আপাতত জনমত গঠনে মনোযোগ দেবে বিএনপি by তানভীর সোহেল

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ‘কঠোর আন্দোলন’ থেকে পিঠটান দিচ্ছে বিএনপি। দলটি বলছে, তারা দাবির পক্ষে আগে জনমত গঠন করবে। এ জন্য দেশব্যাপী গণসংযোগ ও জনমত গঠনের কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে দলটি।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ১১ জুন ঢাকায় ১৮ দলীয় জোটের গণসমাবেশে ঘোষণা দিয়েছিলেন,


নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। তার আগে ১২ মার্চ ঢাকায় এক মহাসমাবেশে দাবি মানতে সরকারকে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি।
অবশ্য বারবার ঘোষণা দিয়েও ‘কঠোর’ আন্দোলনে না যাওয়াকে পিছু হটা বলতে রাজি নয় বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করেন, তাঁদের দাবির পক্ষে জনমত গঠন আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটা দাবি আদায়ের প্রথম ধাপ। কাজটি তাঁরা যত ভালোভাবে করতে পারবেন, আন্দোলন ততই জোরদার হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে হবে ধাপে ধাপে। জনসমর্থন গড়া আন্দোলনের অংশ। তিনি বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী হরতাল, অবরোধ ও গণমিছিলের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বিএনপি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া আগামী রোববার রাতে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। ওই বৈঠকে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আন্দোলনের কর্মকৌশল ও কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর ১৮ দলীয় জোট ও সমমনাদের সঙ্গেও বৈঠক করে কর্মসূচি ঠিক করবেন বিরোধীদলীয় নেতা।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, কর্মসূচির মধ্যে খালেদা জিয়ার বিভিন্ন জেলা সফরকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গত বছর ও এ বছরের শুরুর দিকে বিএনপির রোডমার্চ যেসব জেলার ওপর দিয়ে যায়নি, সেসব জেলায় খালেদা জিয়ার সফরের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী গুম হওয়ায় তাঁর এলাকা সিলেট জেলা আবারও সফর করবেন খালেদা জিয়া। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে খালেদা জিয়ার টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, কিশোরগঞ্জ, ঢাকার পার্শ্ববর্তী মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা সফর করার সম্ভাবনা আছে। এ ছাড়া রংপুর ও বরিশাল বিভাগীয় শহরসহ আরও কয়েকটি জেলা খালেদা জিয়ার সফরের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, তাঁরা আন্দোলনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু রাজপথে এককভাবে বিএনপি বা ১৮ দলীয় জোটের পক্ষে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে দাবি আদায় সহজ হবে না। সাধারণ মানুষকে দাবির সঙ্গে সম্পৃক্ত করাটাকে এখন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ওই নেতা বলেন, নানা ইস্যুতে বিএনপি আন্দোলন করেছে। কিন্তু কোনোটাতেই সফল হতে পারেনি। কারণ, ওই সব আন্দোলনে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি।
অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিএনপি আন্দোলন করবে। তবে জনভোগান্তি ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের পরিপন্থী হয় এমন কিছু করবে না।

No comments

Powered by Blogger.