৭- জ্ঞাতি ভাইকে খুন করে আসা সেবক কালামকে দেখে গা ছমছম করছিল আমার

ড়াইয়ে আপনিই জিতবেন
...সকালে প্রিজন ভ্যানে উঠে দেখি, ভেতরটা সম্পূর্ণ ভেজা। কারণ জিজ্ঞাসা করে জানলাম, গতকাল এই ভ্যানে করেই বিডিআর সদস্যদের ঢাকায় নেয়া হয়েছিল। তারা দীর্ঘসময় তালাবদ্ধ থেকে অসুস্থ হয়ে বমি করেছে, যা আজ সকালেই ধোয়া হয়েছে।... একজন মাঝবয়সী কনস্টেবল গারদের শিকের ফাঁক দিয়ে এক কাপ রঙ চা এগিয়ে ধরে আশ্বাসের ভঙ্গিতে বললো—মনের জোর হারাবেন না, স্যার। আপনি সত্ পথে আছেন, এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত আপনিই জিতবেন।...

জেলের বড় কর্তাদের যুক্তিহীন নির্বোধ আচরণ সহ্য করা মাঝে মধ্যে বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। গতকালের দেখায় পারভীনকে রক্তচাপ সমস্যার কথা বলেছিলাম। আজ বাসা থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ এসেছে। সেই সঙ্গে পারভীন গাদাখানেক অন্যান্য ব্যবহার্য দ্রব্যও পাঠিয়েছে, যার মধ্যে একটা রেডিও এবং ছাতা ছিল। কারা কর্তৃপক্ষ সবকিছু আমার সেলে ঠিকঠাক পাঠিয়ে দিলেও অজানা কারণে ছাতাটা আটকে দিয়েছে।
নিরীহ ছাতা কী দোষ করল, বুঝলাম না। পাঠকদের জানিয়ে রাখছি, জেলকোড অনুযায়ী বন্দিরা এখন একটা করে রেডিও তাদের কাছে রাখতে পারেন। তবু, আমার ব্যাপারে প্রশাসনের অতি সতর্কতার কারণে রেডিওটা আটকালেও না হয় সেখানে সেন্সর করার যুক্তি খুঁজে পেতাম। নাকি জেল কর্তৃপক্ষ মনে করেছে ছাতাকে অস্ত্র বানিয়ে তাদের সঙ্গে আমি মারামারি করব! এসব সিদ্ধান্ত যারা নেয়, তাদের মস্তিষ্কের চিকিত্সা দরকার। আসলে রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গনেই অদক্ষতা ও দলবাজি মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। বিচার বিভাগের কথা লিখতে লিখতে তো রীতিমতো ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে পড়ছি। আমার সাজার প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত রায় দেখার সৌভাগ্য হয়নি। এর মধ্যে অলিউল্লাহ নোমান সাজা খেটে চলেও গেছে। রায় দেখবই বা কী করে, ওটা এখন পর্যন্ত লেখাই যে হয়নি। পারভীন কোত্থেকে শুনেছে, রায় লেখার দায়িত্ব যে বিচারপতি এমএ মতিনের ওপর ছিল, তিনি নাকি প্রধান বিচারপতি না হওয়ার মনোকষ্টে জানিয়ে দিয়েছেন রায় লিখবেন না। তাছাড়া আপিল বিভাগের এই বিচারপতি এখন অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে আছেন। তার চাকরির মেয়াদও এই ডিসেম্বরেই শেষ হচ্ছে। সুতরাং তিনি যে এই রায় আর লিখছেন না, সেটা বোধহয় অনেকটাই নিশ্চিত।
বিচারপতি এমএ মতিন অবসরে যাওয়ার পর প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক আপিল বিভাগের বাকি তিন বিচারপতির মধ্যে কোনো একজনকে হয়তো রায় লেখার দায়িত্ব দেবেন। আমার ধারণা বিচারপতি শাহ নাইম মো. মমিনুর রহমানও এই রায় লিখতে সম্মত হবেন না। তাছাড়া তিনি মূল রায়ের বিরোধিতা করে ভিন্ন মতও দিয়েছিলেন। আর বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের কর্মকাণ্ড ঘিরেই আমার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার উত্পত্তি হয়েছে। সুতরাং, তার রায় লেখার সম্ভাবনাও যথেষ্ট কম। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত বিচারপতি এস কে সিনহাই এই রায় লিখবেন। তবে ধারণা করতে অসুবিধে নেই যে সেই রায় হাতে আসার আগেই আমার সাজার মেয়াদ পূর্ণ হয়ে যাবে। ইদানীং আইনের বই নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। সেদিন জোসেফ রাজের (Joseph Raz) আইনের শাসনের (rule of law) থিসিস পড়ছিলাম। এক জায়গায় গিয়ে চোখ আটকে গেল। জোসেফ রাজ বলছেন, আইনের শাসনের পূর্বশর্ত হলো—'Courts must be accessible and staffed by an independent judiciary' (বিচারালয়ে নাগরিকের সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং আদালতে স্বাধীন মন-মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে)। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আমার অতিরিক্ত কোনো মন্তব্য বোধহয় নিষ্প্রয়োজন।
কাশিমপুরে নির্জন কারাবাসের দশদিন চলছে। ঢাকায় ফয়সাল এবং মেজর (অব.) জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে বারান্দায় বসে রোজ গল্প-গুজব করতাম। ছয় নম্বর সেলের মুকুল, সোহেল আর দালানের রফিক দিনে অন্তত একবার খোঁজ-খবর নিতে আসত। রাত ছাড়া নিঃসঙ্গ বোধ করার সুযোগ ছিল না। এখানকার পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ঢাকা জেলের ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস বজায় রেখেছি। তারপর সেই যে চেয়ার টেনে মাথা গুঁজে বসি, উঠি মাগরিবের সময়। মাঝখানে কেবল খাওয়া, গোসল এবং নামাজের বিরতি। পারভীন প্রতি সপ্তাহে বই না পাঠালে জীবন ধারণ কষ্টকর হতো। ফেলে আসা জীবনের কথা মনে হলে চোখ থেকে চশমা নামিয়ে প্রকৃতির দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি। আপনজনের প্রতি ঠিকমত দায়িত্ব পালন করিনি মনে হলে বড় কষ্ট পাই। ভাবি, মুক্ত জীবনে ফিরতে পারলে অতীতের ভুলভ্রান্তি শুধরে নেব। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষরা আমাকে কি আর মুক্ত জীবনে ফিরতে দেবে? অথবা মুক্তি পেলেও সবকিছু কি আগের মতো পাব?
বাংলাদেশে এখন ফ্যাসিস্ট শাসকশ্রেণী দেশ চালাচ্ছে। তারা আবার আন্তর্জাতিক এস্টাবলিশমেন্টের কাছ থেকে কৌশলগত সমর্থন পাচ্ছে। এত রক্তের বিনিময়ে প্রাপ্ত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকে ষোল কোটি মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের পরিবর্তে ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ অর্জনের পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকেই আমার অনুল্লেখ্য ক্ষমতা দিয়ে এই ঘৃণ্য লেনদেনের প্রতিবাদ করছি। ফলে, কেবল দেশীয় এজেন্টরাই নয়, তাদের সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী মনিবগোষ্ঠীও আমাকে কারান্তরালেই দেখতে চায়। সুতরাং আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত তো বটেই, আমার বন্দিজীবন আরও দীর্ঘ সময়কাল পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়া অসম্ভব নয়। আগামী মার্চে আমার মা চুয়াত্তর বছরে পা দেবেন। ততদিন সুস্থ থাকবেন কিনা, তাই বা কে বলতে পারে?
নিজের মা থেকে সেবক কালামের মায়ের গল্পে আসি।
গতকাল মাগরিবের নামাজ পড়ে বিছানায় শুয়ে আছি, কালাম এসে হাজির হলো। ইতস্তত করে বলল—স্যার একটু বসি? হারিকেনের আলো-আঁধারিতে আমার সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়ানো দেখল কি-না জানি না, তবে বিছানার কাছ ঘেঁষে মাটিতে বসল। কাশিমপুরে লক-আপের কঠিন নিয়মে পরিবর্তন আসায় আমাদের দীর্ঘক্ষণ গল্পে কোনো অসুবিধা হলো না। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের পরিণতিতে কালাম নিজের হাতে একজন জ্ঞাতি ভাইকে খুন করে জেলে এসেছে। জেলজীবনের এই পাঁচ মাসে আমি এমন অকপটে খুনের দায় স্বীকার করতে কাউকে দেখিনি। কালাম ছেলেটি চিত্রকর সুলতানের কল্পনার পেশিবহুল কৃষক, গায়ের রং আমার মতোই নিকষ কালো, সামনের একটা দাঁত ভাঙা। দাঁতটা এই কাশিমপুর জেলেই লুত্ফুজ্জামান বাবরের ফাই-ফরমাস খাটার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে ভেঙেছে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নাকি তাকে দাঁত বাঁধিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কালাম এখন মুক্ত জীবনে গিয়ে সুন্দর করে দাঁত বাঁধানোর স্বপ্ন দেখছে।
যাই হোক, ওর জেলপূর্ব জীবনে ফিরে যাচ্ছি। ঘটনার সময় শেরপুরের পঁচিশ বছরের তরতাজা যুবক কালামের জায়গা-জমি মন্দ ছিল না। ফসল ফলিয়ে যে আয় হতো, তা দিয়ে সংসার চালিয়ে ছোট ভাইবোনদের লেখাপড়ার খরচও মেটাতো কালাম। একখণ্ড উর্বর জমি নিয়ে জ্ঞাতিদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। সম্পত্তির বিরোধ একদিন মারামারিতে রূপ নেয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহের শেরপুর অঞ্চলে এমন সংঘর্ষ স্বাভাবিক ঘটনা। দু’পক্ষের হাতেই লাঠি, সড়কি, বল্লম, রামদা। সকালে এক প্রস্থ মারামারি শেষ করে খানিকটা আহত কালাম সবে ঘরে এসে চুপ করে বসেছিল। পাশে তখন সদ্য বিবাহিত আতঙ্কগ্রস্ত স্ত্রী। এমন সময় তার মা টলতে টলতে এসে ঘরের চৌকাঠে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন, তার দুই পা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। প্রতিপক্ষের নির্মম লাঠির আঘাতে হাঁটুর নিচের মাংস ফেটে গেছে। মাতৃভক্ত, স্বভাবে গোঁয়ার কালাম আর এক মুহূর্ত দেরি করেনি। খুঁটিতে গাথা কাতরা এক টানে বের করেই ছুটে গিয়ে জ্ঞাতিভাই শফিকুলের বুকে বসিয়ে দিয়েছে। কাতরা বুকে নিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছে শফিকুল। খুন করে না পালিয়ে কালাম বাড়ি ফিরে আসে, অপেক্ষা করতে থাকে ঝিনাইগাতি থানার ওসির আগমনের। সেই থেকে তার বন্দিজীবন কাটছে। মাঝখানে বছরখানেক জামিনে ছিল। দশ বছরের সাজা হয়েছে সেও আজ আট বছর হলো, ২০১২ সালের মাঝামাঝি মুক্তি পাওয়ার কথা।
এর মধ্যে মামলা এবং আপোস-মীমাংসার খরচ মেটাতে সব জমি বিক্রি হয়ে গেছে। মা এবং স্ত্রী কায়ক্লেশে যে জীবন চালাচ্ছে, তাকে মনুষ্যজীবন বলা কঠিন। কালামের বিশ্বাস, তার প্রায় আশি বছরের মা আজও বেঁচে আছেন কেবল ছেলের মুক্তি দেখে যাওয়ার জন্য। গল্প শেষ করে চোখের পানি লুকাতে সেল থেকে ছুটে বেরিয়ে গেল কালাম। বিদ্যুত্ এলে রাতের খাওয়া শেষ করে যখন আবার আমার মশারি টাঙাতে ঢুকল কালাম, তখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এদিকে আমার অস্বস্তি সহজে কাটতে চাইছে না। কাতরা দিয়ে নিজ হাতে মানুষ খুন করেছে মনে হওয়া মাত্র গা ছমছম করছিল। আজ দিনের আলোয় ওকে দেখে অবশ্য আর ভয় লাগছে না। মায়ের উপর নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই সে খুন করেছে; কালাম আমার দৃষ্টিতে তাই বীরপুরুষ। এই বীরত্ব মাতৃভূমি রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশপ্রেমিক তরুণের মধ্যে সংক্রমিত হলে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির স্বাধীনতা অবশ্যই অক্ষুণ্ন থাকবে।
কাশিমপুরে আসার পর থেকে রোজকার রুটিন অনুযায়ী আইনের বই পড়ছিলাম। এমন সময় বড় সুবেদার সাত্তার হাসিমুখে এসে বলল, স্যার সুখবর আছে; চা খাওয়ান। উত্তরে বই থেকে চোখ সরিয়ে বললাম, চা খান, তবে বন্দির আবার সুখবর কী? তখন জানলাম, তেজগাঁও থানার দায়েরকৃত পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেয়ার মামলায় হাইকোর্টের জামিন শেষ পর্যন্ত আপিল বিভাগ বহাল রেখেছে। বিচারের নামে নাগরিকের মৌলিক অধিকার হরণের এক নগ্ন উদাহরণ হয়ে থাকবে এই মামলাটি। এই বানোয়াট মামলায় হাইকোর্ট ১২ জুলাই আমাকে জামিন দেয়ার পর আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন সাতদিনের জন্য সেই জামিন স্থগিত করেছিলেন। হাইকোর্টের আদেশের ওপর সেই অন্যায় স্থগিতাদেশ উঠে গেল আজ ২৬ অক্টোবর। অর্থাত্ সাতদিন স্থগিতাদেশের অজুহাতে এ দেশের প্রশাসন ও বিচার বিভাগ পারস্পরিক যোগসাজশে আমাকে অতিরিক্ত তিন মাস চৌদ্দ দিন আটকে রাখল। এর মধ্যে সুপ্রিমকোর্ট আদালত অবমাননা মামলায় আমাকে যে সর্বমোট সাত মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে, সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ।
আসল কথা হলো ওই মামলায় সাজা না হলেও চেম্বার জজ আদালতের স্থগিতাদেশের ফলে আজ পর্যন্ত আমাকে কিন্তু জেলেই থাকতে হতো। আমাদের মাননীয় বিচারপতিরা ব্রিটিশ কায়দা-কানুনের বড়ই অনুরাগী। সেই ব্রিটেনের বিচার বিভাগের চারশ’ বছর আগের একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনার উল্লেখ না করে পারছি না। ১৬১৭ সালে ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন চরম অত্যাচারী ও বহুল বিতর্কিত চার্লস-১। তিনি একবার নির্দেশ দিলেন তার সঙ্গে আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত একটি মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে। তত্কালীন সাহসী প্রধান বিচারপতি লর্ড কোক রাজার আদেশ ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, "Obedience to His Majesty's command to stay proceedings would have been a delay of justice, contrary to the law, and contrary to oaths of the judges." (মহামান্য সম্রাটের নির্দেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হলে ন্যায়বিচার বিলম্বিত হবে, সেটি আইনবিরোধী এবং বিচারকদের শপথেরও পরিপন্থী হবে)। আমাদের আপিল বিভাগের বিচারপতিরা ইংল্যান্ডের আদালতের আদলে লর্ডশিপ সম্বোধন শুনতে খুবই পছন্দ করেন। অথচ, সে দেশের বিচারপতিদের মতো মহাপ্রতাপশালী রাজাকে অসন্তুষ্ট করার ঝুঁকি নিতে চান না। প্রধান বিচারপতি লর্ড কোক (Lord Coke C.J) চার্লস-১ কর্তৃক পরবর্তীকালে পদচ্যুত হলেও আজও সাহস ও ন্যায়বিচারের উদাহরণ হয়ে আছেন। আর অত্যাচারী রাজা চার্লস গণঅভ্যুত্থানে নিহত হয়ে ইতিহাসে ধিকৃতদের পাশে ঠাঁই নিয়েছেন। ইতিহাস থেকে এ দেশের শাসকশ্রেণী কি কোনোদিনই কোনো শিক্ষাই নেবে না? সুবেদার সাত্তারকে চা-বিস্কুট খাইয়ে বিদায় দিলেও আমি কণামাত্র আনন্দ অনুভব করছি না। আমার সাজার মেয়াদ শেষ হতে এখনও চার মাস ২৫ দিন বাকি রয়েছে। সুতরাং আপিল বিভাগের ‘বদান্যতা’ বাস্তবতার নিরিখে আমার কাছে মূল্যহীন। তাছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আমার বিরুদ্ধে পরবর্তী মামলা সাজানোর শলাপরামর্শ করতে হয়তো এতক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছুটে গেছেন। আইনের শাসনের প্রতি যে বর্বর শাসকশ্রেণী বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা পোষণ করে না, তাদের পক্ষে প্রতিবাদী কোনো কণ্ঠ সহ্য করা কঠিন। পাঠক, আমাকে নিরাশাবাদী ভাববেন না। আমি বাস্তববাদী হওয়ার চেষ্টা করছি মাত্র।

No comments

Powered by Blogger.