সম্পাদক সমীপে

বোটানিক্যাল গার্ডেনের সুন্দর পরিবেশ চাই জাতীয় বোটানিক্যাল গার্ডেনে অসামাজিক কার্যকলাপসহ নানা ধরনের অপরাধ ও প্রতারণামূলক কাজ বেড়েই চলেছে। বোটানিকেলের দেওয়াল একপাশে ভেঙে দিয়ে বখাটে যুবকরা অবাধে চলাফেরা করছে।
শুধু তাই নয়, দল বেঁধে গিয়ে হয়রানিও করছে। নির্জনে ছেলেমেয়ে পেলে জোর করে টাকা আদায় করছে। স্কুলের ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে নানা রকম অবৈধ মেলামেশা করছে। এমতাবস্থায় দূর থেকে আসা বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের অস্বস্তি ও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। যারা দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে তারাও নানাভাবে হয়রানি করে, টাকা আদায় করে। এমন অভিজ্ঞতা নিজেই পেলাম। ক’দিন আগে বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়ে নিজেই হয়রানির শিকার হয়েছিলাম। বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশের জন্য ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনলাম। তারা হাতে একটি পত্রিকা হাতে তুলে দিল। ভাবলাম এটা ফ্রি। কিন্তু গেইট পার হয়ে সেই নিজ পেপারের জন্য আলাদা ১০ টাকা দিতে হলো। ভিতরে প্রবেশ করতেই একজন এগিয়ে এসে প্রশ্ন করল, মামা লাগবে? পলিথিনের ব্যবস্থা আছে। আমি না বলে দেওয়ায় তারা মনোক্ষুণœ হলো। তারা আমাকে ফলো করতে লাগল। আমি বসার জন্য জায়গা খুঁজতে লাগলাম। খুঁজতে গিয়ে দেখি নিচু স্থানে ডালপালা ও লতাপাতা দিয়ে ছোট ঘর বানিয়ে রেখেছে। বুঝতে পারলাম তারা এগুলো ভাড়া দেয়। তাই সেখান থেকে সরে এলাম। কয়েক মিনিট পর আরেকজন এসে বলল, বসবেন? কেউ বিরক্ত করবে না। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে দূরে গাছের নিচে গিয়ে বসলাম। কিন্তু তারা এসে বকশিশ দাবি করল। জানতে চাইলাম, কেন? ওরা বলল, দেখাশোনা করি তো তাই। আপনাদের যেন অসুবিধা না হয় সে জন্য আমরা আছি। কিন্তু আমি তাদের ব্যবহারে খুবই বিরক্ত হলাম। সেখান থেকে সরে গিয়ে অন্য স্থানে বসলাম। কয়েক মিনিট পর একজন এসে বলল, বসবেন? বললাম না, ও বলল, তাহলে চলে যান। জানতে চাইলাম, কেন? ও সুন্দর করে বলল, এখানে ব্যবসা চলে। দেখলাম তারা একজন মেয়ে নিয়ে ঘুরছে। আমি সেখান থেকে পুকুর পাড়ে এসে বসলাম। এখানে এসেও শান্তি পেলাম না। তারা এসে বকশিশ দাবি করল। আমি তাদের হয়রানিতে সেখান থেকে চলে এলাম।
বাইরে এসে কিছু খাওয়ার জন্য দোকানে গেলাম। দোকানদার বলল, এখানে না। আমি বললাম, কেন? ওরা বলল, এটা ময়লা, পরিষ্কার করা হয়নি। পাশের দোকানও আমাদের, আসেন বসেন। তাদের বিশ্বাস করে দোকানে গিয়ে বসলাম। দোকান দেখে সন্দেহ করলাম। কারণ ছোট ছোট খোপ। ভাবলাম কি বিপদেই না ফেলে। পর্দাগুলো চারিপাশে টাঙানো। মনে মনে গোপন ক্যামেরা আছে কিনা খুঁজতে লাগলাম। তারপর চিকেন বিরানি অর্ডার দিলাম। দাম ১২০ টাকা। তারপর খাওয়ার সময় ওরা আমাদের জিজ্ঞেস না করেই ইচ্ছেমতো খাবার টেবিলে এনে দিতে লাগল। অবশেষে দাম চাইল ২৩০০ টাকা। শুনে অবাক হয়ে গেলাম। আমার কাছে ছিল মাত্র ৫০০ টাকা। বুঝলাম তাদের পাতানো ফাঁদে আমি পড়ে গেলাম। বাঁচার আর উপায় নেই। অবশেষে আমার মোবাইল, ঘড়ি আর যা কিছু ছিল সবই দিয়ে সে দিন বেঁচে গেলাম। আমার মতো যেন আর কেউ হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দক্ষ ও ন্যায়বান প্রশাসন নিয়োগ করে জাতীয় উদ্যোনের পরিবেশ রক্ষা করুন।

এস সুলতান, উত্তর বাড্ডা

পানি সমস্যার সমাধান জরুরী
ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানির পাম্প আছে। যেখান হতে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে জনসাধারণের খাবার পানি সরবরাহ করা হয়। তেমনি একটি পানির পাম্প কাঁঠাল বাগান বাজারের সঙ্গেও আছে। তবে দুঃখের বিষয়, বিরাট এলাকার সবাই উক্ত পানির পাম্পের পানি পায় না। একটিমাত্র পানির মেশিন বিরাট এলাকার জনসাধারণের খাবারের সুপেয় পানি যোগান দিতে পারে না। তাই ওয়াসা কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ, কাঁঠাল বাগানের সমগ্র অধিবাসী যাতে ওয়াসার ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানি পায় তার আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

একজন ভুক্তভোগী
কাঁঠালবাগান, ঢাকা

খেজুর গাছ রোপণ করার আহ্বান
আমাদের দেশী প্রজাতি গাছের মধ্যে অন্যতম প্রধান খেজুর গাছ। শীতকাল জুড়ে এসব গাছ থেকে প্রচুর রস সংগ্রহ করা হয়। শীতকালের ঐতিহ্য সুমিষ্ট এই খেজুর রস খেতে সবাই পছন্দ করেন। খেজুর রসের তৈরি ঝোলা গুড় ও পাটালি গুড়ে ভিন্ন স্বাদের রসনা তৃপ্তি পাওয়া যায়। নতুন ধানের নবান্ন উৎসবে পিঠা- পায়েস, ক্ষিরসহ শীতের নানা পদের সুস্বাদু খাবার তৈরিতে এই গুড়ের তুলনা হয় না। প্রতি বছর শীত মৌসুমে একটি খেজুর গাছের রস থেকে ২৫ থেকে ৩০ কেজি গুড় সংগ্রহ করা যায়। যার বর্তমান বাজার মুল্য দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। অর্থাৎ একটি খেজুর গাছ থেকে প্রতি শীত মৌসুমে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বাড়তি আয় করা সম্ভব।
মূলত খেজুর গাছ থেকে শুধু যে রসই পাওয়া যায় তা নয়। একটি পূর্ণাঙ্গ খেজুর গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় উৎকৃষ্টমানের ঘরের খুঁটি ও তীর। এ কাঠ সহজে ঘুণ পোকা ক্ষতি করতে পারে না। বলে মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী। এ জন্য এর চাহিদাও বেশি।
গ্রীষ্মকালে এ গাছ থেকে পাওয়া খেজুর ফল খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু। বিদেশ থেকে আমদানি সৌদি আরবের খেজুরের মতোই পুষ্টি মান, যা সহজেই ক্ষুধা নিবারণ করে।
আগে গ্রামের মেঠো পথের দু’পাশে, পুকুরপাড় জুড়ে সারি সারি খেজুর আর তাল গাছ চোখে পড়ত। প্রতিটি গ্রামের পথে ঘাটের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে রাখত এই খেজুর আর তাল গাছ। এখন দিন দিন কমে যাচ্ছে। দেশি এই সব গাছের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা কম থাকায় নতুন করে আর কেউ এ সব গাছের চারা রোপণ করছে না। অথচ স্বল্প জায়গায় তুলনা কম যতেœ অতি সহজেই একটি খেজুর গাছ ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে পারে।
বর্তমান বিশ্ববাজারে আমাদের দেশের এই খেজুর রস থেকে তৈরি সুস্বাদু পাটালি গুড় আর চিনির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় দেশে খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ায় প্রতি শীত মৌসুমে খেজুর রস সংগ্রহ হচ্ছে খুবই কম। কাজেই এই চাহিদা পূরণে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ খেজুর গাছ রোপণ জরুরী। দেশী-বিদেশী ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের পাশাপাশি খেজুর গাছ রোপণের ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। আর এ সব বাস্তবায়ন করতে পারলেই আমাদের দেশে এর চাহিদা পূরণসহ বিশ্ববাজারে রফতানি করা সম্ভব হবে।
তাই আসুন শীতকালের ঐতিহ্য খেজুর রসের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সংসারের বাড়তি আয়ের জন্য আমরা সকলেই বেশি করে খেজুর গাছ রোপণ করি।

সৌরভ সোহবাব
আয়েশ, সিংড়া, নাটোর

গ্যাস সঙ্কটের সমাধান প্রয়োজন
১০ লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত ও ৫ বর্গমাইল আয়তনের ঢাকায় কামরাঙ্গীরচর সুলতানগঞ্জ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টি ওয়ার্ডে তীব্র গ্যাস সঙ্কটের কারণে সাড়ে ৫ লক্ষধিক বাসিন্দাকে বছর জুড়ইে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যার সমাধান এ পর্যন্ত না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত চরবাসী ক্রমেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। প্রতিদিন সকাল ৬টা হতে বিকেল সাড়ে ৩ টা এবং সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। শীত মৌসুমে শীতের দাপট বেড়ে যাওয়ায় সারাদিন গ্যাস থাকে না। বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস থাকছে না। এমতাবস্থায় দিনের বেলায় রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। বিধায় বিকল্প ব্যবস্থার রান্না করতে হচ্ছে নতুবা শুকনো খাবার অথবা হোটেলের খাবার কিনে খেতে হবে। রাত ১১টার পর গ্যাসের প্রবাহ স্বাভাবিক হলে অধিকাংশ পরিবার রাত জেগে পরের দিনের জন্য অগ্রিম রান্না করে ফ্রিজে রেখে দিচ্ছেন। কিন্তু যাদের ফ্রিজ নেই তাদের পঁচা-বাসি খাবার খেতে হচ্ছে। গৃহিণীদের অভিযোগ রান্নার সময় গ্যাস থাকে না, অথচ মাস শেষে বিল ঠিকই দিতে হচ্ছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ দিনের বেলায় গ্যাস না দিয়ে প্রতি মাসে বিল আদায় করে নিচ্ছে। চরের ৬০ ভাগ বাসিন্দা ভাড়াটিয়া। অধিকাংশ বাড়িতে ৩৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫০টি করে ভাড়াটিয়া পরিবার থাকেন, স্বাভাবিক গ্যাস থাকাবস্থায় তাদের লাইনে দাঁড়িয়ে পালাক্রমে রান্না করতে হচ্ছে। কিন্তু ৪ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইনে গ্যাসের প্রবাহ যখন কম থাকে, তখন তাদের কষ্টের সীমা থাকছে না।
এমতাবস্থায় অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, সঙ্কট- কবলিত উল্লিখিত ৬টি ওয়ার্ডে ৮ ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাস পাইপ স্থাপন করা হলে গ্যাসের সঙ্কট থাকবে না। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে গ্যাসসঙ্কট নিরসনের জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করার পরও কোন ফলোদয় হয়নি। অতএব, এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

ইলিয়াস আহমদ বাবুল
রহমতবাগ, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা

মহাজনি সুদের কারবার বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার
বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা বিশ্বের দরবারে অন্যতম আলোচিত বিষয়। এই সফল ব্যবস্থাকে রোল মডেল হিসেবে নিয়ে যখন বিশ্বের অনেক দেশ তাদের সমাজে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা চালু করেছে, তখন আমাদের দেশে সুদের মহাজনি কারবারের রমরমা ব্যবস্থা সবাইকে অবাক করেছে। বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে সুদখোর মহাজনেরা সুদের কারবার খুলে দিনকে রাত আর রাতকে দিন করছেন। তারা ১০০ টাকায় সাত দিনে ১০ টাকা সুদ নিচ্ছে। এতে বার্ষিক সুদের হার দাঁড়ায় ৫২১ টাকা। উল্লেখ্য, সুদের এই টাকা মহাজনদের নিজেদের পকেটের নয়। বেসরকারী সংস্থা থেকে টাকা তুলে তারা হতদরিদ্রদের মাঝে সেগুলো বিতরণ করছে। এভাবে দরিদ্র ব্যক্তিদের কাছ থেকে মহাজনেরা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ ঘটনার পর ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার দুর্বল দিক প্রতিফলিত হয়। এখনও এদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একাংশ ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তার ওপর গরিবদের জন্য বরাদ্দ ঋণ নিয়ে মহাজনেরা সুদের কারবার খুলে বসেছে। মনে হচ্ছে এখনও অনেক হতদরিদ্র ক্ষুদ্রঋণ সুবিধার বাইরে রয়ে গেছে। তাই রাজশাহীতে সুদের মহাজনি কারবারের বিষয়টি ভালভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। যারা এসব করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সুদের সকল বেআইনি কারবার বন্ধ হোক এটাই সবার কাম্য।

জাহেদুর রহমান ইকবাল
গ্রাম ও ডাকঘর : তাহেরপুর পৌরসভা
উপজেলা : বাগমারা, জেলা : রাজশাহী।

No comments

Powered by Blogger.