বোধ করে (embarrassed) বিচারকার্য থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান বিচারব্যবস্থা এতটা নীতিবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত হলে তো আর আমাকে সেখানকার পচনরোধে কলমই ধরতে হতো না। মাননীয় বিচারপতিদের ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া ও দুর্বলতার সঙ্গে আমার বিষয়ে যুক্ত হয়েছিল প্রচণ্ড শ্রেণীগত অহমিকাবোধ। এতদিন ধরে তারা দেখে এসেছেন আদালত অবমাননার অভিযোগের সমন হাতে পাওয়ামাত্র সমাজের তথাকথিত বিবেক এবং কেউকেটার দল নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করে করজোড়ে তাদের পদতলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। অথচ অজ্ঞাত কুলশীল, কোথাকার কোন মাহমুদুর রহমান ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করে? বাংলাদেশে কোনো লর্ডের অস্তিত্ব না থাকা সত্ত্বেও এবং ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসের কারণে আমাদের আল্লাহ ছাড়া কাউকে লর্ড হিসেবে মেনে নেয়ার সুযোগ না থাকলেও এজলাসে মাথা ঝুঁকিয়ে লর্ড সম্ভাষণের ঔপনিবেশিক কুপ্রথা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মনে পর্বতসম অহমিকাবোধ সৃষ্টি করলে তাদের দোষ দেয়া যায় না। আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় এই বিচিত্র সম্ভাষণ নিয়ে আমার প্রায়ই সমস্যা হচ্ছিল। আমি বার বার মাননীয় বলে গুরুতর অপরাধ করে ফেলছিলাম এবং ব্যারিস্টার রাজ্জাক, ব্যারিস্টার মওদুদ ও অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান পাশ থেকে প্রতিবার আমাকে সংশোধন করে লর্ডশিপ ডাকতে বলছিলেন। তার ওপর সামনের ব্যক্তি যতই ক্ষমতাশালী হোন না কেন, আমি চোখে চোখ রেখে এবং মেরুদণ্ড সোজা করে কথা বলতে অভ্যস্ত। সব মিলিয়ে আমাকে দেখে সেদিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের প্রচণ্ড জাত্যাভিমান জেগে উঠেছিল। তুমি কে হে হরিদাস পাল? এই এলিটিস্ট, শ্রেণীবৈষম্যমূলক মানসিকতা থেকেই শুনানি চলাকালে তারা আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের চূড়ান্ত করেছেন। বিচারপতি এস কে সিনহা আমার জীবনের যত্সামান্য অর্জনকে এক লহমায় উড়িয়ে দিয়ে অবিচারপতিসুলভ ভাষা প্রয়োগ করে ধমকে উঠেছেন, আপনি এই সেই! বিচারপতি খায়রুল হক ঠোঁটের কোণে বিদ্রূপ ও ব্যঙ্গের হাসি সর্বক্ষণ ঝুলিয়ে রেখে আমার সাংবাদিকতার পরীক্ষা নিয়েছেন। বিচারপতি এমএ মতিন রাগান্বিত হয়ে প্রশ্ন করেছেন, সকলেই যখন মার্জনা ভিক্ষা করছে তখন আপনি কেন সকল দায় মাথায় তুলে নিচ্ছেন? প্রধান বিচারপতি মো. ফজলুল করিম অক্ষম ক্রোধে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে আমাকে chance editor বলে ব্যঙ্গ করেছেন। প্রকাশ্য আদালতে তাদের এই ব্যবহারের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিসুলভ প্রজ্ঞা, গাম্ভীর্য, সহনশীলতা ইত্যাদি খুঁজে সময় নষ্ট করা এবং হতাশ হওয়ার কোনো অর্থ হয় না। বরং আমার মামলার শুরু থেকে শেষ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এদেশের বিচারব্যবস্থার যে বহুমাত্রিক চিত্র চমত্কারভাবে ফুটে উঠেছে, তাতে সমাজ-বিশ্লেষকদের চিন্তার অনেক খোরাক মিলেছে। এই প্রাপ্তি আমি ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেছি। প্রথম মামলায় তাই অনুরাগ-বিরাগ, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, জাত্যাভিমান, অসহায়ত্ব, রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা, এলিটিজম ইত্যাকার সব অনুভূতিরই প্রভাব পড়েছে।
দ্বিতীয় মামলার সময় পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। প্রধান বিচারপতি পদ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অবসান হয়েছে। পরাজিত বিচারপতিদ্বয় এমএ মতিন এবং শাহ নাঈম মো. মমিনুর রহমান তাদের ডিঙানো প্রধান বিচারপতির অধীনে বেঞ্চে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে আছেন। তাদের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে কতখানি বিবেক ও আদর্শ কাজ করছে এবং কতখানি অপ্রাপ্তির হতাশা, সেটি তারাই ভালো জানেন। বিজয়ী বর্তমান প্রধান বিচারপতির আপাতত নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের প্রয়োজন নেই। তিনি বরং কৌশলগত কারণে ন্যায়নিষ্ঠার মুখোশ পরিধানে অধিকতর আগ্রহী। তার ব্যক্তিগত প্রচার এবং public relations-এর দায়িত্ব নিয়েছে সুশীল (?) ডেইলি স্টার। এদিকে প্রথম মামলায় আমার সাজা নিয়ে দেশে-বিদেশে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তার জন্যে সরকার প্রস্তুত ছিল না। সরকার হয়তো ভেবেছিল সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী ‘ইসলামিস্ট’ মাহমুদুর রহমানের সাজাপ্রাপ্তিতে দিল্লি-ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। সমস্যা হলো, সেসব দেশে শাসকশ্রেণীকে ভোটারদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। অতএব, প্রকাশ্যে সংবাদপত্র ও ভিন্নমত দলনকে সমর্থন করা সম্ভব হয় না। এদেশে সুশীল (?) মিডিয়া গ্রুপও কিছুটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। আমার গ্রেফতার ও সাজায় তাদের পরমানন্দ বিনা ফিল্টারে প্রকাশ করলে সুশীলত্বের গায়ে কাদার ছিটা লাগে। সবচেয়ে বড় ঝামেলা হলো, সরকার, আদালত এবং সুশীল (?) মিডিয়া আমাকে সাংবাদিক কিংবা সম্পাদক মনে না করলেও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং সাংবাদিকের স্বার্থ ও অধিকার সংরক্ষণকারী সবগুলো সংগঠনের কাছে মাহমুদুর রহমানের আমার দেশ সম্পাদকের পরিচয়টাই আজ মুখ্য। তদুপরি আমার সঙ্গে পেশাদার সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানেরও জেল হয়েছে। সুতরাং, আপিল বিভাগের সংবিধান ও দেশের আইন লঙ্ঘন করে দেয়া সাজা সংবাদপত্র জগতে যে একটা মন্দ নজির সৃষ্টি করল, এই সত্য অস্বীকার করা কঠিন। লন্ডনবাসী আওয়ামী কলামিস্ট আগাচৌ সে কারণেই মাহমুদুর রহমানকে অন্য মামলায় সাজা দিয়ে জেলে ভরে রাখা হলো কেন এই আক্ষেপ করে কলাম লিখতে বাধ্য হয়েছেন। আমার গায়ে সংবাদপত্রের গন্ধটাই তাদের যাবতীয় অস্বস্তির কারণ। এদিকে ভবিষ্যতের আশঙ্কাও এই গোষ্ঠীকে এখন থেকেই তাড়া করে বেড়াচ্ছে। একবার আইন যখন ভাঙাই গেছে, তখন একই রকম বিপদে তারাও যে পড়বেন না সেই নিশ্চয়তা ভারত-মার্কিন জোট কি দিতে পারবে? আদালত অবমাননা মামলায় আমার সাজা তাই আজ প্রতিটি সংবাদকর্মীর মাথার ওপর ডেমোক্লিসের তরবারির মতোই ঝুলছে। কাজেই দ্বিতীয় মামলার সময় সরকার, আদালত এবং ইসলামবিদ্বেষী সেক্যুলার মিডিয়া সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। আগামী বছর মার্চের ১৮ পর্যন্ত আমার জেলবাস নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এবার সম্ভবত আদালতের ওপর প্রধানমন্ত্রীর আগের চাপও ছিল না। কেবল অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পূর্ববত্ লাফালাফি করেছেন। তার বর্ণিত আমার ‘হিরোইজম’ রোগ সারানোর জন্যে আদালতের কাছে পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বায়না ধরেছিলেন।
অপর একটি বিষয় পুরোপুরি প্রাসঙ্গিক না হলেও একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক পরবর্তী প্রধান উপদেষ্টা হতে যেহেতু অতিমাত্রায় আগ্রহী, সুতরাং তার ভাবমূর্তিরও খানিকটা ঝাড়-পোছ দরকার। ডেইলি স্টার সেই কাজে ইতোমধ্যে কোমর বেঁধে লাগলেও প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক হয়তো ভেবেছেন তার মিডিয়াবান্ধব, সহনশীল ভাবমূর্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই মামলায় নমনীয় রায় সহায়ক হতে পারে। সর্বশেষ, মানবাধিকার সংগঠন fidh-এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মিজ ফ্লোরেন্স বেলেভিয়েরের আমার মামলা পর্যবেক্ষণ করতে প্যারিস থেকে উড়ে আসা লর্ডশিপদের ওপর হয়তো একটা বাড়তি চাপ হিসেবে কাজ করেছে। যাকগে, এই রায়ের পর আমার মুক্তির সম্ভাব্য তারিখ ১৯ মার্চ ২০১১। তবে রায় আছে রায়ের জায়গায় আর শেখ হাসিনা আছেন তার জায়গায়। কবে আমার মুক্তি মিলবে, সেটি নির্ভর করবে তার নির্দেশ এবং সর্বোপরি মহান আল্লাহর ইচ্ছার ওপর।

No comments

Powered by Blogger.