কারা থাকছেন আর্থিক খাত সংস্কার কমিশনে by সাইদ আরমান

আর্থিক খাতের সংস্কারে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শিগগিরই চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে গঠিত চার সদস্যের কমিটি এরইমধ্যে চারটি সভা করে একটি প্রস্তাব প্রায় চূড়ান্ত করেছে। তবে পুরো কমিশনে কারা থাকবেন না থাকবেন, কত সদস্য থাকবেন সেসব নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর।

আর গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের নাম প্রস্তাব করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে শিগগিরই কমিশন গঠনের সুপারিশ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বাংলানিউজকে এ খবর নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন এবং একইভাবে বিরোধী দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন এমন একজন ব্যক্তিকে কমিশনের চেয়ারম্যান করার চিন্তা করা হচ্ছে। এ তালিকায় রয়েছেন দুই অর্থনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন আহমদ। 

সূত্র জানিয়েছে, তাদের মধ্য থেকে কমিশনের চেয়ারম্যান চূড়ান্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করা হবে। যেটি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে মূলত প্রধানমন্ত্রেই ঠিক করবেন। 

সূত্রমতে, গত অক্টোবরের ব্যাংকিং খাতে সংস্কারে করণীয় নির্ধারণ করতে কমিশনের লক্ষ্যে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি  বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাইনুল ইসলামকে এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

কমিটির সদস্য হলেন- একই বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোকুল চাঁদ দাস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক পদের একজন প্রতিনিধি। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব আবু দাওয়ান মো. আহসান উল্লাহ।

সূত্র জানায়, গঠিত কমিটিকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে কমিশনের সদস্যদের নাম প্রস্তাব করে অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়। গঠিত এ কমিটিকে একই সঙ্গে কমিশনের কার্যপরিধি কি হবে তা চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, কমিশনের সদস্য হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) থেকে একজন প্রতিনিধি, ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) একজন প্রতিনিধি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন থেকে একজন প্রতিনিধি, বীমা অ্যাসোসিয়েশন থেকে একজন প্রতিনিধি এবং শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট একজন থাকতে পারেন। এছাড়া ট্রাস্ট ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের দু’জন প্রতিনিধি রাখার বিষয়ে ভাবছে কমিটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির একজন সদস্য বাংলানিউজকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “কমিশন গঠনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের তিন সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে। আমরা এ সময়ে চারটি মিটিং করেছি।

মোটামুটিভাবে কমিশন গঠনের জন্য কিছু নাম প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। একইভাবে কমিশনের কার্য পরিধি কি হবে তা প্রায় চূড়ান্ত। তবে শিগগিরই বৈঠক করে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

কারা থাকছে সেই কমিটিতে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটি বলা যাচ্ছে না। তবে সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য, একই সঙ্গে আর্থিক খাত সম্পর্কে ভালো জানাশোনা আছে এমন কাউকে কমিশনের চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। আর সদস্য হিসেবে যারা থাকবেন তারাও ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে জড়িত।” 

জানা গেছে, কমিটির প্রতিবেদনের পর দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে কমিশন চূড়ান্ত হতে পারে। কমিশন দীর্ঘ মেয়াদে আর্থিক খাতের সংস্কারে এবং অনিয়ম, দুর্নীতি রোধে করণীয় ঠিক করতে কাজ করবে।

No comments

Powered by Blogger.