আনোয়ারা আওয়ামী লীগের কী হবে by মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন

৪ নভেম্বর ভোরে যখন আনোয়ারায় আখতারুজ্জামান চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ে তখন অনেক কথার মধ্যে একটি কথাই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছিল। আর সেটি হলো তাঁর অনুপস্থিতিতে আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির কী হবে। কার হাত ধরে আগামী দিনের রাজনীতি এগোবে। এখানে এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা এখনো চলছে সব মহলে। তবে কারও কথায় এখনো পর্যন্ত বিকল্প কোনো নেতার নাম উঠে আসেনি।


দলীয় সূত্র জানায়, এক মাস আগে আখতারুজ্জামান চৌধুরী সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের দল গোছানোর নির্দেশ দিয়ে যান। নভেম্বরে উপজেলা সম্মেলন করার বিষয়টি সামনে রেখেই তিনি এ আদেশ দেন। সে অনুযায়ী বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই নেতা-কর্মীরা মাঠে নেমে পড়েন এবং উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭০টির বেশি ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ করেন। ঠিক হয় অন্য ওয়ার্ডগুলোতে সম্মেলন শেষ হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে সাংসদ এলেই ইউনিয়ন ও উপজেলা সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো না। আখতারুজ্জামান চৌধুরী তথা সবার বাবু ভাইয়ের মৃত্যু সবকিছুই ওলট-পালট করে দিয়েছে। হতাশার ছায়ায় ঢাকা পড়েছে দলীয় সব তৎপরতা। তাই প্রশ্ন উঠেছে, কে পারবেন বাবুহীন আনোয়ারায় দলকে গুছিয়ে নিতে, দলের হাল ধরার জন্য কে হতে পারেন বাবুর উত্তরসূরি।
দলের নেতা-কর্মীরা জানান, আখতারুজ্জামান চৌধুরীর জীবদ্দশায় আনোয়ারা আওয়ামী লীগে প্রকাশ্যে গ্রুপিং কখনো দেখা যায়নি। পুরো উপজেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সার্বিক বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতেন তিনি। তা ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে স্থানীয়ভাবেও দলের ভালোমন্দ দেখভালের দায়িত্ব পড়ে তাঁর ওপর। তাই তাঁর অনুপস্থিতিতে সবকিছু কীভাবে সামলানো যাবে তা-ই ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে।
আনোয়ারা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রামে দলের অভিভাবক ছিলেন বাবু ভাই। তাঁর সঠিক নেতৃত্বে দল সব সময় ভালো চলত। এখন আমরা কী করব তা কল্পনাও করতে পারছি না।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোয়াব আলী বলেন, ‘বাবু ভাইয়ের কারণে আনোয়ারার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অন্য রকম শৃঙ্খলা ও ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। এখন তা আমরা বজায় রাখতে পারব কি না সন্দেহ রয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘আনোয়ারায় আখতারুজ্জামান চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে এমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না, যিনি এককভাবে দলের হাল ধরতে পারবেন কিংবা সম্ভাব্য সংকট দূর করতে পারবেন।’ ওই নেতার মতে, বাবুহীন আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি গভীর সংকটে পড়তে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা ভাবতেই পারছি না বাবু ভাই নেই। আমরা বুঝতে পারিনি তিনি এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন।’

No comments

Powered by Blogger.