কাজের স্বীকৃতি বৈষম্য দূর ও সম্পত্তিতে সমঅধিকার চাই- নারী উদ্যোক্তাদের পণ্যমেলা শুরু

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ঘোষণার শতবর্ষ পূর্ণ করল সোমবার। এই এক শ' বছরে নানা ৰেত্রে নারীর অবস্থান বিচার করলে বলা যায়, পেশাগতভাবে সারা বিশ্বেই তাঁরা অনেকদূর এগিয়ে গেছেন।
বাংলাদেশের প্রেৰিতে এবং সার্বিক হিসাবে এ অর্জন হয়ত বড় কিছু নয়, তবে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন যে পূরণ হচ্ছে এটা সত্য। বাংলাদেশের শ্রমৰেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপকহারে বেড়েছে। শুধু গার্মেন্টসেই কাজ করছে ২৫ লাখ নারীশ্রমিক। কৃষি, নির্মাণ, মাটি কাটা, চিংড়ি, চাতাল, হসত্মশিল্প, তাঁত শিল্পসহ নানা অপ্রাতিষ্ঠানিক ৰেত্রে নারীর অংশগ্রহণ পুরম্নষের চেয়ে বেশি। শুধু অর্থনীতি নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে নারী শ্রমিকের অবদান আজ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু কোথাও নারী শ্রমিকের অবদানের কথা উলেস্নখ নেই, এমনকি সরকারী পরিসংখ্যানেও। আজ আনত্মর্জাতিক নারী দিবসের এই শতবর্ষপূর্তিতে গার্মেন্টস নারীশ্রমিক, কৃষি নারীশ্রমিক, শিল্প উদ্যোক্তা, গৃহকর্মী থেকে শুরম্ন করে সকল নারীশ্রমিকের কাজের স্বীকৃতি, শ্রমের মর্যাদা, অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদসহ ৬০টি সংগঠন বাংলা একাডেমীতে দিনব্যাপী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এদিকে 'নারী_পুরম্নষের সমসুযোগ, সমঅধিকার, দিনবদলের অগ্রযাত্রায় উন্নয়নের অঙ্গীকার'_ সেস্নাগান নিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও নারীদের আরও কর্মমুখী করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের পণ্যের সপ্তাহব্যাপী মেলার আয়োজন করেছে। শিশু একাডেমী প্রাঙ্গণে এ মেলার উদ্বোধন করেন আয়োজক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রাজিয়া বেগমের সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ বেগম ও মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক রওশন আরা বেগম।
৬০টি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে আয়োজিত দিনব্যাপী মেলায় স্টল ছিল ৩০টি। এসব স্টলে গ্রাম-বাংলার নারীদের তৈরি নকশি কাঁথা, বেড কভার, বেড শিট, গবেষণাধর্মী বিভিন্ন বই, খাবার সামগ্রী, সালোয়ার-কামিজ, শাড়ি ইত্যাদি ছিল। মেলা প্রসঙ্গে আয়োজক বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের সিনিয়র ফেলো ফোরকান আহমদ বলেন, আনত্মর্জাতিক নারী দিবস উপলৰে সমাজে নারীদের বৈষম্য, ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত, সম্পত্তিতে সমঅধিকার, শ্রমের মর্যাদা ও পুরম্নষদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই এ মেলার আয়োজন। আমাদের সমাজে এখনও নারীরা পশ্চাৎপদ, সর্বৰেত্রে তাঁদের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। বিকাল থেকেই একাডেমীর নজরম্নল মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। এতে শিউলী আখতার গেয়ে শোনান_ জানিনা সে কখন এসেছে, হৃদয়তে দোলা দিয়েছে... এবং আইনিনা আজিজ শারমিন পরিবেশন করেন_ সাখি দেখতো বাগমে কামিনী, জুঁই, চামেলি কি ক্যায়সে বাহার হ্যায়... গানটি। আর প্রতিবন্ধী শিশুরা 'আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে...' গানটির সঙ্গে পরিবেশন করে দৃষ্টিনন্দন নাচ। এভাবেই সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলে রাত ৮টা পর্যনত্ম।
এদিকে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় আয়োজিত ৬ দিনব্যাপী দেশীয় পণ্যের মেলা শুরম্ন হয়েছে শিশু একাডেমী প্রাঙ্গণে। এখানে স্টল আছে ৫০টি। এখানে যাঁরা স্টল নিয়েছেন, তাঁরা সবাই নারী উদ্যোক্তা।

No comments

Powered by Blogger.