বিজ্ঞান চর্চা-রাষ্ট্রকে কত কিছুই না জানতে হয় by আসিফ এ সিদ্দিকী

এখন অনেক দেশের নিজস্ব উপগ্রহ মহাকাশে রয়েছে। এমনকি দরিদ্র বলে চিহ্নিত দেশগুলোও এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছে। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম_ এ ধরনের অনেক দেশের উপগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশও এ পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।


আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অগ্রগতির জন্য নিজস্ব উপগ্রহ অপরিহার্য। এ খাতে বিনিয়োগ হবে লাভজনক। সুন্দরবনে নতুন কোনো সমস্যা দেখা দিল কি-না কিংবা গহিন বন নতুন কোনো সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে কি-না, সমুদ্রে কোথায় মাছের ঝাঁক রয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি_ স্যাটেলাইট প্রযুক্তি এসব জানিয়ে দেয়। প্রলয়ঙ্করী সিডরের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এ প্রযুক্তির কারণেই অপেক্ষাকৃত কম ছিল

যুক্তরাষ্ট্রে আমার কাজের প্রধান ক্ষেত্র মহাকাশ ইতিহাস। মহাকাশ অভিযানের ইতিহাস নিয়ে কয়েকটি বই লিখেছি। প্রথমটি ছিল 'চ্যালেঞ্জ টু অ্যাপোলো :দি সোভিয়েত ইউনিয়ন অ্যান্ড দি স্পেস রেস, ১৯৫৪-১৯৭৪।' ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিবেচনায় এটা ছিল মহাকাশ অভিযান নিয়ে লেখা সেরা পাঁচটি বইয়ের একটি। মহাকাশ অভিযান কেন প্রয়োজন_ এ প্রশ্নের মুখোমুখি প্রায়ই হতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে করা হয়; বাংলাদেশে এলে এখানেও করা হয়। প্রশ্নটি মূলত আসে অর্থ ব্যয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে। মঙ্গল গ্রহ অভিযানের কেন প্রয়োজন? এতে আমাদের গ্রহ পৃথিবীর কী লাভ হবে? এমন সব প্রশ্ন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক পরাশক্তিধর দেশেও আমাকে শুনতে হয়।
আমার এ লেখার বিষয়বস্তু বিজ্ঞান। বিশেষ করে বিজ্ঞান চর্চা কেন প্রয়োজন, এ ক্ষেত্রে ফোকাস কী হওয়া উচিত_ সেটাই আলোচনায় থাকবে। এটা মনে রাখতে হবে, মৌলিক বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা থেকে তাৎক্ষণিক ফল লাভের সম্ভাবনা কম থাকে। ইন্টারনেট নিয়ে গবেষণার কথাই ধরা যাক। ষাটের দশকের মাঝামাঝি যখন যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ বিষয়ে গবেষণার জন্য অর্থ ব্যয় করতে শুরু করে, তখন এর প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। পণ্ডিতজন হিসেবে বিবেচিতরাও বলেছেন_ সম্পদের মহাঅপচয়। কিন্তু সরকার বিরত থাকেনি। বিজ্ঞানীরা নিজেদের প্রশ্ন করেছেন_ একজন নিউইয়র্ক রয়েছেন এবং আরেকজন শিকাগোতে। টেলিফোনে তারা পরস্পর কথা বলেন। এভাবে কণ্ঠস্বর দূরে চলে যায়। তাহলে ভয়েসের সঙ্গে ড্যাটাও নিশ্চয়ই পাঠানো সম্ভব। বিজ্ঞানীদের এ জিজ্ঞাসা অনেকের কাছে মনে হয়েছে কল্পকাহিনী। কিন্তু ওয়াশিংটন সরকারের মনোভাব ছিল ইতিবাচক। এক পর্যায়ে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে এ কাজে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৯০ সালের দিকে আমি নিজে ই-মেইল ব্যবহার শুরু করি। এর ২-৩ বছরের মধ্যে এ প্রযুক্তি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। এ বিষয়ে গবেষণা হয়েছে ৩০ বছরের মতো এবং মাত্র ২-৩ বছরেই শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়; গোটা পৃথিবীতে এর সুফল ছড়িয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ খাতে উদ্যোগ ও বিনিয়োগের জন্য গোটা মানব জাতির প্রশংসা পেতেই পারে। প্রথমে অর্থ ব্যয় করেছে সে দেশের সরকার। শ্রম ও মেধা খাটিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এখন সুফল ভোগ করছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ।
এবারে বাংলাদেশে অবস্থানকালে 'ডিজিটাল' শব্দটি খুব শুনছি। অনেকের কাছে এটা হচ্ছে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের চাবি। আবার কারও কারও কাছে নিছকই পরিহাসের। যারা রাতারাতি বিজ্ঞানের সুফল পেতে চান, তারাই রয়েছেন শেষোক্ত দলে। আমার বিবেচনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পথে আমাদের অগ্রগতি সন্তোষজনক। আমাদের তরুণ প্রজন্ম এ স্লোগানকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে এবং যে যেখান থেকে পারছে এ প্রক্রিয়ায় অবদান রাখছে। আমাদের তরুণরা আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিংয়ে ভালো করছে। গণিত অলিম্পিয়াডে সাফল্য পাচ্ছে। বুদ্ধিমত্তায় তাদের ঘাটতি কম নয়_ জোরের সঙ্গেই বলতে পারি। আমি ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। সেখানে কয়েক জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে এবং তাদের মান সন্তোষজনক হিসেবে সবার কাছে স্বীকৃত। আমার অভিমত হচ্ছে, আমরা যদি বিজ্ঞানকে তাৎক্ষণিক লাভের ঊধর্ে্ব বিবেচনা করি এবং ধৈর্য ধরে থাকি; সাফল্য নিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্রে আমার সাম্প্রতিক কাজের অভিজ্ঞতা এ প্রসঙ্গে বলতে পারি।
অর্থনৈতিক সংকটের শিকার হয়েছে তারা এবং কয়েক বছর ধরেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। বেকার সমস্যা তীব্র। কয়েকটি ব্যাংক সমস্যায় পড়েছিল। বিশ্বখ্যাত মোটর গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিপর্যয় থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে। 'বেইল আউট' তাদের কারণে এখন পরিচিত শব্দ। কেন অর্থনীতি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সমস্যা, এ থেকে উদ্ধারের কী কী পথ রয়েছে এবং বিজ্ঞান কী সমাধান দিতে পারে_ এসব জানতে সেখানে অনেক দল কাজ করছে। বুদ্ধিজীবীরা কী ভাবছেন, বিজ্ঞানীরা কী সমাধান দিতে পারেন_ রাষ্ট্র সেটা জানতে চায়। মহাকাশও রয়েছে এজেন্ডায়। পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিদরা রয়েছেন ১৫-১৬ জন নিয়ে গঠিত কমিটিতে। আমার কাজ মূলত বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে। আমাকেও এ কমিটিতে রাখা হয়েছে। শুধু সংকট থেকে সাময়িকভাবে বের হয়ে আসা নয়; মহাকাশ বিজ্ঞান কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সমস্যার দীর্ঘমেয়াদে সমাধান দেবে, সেটা নিয়ে আমাদের দল কাজ করছে। তবে এ ধরনের কমিটি কেবল সংকটের সময় নয়, সব সময়েই কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল। এর আওতায় নানা কমিটি কাজ করে এবং সরকারকে পরামর্শ দেয়। আরও স্পষ্ট করে বলা যায়, সরকার তাদের কাছে পরামর্শ চায়। মহাকাশ, জ্বালানি, পরিবেশ_ কত বিষয়েই না পরামর্শ চাই রাষ্ট্রের। তাদের উন্নতির পথ চওড়া হয়, সরকারের কাজ সহজ হয় এবং পরিণতিতে দেশ ও দশের কল্যাণ নিশ্চিত হয়।
মহাকাশ গবেষণা ব্যয়বহুল। তদুপরি, এজন্য প্রচুর আয়োজন দরকার। বাংলাদেশ এ থেকে কী শিখতে পারে? সবচেয়ে বড় শিক্ষা হচ্ছে, নজর দিতে হবে অনেক সামনে। বিজ্ঞানে বিনিয়োগ থেকে রাতারাতি সাফল্যের আশা করা ঠিক নয়। গবেষণা থেকে ফল পেতে সময় লাগে এবং এজন্য ধৈর্য ধরতেই হবে। বাংলাদেশে একটি বিষয় খুব ভালো লাগছে_ তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে মূল প্রয়োজন হচ্ছে অনেক উদ্যমী তরুণ-তরুণী। এ ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি নেই। এখন চাই তাদের জন্য কাজের উপযুক্ত পরিবেশ এবং বিনিয়োগ। বিনিয়োগ সরকারি ও বেসরকারি উভয় তরফেই আসতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক সমস্যায় রয়েছে। তারপরও বিজ্ঞানকে অবহেলা করছে না। শুধু অর্থ বরাদ্দ নয়; কোথায় কী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সর্বোত্তম ফল মিলবে, সেটা রাষ্ট্রকে জানতে হবে। আর এ জানানোর কাজে নিয়োজিত থাকেন অনেক অনেক বিশেষজ্ঞ। বিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ_ সবার ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের অর্থ ব্যয়ের ক্ষমতা যেহেতু সীমিত, তাই বিচক্ষণতা বিশেষভাবে আবশ্যক।
বিজ্ঞানীরা সর্বদা বলেন, বিজ্ঞান থেকে কেবল দীর্ঘমেয়াদে সুফল মেলে। সামনের ২-৩ বছর নয়; তাকাতে হবে ২০-৩০ বছর কিংবা আরও দূরে। দিগন্ত ছোট করে দেখলে চলবে না।
যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশেষ ফোকাসে রেখেছে মঙ্গল গ্রহে অভিযাত্রা। অন্য গ্রহও তাদের চিন্তায় রয়েছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কর্মকাণ্ডে তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। সেখানে চিকিৎসাবিজ্ঞান, জ্বালানি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণা চলছে। মহাকাশে অনেক দেশের উপগ্রহ রয়েছে। এর দ্বারা শত শত কোটি মানুষ উপকৃত হয়। মোবাইল টেলিফোন ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি, টেলিভিশন অনুষ্ঠান, আবহাওয়া, কৃষি কাজ_ এসব এখন আর স্যাটেলাইট ছাড়া ভাবা যায় না। বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে_ স্পার্সো। এখন পর্যন্ত তারা সীমিত সম্পদ নিয়ে কাজ করছে। সেখানে আমি গিয়েছি এবং তাদের কাজের মান উৎসাহব্যঞ্জক। তাদের জন্য আরও সহায়তা চাই। এখন তারা অন্য দেশের উপগ্রহ থেকে পাওয়া তথ্য দেশের কাজে লাগায়। যুক্তরাষ্ট্র এবং আরও কয়েকটি দেশ মহাকাশ বিজ্ঞানকে তাদের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরার জন্যও কাজে লাগাচ্ছে এবং এ নিয়ে উদ্বেগও রয়েছে। কিন্তু তারা মহাকাশে এমন অনেক কাজ করছে, যা সব দেশের সব মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ করে। রাশিয়া এক সময় মহাকাশ গবেষণায় চমকপ্রদ সাফল্য দেখিয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর তারা কিছুটা থমকে পড়েছিল। কিন্তু এখন আবার কাজে জোর পড়ছে। চীন এবং ভারতও মহাকাশ গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। আমার ধারণা, চীন আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে মহাকাশ গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি চলে আসবে। যুক্তরাষ্ট্র ২০৩০ সালের দিকে মঙ্গলে মানুষ পাঠাতে পারবে বলে ধারণা করা হয়। চীনও পিছিয়ে থাকবে বলে মনে হয় না। এ ধরনের অভিযান কেবল অজানাকে জানার জন্য নয়, বরং এর অর্থনৈতিক গুরুত্বও রয়েছে। পৃথিবীর পেট্রোলিয়াম মজুদ শেষ হয়ে আসছে। জ্বালানি সমস্যার সমাধান পেতে মহাকাশ গবেষণা আমাদের সহায়তা করতে পারে। মঙ্গল ও চাঁদে অনেক ধরনের মূল্যবান খনিজ রয়েছে বলে ধারণা করা হয় এবং এটাও অসম্ভব মনে করা হচ্ছে না যে, তা পৃথিবীতে এনে কাজে লাগানো যাবে। কেবল প্রাণের সন্ধানেই মানুষ মঙ্গল অভিযানে সম্পদ খাটাচ্ছে না_ এটা মনে রাখতে হবে।
এখন অনেক দেশের নিজস্ব উপগ্রহ মহাকাশে রয়েছে। এমনকি দরিদ্র বলে চিহ্নিত দেশগুলোও এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছে। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম_ এ ধরনের অনেক দেশের উপগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশও এ পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অগ্রগতির জন্য নিজস্ব উপগ্রহ অপরিহার্য। এ খাতে বিনিয়োগ হবে লাভজনক। সুন্দরবনে নতুন কোনো সমস্যা দেখা দিল কি-না কিংবা গহিন বন নতুন কোনো সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে কি-না, সমুদ্রে কোথায় মাছের ঝাঁক রয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি_ স্যাটেলাইট প্রযুক্তি এসব জানিয়ে দেয়। প্রলয়ঙ্করী সিডরের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এ প্রযুক্তির কারণেই অপেক্ষাকৃত কম ছিল।
মহাকাশ বিজ্ঞানে বাংলাদেশের ফোকাস কী হবে_ এটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমি মনে করি, তিনটি খাতে বিশেষ মনোযোগ চাই_ ১. পরিবেশ, ২. জ্বালানি এবং ৩. অবকাঠামো। বিদ্যুৎ খাতের প্রতি আমরা সময়মতো মনোযোগ দিতে পারিনি এবং তার কুফল এখন স্পষ্ট। এ তিনটির মতো আরও অনেক সমস্যার সমাধান দিতে পারে বিজ্ঞান। রাজনীতিবিদরা বিজ্ঞানীদের প্রতি যত মনোযোগ দেবেন, দেশের তত মঙ্গল। এসব কাজে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদেরও সক্রিয় সহায়তা মিলবে_ সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। আমাদের হয়তো অর্থবল কম, কিন্তু মস্তিষ্ক শক্তিতে মোটেই ফেলনা নয়। তাদের মাধ্যমে উন্নত দেশের আধুুনিক প্রযুক্তিও বাংলাদেশে হস্তান্তর করা সম্ভব। এখন পর্যন্ত এ মূল্যবান সম্পদ অনেকটা অব্যবহৃত রয়ে গেছে বলেই মনে করা হয়।

আসিফ এ সিদ্দিকী :যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মহাকাশ সংক্রান্ত পরামর্শক দলের সদস্য
 

No comments

Powered by Blogger.