স্বাধীন সাংবাদিকতা সুরক্ষায় নতুন ফাউন্ডেশন

বিশ্বব্যাপী স্বাধীন ও নৈতিক সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি যাত্রা শুরু করেছে ‘ফ্রিডম অব দ্য প্রেস ফাউন্ডেশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আল জাজিরা টেলিভিশনের অনলাইনের মতামত কলামে জিলিয়ান সি ইয়র্কের লেখা এক নিবন্ধে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২০১০ সালের শেষের দিকে বিপুল পরিমাণ মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তা প্রকাশ করতে শুরু করে সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস। এতে দেশটির প্রশাসন ও আইনপ্রণেতারা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। মার্কিন প্রশাসনের রোষের মুখে পড়ে উইকিলিকস। কিন্তু মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে থাকা সুরক্ষার জন্য উইকিলিকসের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।
আইনগত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়ে মার্কিন আইনপ্রণেতারা উইকিলিকসকে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ দেন। এতে কাজও হয় তাত্ক্ষণিক। আমাজন ডটকম তাদের সার্ভার থেকে উইকিলিকসকে বাদ দেয়। এতে ডোমেইন-সংক্রান্ত সমস্যায় পড়ে উইকিলিকস।
সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য-প্রমাণে দেখা যায়, সিনেটর জোসেফ লিবারম্যান ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য পিটার কিং ব্যক্তিগতভাবে মাস্টারকার্ডকেও একইভাবে উইকিলিকসকে সেবা না দিতে চাপ দিয়েছেন। এর একদিনের মধ্যে পেপ্যল, ভিসা, মাস্টারকার্ডসহ পাঁচটিরও বেশি কোম্পানি উইকিলিকসকে সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এক সপ্তাহের মধ্যে এই তালিকায় ব্যাংক অব আমেরিকা ও সুইস পোস্টাল ব্যাংকের মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়।
নয়া প্রতিষ্ঠিত ফ্রিডম অব দ্য প্রেস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ট্রেভর টিমের মতে, মার্কিন গোপন কূটনৈতিক তারবার্তা প্রকাশ করে উইকিলিকস কোনো অপরাধ করেনি। এ ছাড়া উইকিলিকসে প্রকাশিত তথ্য ‘নিউইয়র্ক টাইমস’সহ অন্যান্য পত্রিকাও প্রকাশ করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মার্কিন কর্তৃপক্ষ অর্থবিষয়ক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে উইকিলিকসের টুঁটি চেপে ধরেছে।
দাতাদের কাছ থেকে অর্থ না পাওয়ায় বেশ চাপে আছে উইকিলিকস। এমনকি উইকিলিকস বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুজব উঠেছিল।
প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে চাপের মুখে থাকা উইকিলিকসসহ আরও তিনটি সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠানকে সহায়তার পরিকল্পনা করছে ফ্রিডম অব দ্য প্রেস ফাউন্ডেশন।
দাতারা এই ফাউন্ডেশনের সাইট ভিজিট করে অর্থ দিতে পারবেন। ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সেই অর্থ পৌঁছে যাবে অর্থনৈতিকভাবে চাপে থাকা মুক্ত সাংবাদিকতার পক্ষে সংগ্রামরত প্রতিষ্ঠানের কাছে। এ লক্ষ্যে ফ্রিডম অব দ্য প্রেস ফাউন্ডেশন তাদের প্রতিষ্ঠার প্রথম সপ্তাহ শেষ না হতেই এক লাখ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে।
ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাইরে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিককে সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ফ্রিডম অব দ্য প্রেস ফাউন্ডেশনের।

No comments

Powered by Blogger.