ঘাড় ব্যথায় চিকিৎসা ও করণীয়

জীবনের কোনো না কোনো সময় এমন কোন লোক নেই যে, ঘাড় ব্যথাজনিত সমস্যায় ভোগে না। একেক বয়সে একেক রকম সমস্যার জন্য ঘাড় ব্যথা হতে পারে আবার অন্য বয়সে অন্য রকম সমস্যার কারণে ঘাড় ব্যথা হতে পারে।
ঘাড় ব্যঘার তারতম্য ও কারণ বয়সভেদে, পেশা ভেদে, লিঙ্গ ভেদে, ঋতু ভেদে, ভৌগোলিক অবস্থা ভেদে, শারীরিক পরিশ্রম ভেদে বিভিন্ন রকম হতে পারে। অনেকের ঘাড় ব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। ঘাড় ব্যথার নানাবিধ কারণ রয়েছে, যেমন -রোগীর ঘাড় এর অস্বাভাবিক অবস্থান যেটা হতে পারে কম্পিউটিং এর সময়, টেলিভিশন দেখার সময়, খেলাধুলা বা শখের কাজের সময়, শোয়ার সময় বালিশের ভুল ব্যবহার, অনেক সময় ঘাড়ে আঘাত পেলে, মাংসপেশী হঠাৎ ছিড়ে গেলে বা মচকে গেলে, স্পনডাইলোসিস, ঘাড়ের হাড়ের বা ডিস্কের সমস্যা, স্পাইনাল ক্যানেল স্টেনোসিস, স্ট্রেচ, ইনজুরি, সারভাইকাল স্পনডাইলোসিস, সারভাইকাল রিব, নিউরাইটিস, বোন টি-বি, ঘাড়ে আঘাত বা ট্রমা, মাংসপেশীর আংশিক বা সম্পূর্ণ ছিঁড়ে গেলে, ঘাড়ের হাড় ভেঙ্গে গেলে, মাংসপেশীর সংকোচন ইত্যাদি।
ঘাড় ব্যথার অন্যতম কারণ সারভাইকাল স্পনডাইলোসিস। ইহা ঘাড়ের হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যা। ঘাড়ের হাড় ও হাড়ের মধ্যবর্তী ডিক্সে সমস্যা দেখা দেয়। চল্লিশ বয়শোর্ধ মানুষের মধ্যে এ সমস্যা অনেক বেশি। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। আমাদের দেশে এ সমস্যা অনেক বেশি। তার কারণের মধ্যে রয়েছে অত্যধিক পরিশ্রম, ভার বা ওজন বহন শ্রমিক পেশাজীবী, কাজকর্মে বা চলাফেরায় অবস্থাগত ভুল, অপুষ্টিজনিত সমস্যা ইত্যাদি। সাধারণত ঘাড়ের পিছন দিক থেকে ব্যথা শুরু হয়, অনেক সময় মাথা ব্যথা, কাঁধে ব্যথা বা হাতে ব্যথা হতে পারে। ব্যথা উঠানামা করতে পারে। হাতের মাংসপেশীতে ঝিম ঝিম বা শিন শিন জাতীয় বা কামড়ানো জাতীয় ব্যথা হতে পারে। রোগী ঘাড় ঘুরাতে গেলে ব্যথা বেড়ে যায়। ক্রমশঃ হাতের মাংসপেশীর শক্তি কমে আসে। রোগীর হাত ও ঘাড়ের কর্মক্ষমতা কমে আসে। ব্যথার কারণে রোগীর ঘুমের সমস্যা হয়। ব্যথা মাঝে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়।
এ জাতীয় সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে যেখানে সেখানে চিকিৎসা না করে সঠিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। নিম্নলিখিত উপদেশগুলো মেনে চললে ঘাড় ব্যথাজনিত সমস্যা অনেকাংশে লাঘব করা যায়। কখনো অতিরিক্ত ওজন মাথায় নেবেন না। বা হাতে বহন করবেন না। ঘাড়ে আঘাত পেলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। শোয়ার সময় মাথার নিচে নরম ও হালকা বালিশ ব্যবহার করবেন। কম্পিউটিং, পড়াশোনা, লেখালেখি অফিসের কাজে ফাঁকে ফাঁকে চিকিৎসকের নিদির্শমতো ঘাড় ও হাতে স্টোচিং বা ব্যায়াম করতে পারেন। অনেক সময় পুরনো ঘাড়ের ব্যথায় গরম সেক ভালো উপকার আসে।
ডা. মোঃ সফিউল্যাহ প্রধান
চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক, ডিপিআরসি
মোবাইল নং ০১৭১৬৩০৬৯১৩

No comments

Powered by Blogger.