ড. ইউনূস ইস্যুতে মতদ্বৈধ কমবে by ড. দেলোয়ার হোসেন

ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বারাক ওবামা দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে পুরনো কিছু বিষয়ে মতদ্বৈধ কমবে। এ ছাড়া ডেমোক্র্যাটদের এই পুনর্বিজয় ঢাকা-ওয়াশিংটন কূটনৈতিক সম্পর্কে তেমন প্রভাব ফেলবে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর কালের কণ্ঠের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপচারিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. দেলোয়ার হোসেন এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।


ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, সরকারের দিক থেকে বিবেচনা করলে বারাক ওবামা দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন আসবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমান সরকারের পুরনো যে মতদ্বৈধ ছিল সেটা কেটে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান ড. দেলোয়ার আরো মন্তব্য করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার এই পুনর্বিজয় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
ড. দেলোয়ার বলেন, আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেবে এবং তাদের দৃষ্টি থাকবে বাংলাদেশের ওপর। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান একাধিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিফফা) ইত্যাদি ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি ও কূটনৈতিক তৎপরতায় নাটকীয় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বড় রপ্তানি বাজার এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়ছে মন্তব্য করে ড. দেলোয়ার বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকেও সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি একই থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে সারা বিশ্বের আগ্রহ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ড. দেলোয়ার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে সারা বিশ্বেই আগ্রহ রয়েছে। তবে উন্নয়নশীল বিশ্বের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। স্নায়ুযুদ্ধের পর থেকেই উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গণতান্ত্রিক ধারা সৃষ্টি এবং দেশগুলোর উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব থাকার কারণে মূলত এই আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের পরাশক্তি এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে জনগণের আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
ড. দেলোয়ার বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, দীর্ঘ প্রচারাভিযান ও মনোনয়ন প্রক্রিয়া আকর্ষণীয় হওয়ায় এবং জয়লাভের পর তাদের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে- এমন বিষয়গুলোর কারণে বিশ্বের সব দেশেই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। পাশাপাশি নতুন সরকারের অধীনে তাদের অভ্যন্তরীণ নীতি, অভিবাসীদের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে- এসব ব্যাপারেও বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

No comments

Powered by Blogger.